শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে খুলনার নাটকীয় জয়
জয়ের জন্য শেষ ওভারে রাজশাহীর প্রয়োজন ৭ রান। আবুল হাসান রাজু আর মোহাম্মদ সামি উইকেটে। বোলার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খুব সহজেই এই লক্ষ্য পার হওয়া যায়। আবার গৌরবময় অনিশ্চয়তায় ঢাকা থাকে শেষের এই মুহূর্তগুলোও। মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সেই অনিশ্চয়তার চূড়ান্ত রূপই দেখলো ক্রিকেট ভক্তরা।
দারুণ টান টান উত্তেজনা। শ্বাসরূদ্ধকর পরিস্থিতি। শেষ পর্যন্ত ৩ রানের নাটকীয় এক জয় নিয়েই মাঠ ছাড়লো খুলনা টাইটান্স। হারিয়ে দিলো রাজশাহী কিংসকে।
মাহমুদউল্লার প্রথম বল থেকেই এক রান নিয়ে ফেলেন আবুল হাসান রাজু। দ্বিতীয় বলে মোহাম্মদ সামি লেগ বাই থেকে নেন ১ রান। তৃতীয় বলে ওয়াইড। যোগ হলো আরও এক রান। শেষ চার বলে প্রয়োজন ৪ রান। পরের বলেই আরিফুল হকের হাতে দারুণ এক ক্যাচে পরিণত হন আবুল হাসান রাজু।
বল বাকি তিনটা, রান প্রয়োজন ৪। চতুর্থ বলেও উইকেট। এবার আউট হলেন মোহাম্মদ সামি। মাহমুদউল্লাহর ঘূর্ণিতে বোল্ডই হয়ে গেলেন তিনি। সম্ভাবনা তৈরি হলো হ্যাটট্রিকের। ৫ম বলে স্ট্যাম্পিংয়ের জোরালো আবেদন। থার্ড আম্পায়ার কল করে দেখা গেলো, না আউট হননি নাজমুল হাসান। তবে ওই বলে রানও হয়নি।
শেষ বলে প্রয়োজন ৪ রান। একটি বাউন্ডারি মারলেই কেল্লাফতে। সে লক্ষ্যেই মাহমুদউল্লাহকে এগিয়ে এসে খেলতে যান নাজমুল হাসান। কিন্তু ব্যাটেই বল লাগাতে পারেননি। হয়ে গেলেন স্ট্যাম্পিং। শেষ ওভারে এমন নাটকীয়তায় শেষ পর্যন্ত ৩ রানে খুলনার কাছে হেরে গেলো রাজশাহী।
শুরুতে দুর্দান্ত বোলিং করে খুলনাকে ৮ উইকেটে ১৩৩ রানে বেধে ফেলতে সক্ষম হয়েছিল রাজশাহীর বোলাররা। রিকি ওয়েসেলস আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ- দু’জনই করেন ৩২ রান করে। টি-টোয়েন্টিতে এ রান বলতে গেলে খুবই মামুলি।
জবাব দিতে নেমে খুলনার পাকিস্তানি রিক্রুট জুনায়েদ খানের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে ২৪ রানেই ৩ উইকেট হারায় রাজশাহী। নুরুল হাসান সোহান ৪, সাব্বির রহমান ৪ এবং উমর আকমল আউট হন শূন্য রানে। এরপর সাতিম প্যাটেল আর ড্যারেন স্যামি মিলে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন।
২১ বলে মাত্র ১০ রান করে আউট হন সাতিম প্যাটেল। ২৩ বলে ৩১ রান করেন ড্যারেন স্যামি। এক পাশে একের পর এক ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিল। অপরপ্রান্তে অটল হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মুমিনুল হক। তিনি একাই যেন পুরো ম্যাচটি বের করে আনার দায়িত্ব নেন।
কিন্তু দলকে একেবারে জয়ের দ্বারপ্রান্তে এনে ৫৭ বলে ৬৪ রান করে আউট হয়ে যান মুমিনুল। ৬টি বাউন্ডারির মার ছিল তার ইনিংসে। কোন ছক্কার মার ছিল না। স্যামি আউট হন ৩১ রান করে। আর কোন ব্যাটসম্যানই দুই অংকের ঘর স্পর্শ করতে পারেনি। শেষ বলে গিয়ে ১৩০ রানে অলআউট হয়ে যায় রাজশাহী কিংস।
পাকিস্তানি জুনায়েদ খান ২৩ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। শেষ ওভারেই বাজিমাত করা মাহমুদউল্লাহ ২ ওভারে ৬ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। ২ উইকেট নেন শফিউল ইসলাম। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করার জন্য ম্যাচ সেরা হলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
আইএইচএস/আরআইপি