‘চ্যাম্পিয়ন হতেই যাচ্ছে বাংলাদেশ’
চার বছর পর জাতীয় হকি দলের অধিনায়কত্ব ফিরে পেয়েছেন রাসেল মাহমুদ জিমি। তার নেতৃত্বেই বুধবার রাতে বাংলাদেশ যাচ্ছে এশিয়ান হকি ফেডারেশন (এএইচএফ) কাপে অংশ নিতে। হংকং রওনা হওয়ার আগে টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের লক্ষ্য, সম্ভাবনা এবং অধিনায়কত্ব ফিরে পাওয়া নিয়ে কথা বলেছেন দেশসেরা এ স্টাইকার।
কখন জানলেন আপনি অধিনায়ক হয়েছেন?
জিমি : প্রথমে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন, কোচ এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই আমাকে অধিনায়ক নির্বাচিত করার জন্য। সবাই আস্থা রেখেছেন যে, আমি বাংলাদেশের অধিনায়ক হওয়ার যোগ্যতা রাখি। অধিনায়কের বিষয়টা আজকেই আমাকে জানিয়েছেন কোচ। তবে আগের দিন জানতে পেরেছিলাম, অধিনায়ক নিয়ে একটু জটিলতা ছিল। তবে এগুলো কিছু না। অধিনায়ক মানে এটা নয় যে, আমিই সব। আমার সবার সমর্থন দরকার।
এ টুর্নামেন্ট বাংলাদেশের জন্য নতুন নয়। তবে এবার যাওয়ার আগে নতুন কি আছে, যা নিয়ে বেশি আশাবাদী হতে পারেন?
জিমি : আগে আমাদের সবচেয়ে বেশি দূর্বলতা থাকতো প্রাকটিস ম্যাচ খেলতে না পারা। আগে আমাদের কোনো ভিডিও থাকতো না। এবার সে অভাব নেই। ইউরোপে আমরা যতগুলো ম্যাচ খেলেছি পরে সবগুলোর ভিডিও দেখে ভুলভ্রান্তি দেখেছি। আর টুর্নামেন্টে খেলতে যাওয়ার আগে ইউরোপে ৮টি ম্যাচ খেলা অনেক বড় বিষয়।
এ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ সব সময়ই ফেবারিট। সবার প্রত্যাশা বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়েই ফিরবে। আপনি কি মনে করেন?
জিমি : এ টুর্নামেন্টে আমাদের একমাত্র লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন হওয়া। আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে যাচ্ছি। আাল্লাহ সব কিছু ভালো রাখলে আমরা চ্যাম্পিয়ন হয়েই ফিরবো। সবচেয়ে বড় কথা, আমরা একটি দল হিসেবে ভালো পারফরম্যান্স করতে চাই।
চ্যাম্পিয়ন হতে পারা না-পারার প্রসঙ্গ বাদ দিলে এ টুর্নামেন্টে আমাদের আর কি প্রাপ্তি থাকতে পারে?
জিমি: দেখেন, আমরা কিন্তু অন্য কোনো ভালো টিমের সাথে সিরিজ খেলতে পারি না। কারণ, তারা হয়তো ধারণা করে বাংলাদেশের র্যাঙ্কিং ৩০, তাদের সঙ্গে ম্যাচ খেলে কি হবে? আমরা সর্বশেষ যে কয়টি প্রস্ততি ম্যাচ খেলেছি সেগুলো ইনটারন্যাশনাল ছিল। এখন যদি এ টুর্নামেন্টে ভালো করতে পারি তাহলে র্যাঙ্কিংয়ে উপরে থাকা দলগুলো আমাদের সঙ্গে খেলার আগ্রহ প্রকাশ করবে। যদি হয়, সেটা অবশ্যই বড় প্রাপ্তি হবে হকির জন্য।
এ দলটি কেমন হয়েছে? অধিনায়ক হিসেবে কতটুকু আস্থা আছে তাদের উপর?
জিমি : আমাদের এ দলটি অনেক শক্তিশালী। এমন কি রিজার্ভ বেঞ্চেও অনেক ভালো খেলোয়াড় থাকবে। খেলার মতো ক্যাপাবিলিটি আছে-এমন ১২-১৪ জন খেলোয়াড় আগে থাকতো। কিন্তু এখন ১৮ জনের সবাই প্রথম একাদশে খেলার যোগ্যতা আছে। প্রত্যেক খেলোয়াড়ের স্কিল খুব ভালো। সবার স্কোরিং এবিলিটিও আছে। এখন খেলোয়াড় পরিবর্তনে কোনো সমস্যা হবে না।
চয়ন দলে ফেরায় পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল পাওয়ার আশাতো আরও বেড়ে গেল তাই না?
জিমি : পেনাল্টি কর্নারে যদি সফল হই, তাহলে গোলের পার্থক্যই বলে দেবে আমাদের পারফরম্যান্সে কেমন হলো। মামুনুর রহমান চয়ন দলে ফেরায় পেনাল্টি কর্নার নিয়ে আমাদে প্রত্যাশা অনেক বেড়েছে। তার কাছে চাওয়াটাও বেশি হবে আমাদের। আশরাফুল ইয়ং প্লেয়ার। সেও ভালো পেনাল্টি কর্নার নেন। পেনাল্টি কর্নার নিয়ে কোচ ভালো পরিকল্পনাও করেছেন। চয়ন ও আশরাফুল যদি ৮০ ভাগও নিজেদের মতো করে হিট নিতে পারেন তাহলে প্রত্যেকটিতে গোল হবে বলে আশা করছি। বকিটা নির্ভর করবে তারা কতটুকু প্রয়োগ করতে পারেন তার উপর।
নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে বলুন
জিমি : সব সময় নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করেছি। অনেক সময় হয়তো পারিনি। যখনই খেলি তখন এতটুকু চাওয়া থাকে-সেটা আমার মাধ্যমে হোক কিংবা টিমের মাধ্যমে, অবশ্যই বাংলাদেশকে সবাই যেন উপরে দেখে। আমার পারফরম্যান্সে যদি টিমের রেজাল্ট ভালো হয়, তাহলে মনে করবো খেলোয়াড় হিসেবে আমি সফল। আমার কাছে সবার প্রত্যাশা বেশি। চেষ্টা করবো নিজের সেরাটা দিয়ে দলের জন্য ভালো কিছু করতে। এ ছাড়া টিমকে কিভাবে ভালো খেলানো যায় সে চেষ্টাও থাকবে আমার।
কতগুলো গোল করতে চান এ টুর্নামেন্টে?
জিমি : গোল কয়টা করতে পারবো তাতো আগে বলা যায় না। এটা বলে-কয়ে হয় না। গত এএইচএফ কাপে প্রথম দুই ম্যাচে আমার কোনো গোল ছিল না। কিন্তু পরের চার ম্যাচে গোল পেয়েছি, হ্যাটট্রিকও ছিল। আমি সেন্টার ফরোয়ার্ড। কিন্তু দেখা যায় অনেক সময় অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে খেলি। সে হিসেবে আমার বল যোগান দেয়া হয় বেশি। আর একটা কথা হলো গোল সবাই করতে চান। সুযোগ পেলে তা যাতে নষ্ট না হয় সে চেষ্টা থাকবে ইনশাল্লাহ।
আরআই/আইএইচএস/আরআইপি