আবারও শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহ ম্যাজিক
কী জাদুই না জানেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার হাতে কী এমন জাদু যে, শেষ ওভারে এসে সেই জাদুতে জ্বলে-পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছে প্রকিপক্ষের ব্যাটিং লাইনআপ। শেষ ওভারের জাদু তিনদিন আগে একবার দেখিয়েছিলেন। তখন বলেছিলেন, ‘এমন ঘটনা জীবনে একবারই ঘটে।’কিন্তু মাহমুদউল্লাহ দ্বিতীয়বার ঘটিয়ে দেখালেন। তার শেষ ওভারের জাদুতে নিশ্চিত জয়ের ম্যাচটি হেরে গেলো তামিম ইকবালের দল চিটাগাং ভাইকিংস। শ্বাসরূদ্ধকর নাটকীয়তায় ৪ রানে ম্যাচ জয় করে নিল খুলনা টাইটান্স।
বিপিএলে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই রাজশাহী কিংসকে শেষে ওভারে এসে একাই হারিয়ে দিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শেষ ওভারে ৭ রান প্রয়োজন ছিল। মাহমুদউল্লাহর ম্যাজিকে ৩ রানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে খুলনা। ওই ওভারে পরপর দুই বলে দুই উইকেট এবং শেষ বলে তৃতীয় উইকেট নিয়ে মাহমুদউল্লাহ অবিশ্বাস্যভাবে জিতিয়ে দিয়েছিলেন খুলনাকে।
আবারও একই ঘটনার পূনরাবৃত্তি ঘটালেন বাংলাদেশের অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটার। চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষে শেষ ওভারে এসেই ম্যাজিক দেখালেন তিনি। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৬ রান। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ এ ওভারেও নিলেন ৩ উইকেট। ডট বলি দিলেন দুটি। ফলে খুলনা টাইটান্সের জয় এলো ৪ রানে।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৬ রান। উইকেটে তখন দুই বিদেশি আফগানিস্তানের মোহাম্মদ নবী এবং শ্রীলংকার চতুরঙ্গ ডি সিলভা। নবী ব্যাট করছিলেন ৩৮ রানে এবং ডি সিলভা ১৯ রানে। পুরোপুরি দুই সেট ব্যাটসম্যান। হাতে তখনও পুরো চার উইকেট। এমন অবস্থায় জয় একেবারেই সময়ের ব্যাপার।
কিন্তু বল হাতে আসলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তখনই সবাই বলাবলি শুরু করছিল, আবারও কী তবে মাহমুদউল্লাহর ম্যাজিক! সত্যিই ম্যাজিক দেখাতে শুরু করলেন তিনি। প্রথম বলেই মোহাম্মদ নবী নিয়েছেন ১ রান। পরের বলে অফ স্ট্যাম্পের ওপর থাকা বলটিতে কাট করতে যান চতুরঙ্গ ডি সিলভা; কিন্তু বল ব্যাটের কানায় লেগে গিয়ে জমা পড়ে উইকেটরক্ষক নিকোলাস পুরানের হাতে। আউট হয়ে গেলেন ডি সিলভা।
পরের বলে ব্যাট করতে নামলেন আবদুর রাজ্জাক। মাহমুদউল্লাহর তৃতীয় বলটি ঠেকালেন রাজ্জাক। চতুর্থ বলে গিয়ে আকাশে তুলে দিয়ে খেলতে চাইলেন রাজ্জাক। বল উঠে গেলো আকাশে। ক্যাচ ধরতে ভুল করলেন না শুভাগত হোম। আরও এক উইকেটের পতন। ২ বলে তখন ৫ রান প্রয়োজন। পঞ্চম বলটি এমনভাবে করলেন মাহমুদউল্লাহ, বুঝতেই পারেননি মোহাম্মদ নবী। ততক্ষণে অবশ্য প্রচণ্ড চাপ তৈরি হয়ে গেছে নবীর ওপর। যে কারণে পঞ্চম বলটিতে রানই নিতে পারলেন না।
শেষ বলে প্রয়োজন ৫ রান। বাউন্ডারি মারলে ম্যাচ টাই। ছক্কা মারলে জয়। মাহমুদউল্লাহ দীর্ঘ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগালেন এই বলটি করতে গিয়ে। অফ স্ট্যাম্পের ওপর কিছুটা শট পিচ করালেন বলটি। পেছনের পায়ে ভর দিয়ে বলটিকে পুল করতে চাইলেন। সোজা বলটি গিয়ে জমা পড়লো অলক কাপালির হাতে।
সঙ্গে সঙ্গেই উল্লাসে মেতে ওঠে খুলনার ক্রিকেটাররা। অধিনায়কের দারুণ কীর্তিতে নিশ্চিত হেরে যাওয়া ম্যাচটিতে অসাধারণ এক জয় পেয়ে গেলো তারা।
আইএইচএস/এবিএস