‘এটাই বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় অর্জন’
আসল ক্রিকেট কোনটি। ৫ দিনের টেস্ট, ৫০ ওভারের ওয়ানডে নাকি ২০ ওভারের টি-টোয়েন্টি? বোদ্ধারা নিশ্চিত উত্তর দেবেন টেস্ট ক্রিকেট। ক্রিকেটের সব রূপ, রস, গুণ এই ফরম্যাটের মধ্যেই নিহিত। গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা হিসেবে পরিচিত ক্রিকেট। সেই অনিশ্চয়তার গৌরব সৃষ্টি হয়েছে কেবল টেস্ট ক্রিকেটের কল্যাণেই। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর গত ১৬ বছরে বাংলাদেশ ওয়ানডেতে অনেক বড় বড় জয় পেয়েছে। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে। নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইট ওয়াশ করেছে। বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল, পাকিস্তানকে হোয়াইট ওয়াশ, ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জয়, ঘরের মাঠে টানা ৬টি সিরিজ জয় নাকি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই একটি মাত্র টেস্টে বাংলাদেশের জয়- কোনটা বড়!
নিক্তিতে তুলে মাপতে গেলে নিশ্চিত একটি টেস্ট জয়ই সবগুলোর চেয়ে ভারি হবে। এমন একটি জয়ের জন্যই তো বছরের পর বছর অপেক্ষা করেছে বাংলাদেশ। সেই জয়টি ধরা দিতে দিতেও ধরা দিল না ২০০৩ সালে মুলতানে। ২০০৬ সালে ফতুল্লায়, ২০০৮ সালে চট্টগ্রামে কিংবা এই সিরিজেই চট্টগ্রামে। অবশেষে সেই অধরা জয়টি ধরা দিল চট্টগ্রামে। ইংল্যান্ডের মত শক্তিশালি একটি দলের পূর্ণাঙ্গ শক্তিকে মাত্র তিন দিনেই পরাজিত করে বাংলাদেশ ইতিহাস রচনা করলো।
এমন একটি জয়কে তাই দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম আখ্যা দিলেন ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবেচেয় বড় অর্জন হিসেবে। বললেন, ‘এটাই বাংলাদেশের সেরা অর্জন, সেরা প্রাপ্তি।’
এর আগে মুশফিক বলেছিলেন, তার অধিনায়কত্বে বাংলাদেশের সেরা অর্জন হচ্ছে, গত বছর খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ড্র। সেই পাকিস্তানই কিছুদিন আগে উঠেছিল টেস্ট র্যাংকিংয়ে শীর্ষে। এবার তো সরাসরি জয়। জয়ের পর আর কোন কথা নেই। আর কোন কিছুই তার সঙ্গে তুল্য হতে পারে না।
তবে মুশফিকের মধ্যে এই জয়ে অতি উচ্ছাস তৈরী করেনি। এর কারণ, মুশফিক মনে করেন- দারুণ এক পরিকল্পনার বাস্তবায়নের পরই এসেছে এই জয়। সুতরাং, এটা নিয়ে তাদের মধ্যে উদ্যমতা কাজ করেনি। নিজেদের পরিকল্পনা নিয়ে মুশফিক বলেন, ‘সিরিজ শুরুর আগেই আমরা একটা পরিকল্পনা করছিলাম যে, এমন স্পিনিং ট্র্যাক বানানো হোক, যাতে ৩ থেকে ৪ দিনেই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে দিতে পারি। এবং সেটাই সম্ভব হয়েছে। চট্টগ্রামেও কাছাকাছি ছিলাম। স্পিনাররা ভালো বোলিং করেছে। ইংল্যান্ডকে দুবার অলআউট করে দিয়েছিলাম। তবে চট্টগ্রামে না পারলেও, ঢাকায় পেরেছি। আমার কাছে মনে হয় না এটা স্বপ্নে পাওয়া কোন জয়। কারণ, আমরা সুন্দর একটি গেম প্ল্যান সাজিয়েছিলাম। সেই প্ল্যান মাঠে সঠিকভাবে প্রয়োগ ঘটাতে পেরেছিল। এ কারণেই আমি যে উদ্বেলিত হয়ে পড়েছি যে তা নয়। কারণ, আমার কাছে মনে হয়েছে, এই জয়টা অবশ্যম্ভাবী।’
আইএইচএস/পিআর