জয়ের পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ
ইমরুল কায়েসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি এবং সাকিব আল হাসানের অসাধারণ ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে ঐতিহাসিক এক জয়ের দিকে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের ছুড়ে দেয়া ৩১০ রানের বিশাল লক্ষ্যকে সহজ বানিয়ে ফেলেছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। উইকেটে রয়েছে দলের সেরা দুই ব্যাটসম্যান- ইমরুল কায়েস এবং সাকিব আল হাসান। এ রিপোর্ট লেখার সময় বাংলাদেশের প্রয়োজন ৫৪ বলে ৪৫ রান।
৩১০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরু থেকে দুর্দান্ত ব্যাটিং উপহার দেন ইমরুল কায়েস। যার ফলশ্রুতিতে এলো তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি। পাশাপাশি অন্য ব্যাটসম্যানরা যখন ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছিলেন, তখন সাকিব আল হাসান এসে হাল ধরেন। ৩৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি করার পর ইংলিশ বোলারদের সামনে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠেন তিনি। একের পর এক বলকে পাঠাচ্ছেন বাউন্ডারির বাইরে।
এ রিপোর্ট লেখার সময় বাংলাদেশের রান ৪১ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৬৫ রান। ১০৮ রানে ইমরুল কাযেস এবং ৭৩ রানে উইকেটে রয়েছেন সাকিব আল হাসান। দু’জন গড়েছেন ১১২ রানের জুটি।
এর আগে সম্ভাবনা তৈরী করে একে একে ফিরে যাচ্ছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। প্রথমে তামিম ইকবাল। এরপর সাব্বির রহমান, মাহমুদউল্লাহ এবং সর্বশেষ আউট হয়ে গেলেন মুশফিকুর রহীমও। ১৭ রান করে তামিম, ১৮ রান করে সাব্বির এবং ২৫ রান করে ফিরলেন মাহমুদুল্লাহ, মুশফিক ফেরেন ১২ বলে ১২ রান করে। চারজনই ফিরলেন বিগ শট খেলতে গিয়ে। অথ্যাৎ এক কথায় উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এলেন তারা।
যদিও তামিম আর ইমরুল শুরুটা করেছিলেন অসাধারণ। প্রথম বলে তামিম ইকবাল নিলেন ১ রান। স্ট্রাইকে আসলেন ইমরুল কায়েস। দ্বিতীয় বলে ক্রিস ওকসের ইনসুইংগার বলটি দেখে-শুনে খেললেন। রান নিলেন না। তৃতীয় বলেই বাউন্ডারির ওপর দিয়ে হাঁকিয়ে দিলেন বিশাল এক ছক্কা। বল মনে হচ্ছিল যেন হারিয়েই গিয়েছে। একটি বিজ্ঞাপনের ব্যানার ভেদ করে আটকে ছিল বলটি। এক দর্শক কুড়িয়ে অবশেষে ফেরত পাঠালেন বলটি।
সূচনাটা এভাবেই হলো বাংলাদেশের। সৌম্য সরকারের পরিবর্তে ওপেনিংয়ে যে ইমরুল কায়েসকে সুযোগ দেয়া হলো, তার দারুণ প্রতিদানও দিতে শুরু করলেন ইমরুল। অন্তত ইনিংসের শুরুতেই উইকেট হারিয়ে বসলো না বাংলাদেশ। তবে ১০ম ওভারে গিয়ে তামিমের উইকেট হারাতে হলো। অভিষিক্ত জ্যাক বালের বলটি খেলতে গিয়ে তুলে ফেলেন আকাশে। ক্যাচটা ধরেন জেমস ভিন্স।
৩১০ রানের বিশাল লক্ষ্য। এই লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে যেমন রান তুলতে হবে, তেমন সতর্কও হতে হবে। সেটা মাথায় রেখেই উইকেটে সেট হওয়ার চেষ্টা করছিলেন তামিম ইকবাল এবং ইমরুল কায়েস। কিন্তু ভুলটা করে বসলেন তামিম। উইকেট বিলিয়ে দিলেন তিনি। আউট হওয়ার সময় তামিমের রান ৩১ বলে ১৭।
তামিম আউট হওয়ার মাঠে নামেন সাব্বির রহমান। দারুণ আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং উপহার দিচ্ছিলেন তিনি। ১১ বলে করে ফেলেন ১৮ রান। ১৪তম ওভারের শেষ বলে জ্যাক বালকে দারুণ এক শট খেলেন সাব্বির। বল উড়ে যাচ্ছিল ওভার বাউন্ডারির লক্ষ্যে। কিন্তু ঠিক বাউন্ডারিতে দাঁড়িয়ে অসাধারণ এক ক্যাচ ধরলেন ডেভিড উইলি।
বলটা প্রথমে তিনি লাফিয়ে উঠে তালুবন্দী করলেন। এরপর যখন দেখলেন বলসহ বাউন্ডারির বাইরে চলে যাচ্ছেন, তখন বলকে আকাশে তুলে নিজে বাউন্ডারির ওপাশে চলে যান উইলি। আবার দ্রুত ভেতরে ঢুকে সেই বল মাটিতে পড়ার আগেই তালুবন্দী করে নেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আউট হয়ে সম্ভাবনাময় একটি ইনিংসের অপমৃত্যু ঘটলো।
২৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে আদিল রশিদকে পেছনের পায়ে ভর দিয়ে সুইপ খেলতে যান মাহমুদউল্লাহ। ডিপ মিডউইকেটে দাঁড়িয়েছিলেন বদলি ফিল্ডার স্যাম বিলিংস। তালুবন্দী করতে মোটেও কষ্ট হয়নি তার। ২৬ বলে ২৫ রান করে ফিরে যান তিনি।
এরপর ইমরুলের সঙ্গে জুটি বাধেন মুশফিকুর রহীম। ভালো খেলার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনিও। কিন্তু আদিল রশিদের স্পিনেই ঘায়েল হয়ে গেলেন তিনি। মোটামুটি সহজ বল ভেবে উঁচিয়ে খেলতে গিয়েছিলেন মুশফিক। ঠিক একই জায়গায় বলটি গিয়ে জমা পড়লো স্যাম বিলিংসের হাতে।
আইএইচএস/এমএস