মিরাজকে ‘অটোচালকের ছেলে’ বলে বিদ্রুপ ভারতীয় মিডিয়ায়
১৯ বছর বয়সী মেহেদী হাসান মিরাজের হাতেই বধ হলো ইংল্যান্ডের মতো ক্রিকেট পরাশক্তি। দুই টেস্ট মিলিয়ে নিলেন ১৯ উইকেট। ঢাকা টেস্টেই ১২ উইকেট। তার হাতেই যবনিকাপাত ঘটলো ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপের। ম্যাচ সেরার পাশাপাশি তিনি হয়েছেন সিরিজ সেরাও।
এমন অসাধারণ কীর্তির পর পুরো ক্রিকেট দুনিয়াই বসে গেছে মিরাজের প্রশংসাগাথা রচনা করতে। চারদিক থেকেই ভেসে আসছে অভিনন্দনের জোয়ার। সবার মধ্যমণি এখন মিরাজ। তাকে ঘিরেই টিম বাংলাদেশের উল্লাস-উদযাপন।
আন্তর্জাতিক মিডিয়ায়ও গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পেয়েছে বাংলাদেশের এই জয় এবং মেহেদী হাসান মিরাজের নাম। সবাই কমবেশি লিখেছে তার কীর্তির কথা। শুধু তাই নয়, মিরাজের পরিচয় তুলে ধরতে গিয়ে সবাই’ই লিখেছিল, সর্বশেষ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছিলেন তিনি। ছিলেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়কও। অর্থাৎ, মিরাজ অপরিচিত কেউ নন। পরিচিত এবং পরীক্ষিত পারফরমার। শুধু নিজের সাফল্যের ধারাবাহিকটাই টেনে আনলেন সিনিয়র দলের হয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের অভিষেকে।
কিন্তু, কোনো কোনো ভারতীয় মিডিয়া মিরাজকে খাটো করারও চেষ্টা করেছে। তার কীর্তি তুলে ধরার চেয়ে তার বাবার পুরনো পেশাকে টেনে এনে খানিকটা বিদ্রুপের চেষ্টাও চালিয়েছে। এ তালিকায় সবার চেয়ে অগ্রগণ্য কলকাতার প্রভাবশালি আজকাল পত্রিকা। ক্রিকেটের সিনিয়র সাংবাদিক দেবাশিস দত্তই লিখেছেন, ‘অটো চালকের ছেলের হাতে ইংল্যান্ড হেরে গেল।’
এক সময় খুলনায় নিজের গ্রামের বাড়িতে অভাবের সংসার টানতে অটো চালাতেন মিরাজের বাবা। এখন অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। মিরাজের বাবাকে এখন আর অটো চালাতে হয় না। অথচ, রিপোর্টটার হেডিংয়ে সেই পুরনো পেশার কথা টেনে এনে বিদ্রুপই করার চেষ্টা করা হয়েছে বাংলাদেশের উঠতি তারকাকে।
শুধু তাই নয়, নিউজের শুরুতে লেখা হয়েছে ‘খুলনার পোলা’। আবার লেখা হলো ৩ সপ্তাহ আগে মেহেদী হাসান মিরাজ নামের কোনো ক্রিকেটারকে চিনতো না দুনিয়া। মেলানো হয়েছে, পাকিস্তানের গজলগায়কের নামের সাথে। যেন, এই নামটির সঙ্গে না মেলালে তাকে কেউ চিনবে না।
দেবাশিস দত্তের মতো এমন একজন সিনিয়র ক্রিকেট সাংবাদিকের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের কথা ভুলে যাওয়ার কথা নয়। মিরাজকে চিনতো সবাই। পুরো ক্রিকেট দুনিয়াই। অথচ, দেবাশিস দত্ত লিখলেন উল্টোটা।
সাফল্যের সাতকাহন লিখতে গিয়েও তারা ছলেবলে-কৌশলে বাংলাদেশকে চেষ্টা করে খাটো করার। তারই প্রমাণ আরও একবার দিলো তারা।
আইএইচএস/বিএ