পাঁচ হাজারি তামিম
একটা ভিডিওর সিডি চাই। অখ্যাত বাংলাদেশি নবীন এক ব্যাটসম্যানের। এপাড়া ওপাড়া থেকে শুরু করে ইন্টারনেট সব ঘেঁটেও কোথাও খুঁজে পেলেন না দ্রাবিড়। মনে ভয় ১৮ বছর বয়সী সে তরুণই না যেন নিজেদের জম হয়ে যায়। হয়েছিলও তাই। ক্যারিয়ারের মাত্র চার ম্যাচ খেলা তরুণের ব্যাটে উড়ে গিয়েছিল ভারত।
শুধু ম্যাচ হার নয় ওই হারে বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে পড়েছিল ভারত। সেদিনের সেই তরুণই আজকের তামিম ইকবাল। ক্যারিয়ারটা শুরু করেছিলেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। তবে নিজের জাতটা চিনিয়েছিলেন ভারতের বিপক্ষে ২০০৭ বিশ্বকাপের সে ম্যাচেই। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি টাইগার এই ব্যাটসম্যানকে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেশের হয়ে ব্যাটিং রেকর্ডের প্রায় সবই নিজের করে নেওয়া তামিমে আবার অনেকগুলো প্রথম কীর্তিও হয়েছে। তবে ওয়ানডেতে হাজার রানের মাইলফলকগুলোতে প্রথম স্পর্শের স্বাদ এবারই প্রথমবার পেলেন তামিম। প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করতে ইংল্যান্ড সিরিজে প্রয়োজন ছিল ৬৯ রান।
কিন্তু প্রথম দুই ওয়ানডে মিলিয়ে করতে পেরেছিলেন মাত্র ৩১ রান। অবশেষে কাঙ্খিত সেই মুহূর্ত এল নিজের ঘরের মাঠ চট্টগ্রামে। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ক্রিস ওকসের করা ২২তম ওভারে শর্ট বলে পুল করে বাউন্ডারিতে ক্রিকেটের ইতিহাসে ৭৮ তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৫ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন দেশ সেরা এই ওপেনার।
১৫৮ ইনিংসে ৫ হাজার ছুঁয়ে তামিম বসেছেন ইংলিশ অধিনায়ক মরগ্যানের পাশে। ১০১ ইনিংসে পাঁচ হাজারের মাইলফলক ছুঁয়ে বিশ্বরেকর্ড হাশিম আমলার। আর ওয়ানডেতে ৫ হাজার রানের মাইলফলক পেরোনো প্রথম ব্যাটসম্যান ভিভ রিচার্ডস। তামিম-মরগানের চেয়ে কম ইনিংস খেলে ৫ হাজার স্পর্শ করেছেন ৪১ জন।
তবে তামিমের পেছনেও আছে বেশ কিছু বড় নাম। ১৬২ ইনিংস লেগেছিল কুমার সাঙ্গাকারার, যুবরাজ সিংয়ের ১৬৪, বিরেন্দর শেবাগের ১৬৬, তিলকারত্নে দিলশানের ১৭০, স্টিভেন ফ্লেমিংয়ের ১৮০, মাহেলা জয়াবর্ধনের ১৮২, সনাৎ জয়াসুরিয়ার ১৮৩ ও ব্রেন্ডন ম্যাককালামের লেগেছিল ১৯১ ইনিংস।
বাংলাদেশের হয়ে ১ হাজার, ২ হাজার রান প্রথম করেছিলেন খালেদ মাসুদ। ৩ হাজারে মাইলফলক প্রথম স্পর্শ করেছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। এরপর ৪ হাজার রানের মাইলফলকে পৌঁছানো নিয়ে তামিম-সাকিবের মধ্যে চলছিল দারুণ লড়াই। শেষ পর্যন্ত আগে স্পর্শ করেন সাকিব, ২০১৫ বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। মাঝে এক ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৯৫ রানের দারুণ ইনিংসটির পথে তামিম স্পর্শ করেন ৪ হাজার।
বিশ্বকাপের পর পাকিস্তানের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেন তামিম। রান পেয়েছেন সব সিরিজেই। সবশেষ আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে করেছেন ৮০, শেষ ম্যাচে ১১৮। রান আর সেঞ্চুরিতে পেছনে ফেলেছেন সাকিবকে। দেশের তিন ফর্মেটেই এখন সর্বোচ্চ রানের মালিক এখন তামিম।
যেভাবে তামিমের ৫ হাজার
রান ইনিংস তারিখ প্রতিপক্ষ
১ হাজার ৩৭ ২৮ জুন ২০০৮ ভারত
২ হাজার ৭০ ১১ জানুয়ার ২০১০ ভারত
৩ হাজার ১০২ ১৯ অগাস্ট ২০১১ জিম্বাবুয়ে
৪ হাজার ১৩৭ ০৫ মার্চ ২০১৫ স্কটল্যান্ড
৫ হাজার ১৫৮ ১২ অক্টোবর ২০১৬ ইংল্যান্ড
জাগো চ্যাম্পিয়নের ১৩তম সংখ্যা পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে
আইএইচএস/এবিএস