চট্টগ্রামে টসই হবে মূল ফ্যাক্টর
জাতীয় লিগের ম্যাচ খেলতে এখন আমরা চট্টগ্রামে। খুলনার বিপক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিশের ম্যাচটির দুই দিনই ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। ব্যাট করতে মাঠেই নামতে পারলাম না। খবর পেয়েছি চট্টগ্রামেও বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি হওয়া মানেই উইকেট কিন্তু কাভারে ঢাকা। আউটফিল্ড ভেজা। চট্টগ্রামে ড্রেনেজ ব্যবস্থা এখন অনেক উন্নত। তবুও বৃষ্টি হওয়া মানে তো উইকেটের চরিত্রই বদলে যাওয়া। এমন পরিস্থিতিতে যদি খেলা মাঠে গড়ায়, নিশ্চিত প্রথমে ফিল্ডিং করা দল সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবে।
পরিবর্তিত আবহাওয়ার কারণে চট্টগ্রামের এই ম্যাচটিতে আমি মনে করি টস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ টস জিতে আগে ফিল্ডিং নিতে চাইবে উভয় দলই। বাংলাদেশ টস জিতলে এই সুবিধাটা নিতে পারবে। যদিও প্রথম দুই ম্যাচে আমরা টস হেরে গিয়েছিলাম। এই ম্যাচে কী হবে জানি না।
যাই হোক, বাংলাদেশকে স্বাভাবিক খেলাই খেলতে হবে। নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারলেই এখন অনায়াসে জয় এসে যাবে। প্রথম ম্যাচের শেষ তিকে তাড়াহুড়াটা না করলে তো ঢাকাতেই সিরিজ নিশ্চিত করে ফেলতে পারতাম। দ্বিতীয় ম্যাচে স্বাভাবিক খেলাটা দিয়েই কিন্তু বাংলাদেশ জিতেছে। চট্টগ্রামেও স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে হবে।
বোলিংটা বাংলাদেশের বেশ দুর্দান্ত হচ্ছে। মাশরাফি তো মনে হয় ফর্মের চূড়ায় রয়েছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ এবং ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই দুই ম্যাচেও দুর্দান্ত বোলিং করেছে। সঙ্গে নেতৃত্বটাও ছিল তার অসাধারণ। অধিনায়ক যখন সামনে থেকে পারফর্ম করেন, তখন দলের অন্য সবাই উজ্জীবিত হয়।
মাশরাফির সঙ্গে সাকিবও দারুণ পারফর্ম করছে। ব্যাট এবং বল হাতে সমান পারফরমার। তাসকিন ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিয়েছে। নাসির-সৈকত ভালো বল করছে। শফিউলও ভালো করছে। তবে আমার মনে হয়, চট্টগ্রামের এই ম্যাচে স্পিন শক্তিটা বাড়ালে সম্ভবত ভালো হবে। শফিউলের পরিবর্তে বাঁ-হাতি তাইজুলকে খেলানো যেতে পারে।
এর পক্ষে আমার যুক্তি হলো, এখন পর্যন্ত পেসাররা কিন্তু সবগুলো ওভার করছে না। তিন পেসার মিলে ২৪ কিংবা ২৫ ওভার করছে। চট্টগ্রামের উইকেট অনেকটাই স্পিনবান্ধব। সে ক্ষেত্রে দুই পেসারের পুরো ২০ ওভারের সঙ্গে যদি একজন জেনুইন বাঁ-হাতি স্পিনার থাকে, তাহলে মাশরাফির হাতে অপশন বেড়ে যাবে। সাকিব-নাসির-তাইজুল এবং মোসাদ্দেক, এই চারজনকে ইচ্ছামত ব্যবহার করতে পারবে মাশরাফি। যদিও আমার মনে হয় না, টিম ম্যানেজমেন্ট উইনিং কম্বিনেশন ভাঙবে কি না।
ব্যাটসম্যানদের কথা বলবো, উইকেটটা আগে ভালোভাবে রিড করতে হবে। ঢাকায় দ্বিতীয় ম্যাচের উইকেট কিন্তু ছিল বেশ কঠিন। ব্যাটিংবান্ধব তো নয়ই। ওই উইকেটটা শুরুতেই দুই দলের কেউই বুঝতে পারেনি। চট্টগ্রামে এমনিতেই বৃষ্টির কারণে উইকেট ঢাকা। সুতরাং উইকেট যে একটু কঠিন হবে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
এ কারণে উইকেট রিড করেই তবে ব্যাট করতে হবে। আশা করি ব্যাটসম্যানরা সফল হবে। সবাই তো কম-বেশি ফর্মে আছে। শুধু মুশফিক ছাড়া। আমার বিশ্বাস, সেও দ্রুত কামব্যাক করবে। তার ব্যাটিংয়ে আস্থাহিনতা দেখি না। যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস আছে। শুধু ভাগ্যটা সঙ্গে থাকলেই হয়ে যাবে।
চট্টগ্রাম তামিমের হোম গ্রাউন্ড। স্থানীয় দর্শকদের প্রত্যাশাও তার কাছে অনেক বেশি। অনেকেই মাঠে আসে তামিমের কাছ থেকে ভালো একটা ইনিংস দেখার জন্য। আমিও আশা করি সমর্থকদের প্রত্যাশা সে পূরণ করতে পারবে।
দ্বিতীয় ম্যাচে জস বাটলারের সঙ্গে ওই ঘটনাটা এখনও আলোচনায় রয়েছে দেখছি। আমি মনে করি, আইসিসির একটা সিদ্ধান্ত এসে যাওয়ার পর ওটা নিয়ে আর ঘাটাঘাটি না করাই ভালো। কারণ ওটা ওখানেই শেষ। তবুও আলোচনা হচ্ছে। দর্শকরাও আলোচনা করছে। অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করছে, মাঠে এর প্রভাব পড়বে কি না। আমার বিশ্বাস, মাঠে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। কারণ, দুই দলের ক্রিকেটাররা বেশ পেশাদার। তারা এসব নিয়ে চিন্তাও করছে না।
সবশেষে প্রত্যাশা করবো বাংলাদেশের একটি দুর্দান্ত জয়ের। যদিও বৃষ্টির চোখ রাঙানি রয়েছে। প্রতিপক্ষের নামটাও ইংল্যান্ড। সব মিলিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি মাশরাফিরা। তবুও আশা করি টানা ৭ম সিরিজ জয়টা এসে যাবে বাংলাদেশের।
আইএইচএস/আরআইপি