ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

বাংলাদেশকে ৩১০ রানের লক্ষ্য দিল ইংল্যান্ড

প্রকাশিত: ১২:১২ পিএম, ০৭ অক্টোবর ২০১৬

শুরুটা হয়েছিল দুর্দান্ত। ৬৩ রানেই ৩ উইকেট ফেলে দিয়ে কোণঠাসা করে ফেলেছিল ইংল্যান্ডকে। এরপর দুই বেন- বেন স্টোকস আর বেন ডাকেটের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় ইংল্যান্ড। শুধু ঘুরে দাঁড়ানোই নয়, বিশাল স্কোরের ভিতও গড়েন দেন এই দু’জন। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের সামনে ৮ উইকেটে ৩১০ রানের বিশাল লক্ষ্য দাঁড় করিয়ে দিল সফরকারীরা।

বেন স্টোকস আর বেন ডাকেট- এই দু’জন মিলে গড়েন ১৫৩ রানের বিশাল জুটি। ৬০ বরে বেন ডাকেট আউট হলেও ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি গড়েন বেন স্টোকস। ৯৮ বলে সেঞ্চুরির পর ১০০ বলে ১০১ রান করে আউট হন তিনি। শেষ দিকে অধিনায়ক জস বাটলার এসে ঝড় তোলেন। ৩৮ বলে খেলেন ৬৩ রানের টর্নেডো ইনিংস। মূলতঃ তার এই ইনিংসেই ৩০০ পার করে ইংল্যান্ড।

ইংলিশদের ভাগ্য ভালোই বলতে হবে। একের পর এক ক্যাচ মিসের মহড়া না দিলে হয়তো এত রান হতে পারতো না ইংলিশদের। ৬৯ রানে থাকা বেন স্টোকসকে যদি তালুবন্দী করতে পারতেন মাহমুদুল্লাহ, তাহলে আড়াইশ’র মধ্যে আটকে রাখা যেতো ইংলিশদের। মোশাররফ রুবেল মিস করেছেন দুটি, শেষ দিকে এসে মোসাদ্দেক সৈকত মিস করেছেন একটি ক্যাচ। সুযোগ পেয়ে তার দারুণ সদ্ব্যবহার করেছে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা।

দুর্ভাগা বলতে হবে তাসকিন আহমেদকে। তার বলেই নিশ্চিত তিনটি ক্যাচ মিস হয়েছে। যদিও অপর দুই পেসার শফিউল ইসলাম এবং মাশরাফি বিন মর্তুজা ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। ২টি উইকেট নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। বাকি দুটি রানআউট। তাসকিনের বলে ক্যাচ তিনটি ধরতে পারলে তো অনেক আগেই অলআউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড।

এই ম্যাচে দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন শফিউল ইসলাম। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সব সময়ই দুর্দান্ত পারফরমার তিনি। ২০১১ বিশ্বকাপের সেই ম্যাচ বলুন কিংবা ২০১০ সালে ব্রিস্টলের সেই ম্যাচ- সব জায়গাতেই পারফরমার শফিউল ইসলাম। মাঝে দু’বছর হারিয়ে গিয়েছিলেন প্রায়; কিন্তু ঠিকই ফিরে এলেন ইংল্যান্ড সিরিজে। শুধু ফিরে আসাই নয়, একাদশেও ঠাঁই মিলে গেলো তার এবং টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থার দারুণ প্রতিদান দিলেন তিনি।

বেন ডাকেট আর বেন স্টোকসের ব্যাটে যখন ঘুরে দাঁড়িয়েছিল ইংল্যান্ড এবং ১৫৩ রানের জুটি গড়ে ইংল্যান্ডের রানকে বাংলাদেশের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যেতে শুরু করেছিল। তখনই ব্রেক থ্রুটা এনে দিলেন শফিউল।

৩৯তম ওভারের শেষ বলে শফিউলের ফ্লাইট দেওয়া ডেলিভারিটা হাঁটুগেড়ে শট খেলতে যান বেন ডাকেট। বল সোজা তার ব্যাট ফাঁকি দিয়ে গিয়ে আঘাত হানে স্ট্যাম্পে। ভাঙ্গে ১৫৩ রানের বিশাল জুটি। ৭৮ বলে ৬০ রান করে আউট হন ডাকেট।

শফিউলের পর ইংল্যান্ডের আরেক ভয়ঙ্কর ব্যাটসম্যান বেন স্টোকসকে ফেরান মাশরাফি বিন মর্তুজা। অবশ্য আউট হওয়ার আগে ক্যারিয়ারের ৭ম সেঞ্চুরিটা তুলে নিয়েছিলেন তিনি। ১০০ বল খেলে ১০১ রান করা স্টোকস মাশরাফির বলটিকে ডিপ মিডউইকেটের ওপর দিয়ে পুল করতে চেয়েছিলেন। ব্যাটের কানায় লেগে বল উঠে গেলে সেটি তালুবন্দী করেন সাব্বির রহমান।

এরপর মঈন আলি আর জস বাটলার জুটি বাধেন। যদিও মঈন আলিকে তামিমের ক্যাচে পরিণত করেন মাশরাফি। মাঝে তাসকিনের বলে একটি ক্যাচ উঠেছিল। তার করা শেষ ওভারের শেষ বলে ক্যাচ তুলেছিলেন ক্রিস ওকস। কিন্তু দুই ফিল্ডার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ক্যাচটা আর ধরতে পারলেন না। ইনিংসের শেষ ওভারে এসে ৩৮ বলে ৬৩ রান করা বাটলারকে ফেরান সাকিব। ইনিংসের একেবারে শেষ বলে ক্রিস ওকসকে রানআউট করে ফেরান সাকিব। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ৩০৯ রান করে ইংল্যান্ড।

এর আগে বাংলাদেশের বোলারদের সামনে শুরুতেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল ইংল্যান্ড। শুরুতে আঘাতটা হেনেছিলেন পেসার শফিউল ইসলাম। ফিরিয়েছিলেন জেমস ভিন্সকে। এবার সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণি তোপে পড়ে উইকেট হারালেন জেসন রয়। এর খানিক পর রানআউট হয়ে ফিরে যান জনি ব্যারেস্ট।

৬৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে যখন চোখে শর্ষে ফুল দেখতে শুরু করেছিল ইংলিশরা, তখন বেন ডাকেট এবং বেন স্টোকসের ব্যাটে ভর করে ঘুরে দাঁড়ায় সফরকারীরা। স্টোকস আর ডাকেট মিলে গড়েন ১৫৩ রানের জুটি। যেটি ভাঙেন শফিউল ইসলাম।

শুরুতে ইংলিশদের ওপর আঘাত হানেন পেসার শফিউল ইসলাম। ১৬ রান করা জেমস ভিন্সকে ফেরান তিনি। এরপর জেসন রয় বাংলাদেশের জন্য ধীরে ধীরে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিলেন। ৪০ বলে ৫টি বাউন্ডারি আর একটি ছক্কায় ৪১ রান করে ফেলেছিলেন তিনি। সাকিব আসেন নিজের চতুর্থ ওভারের বল করতে। ওভারের দ্বিতীয় বলেই লং অনে সোজা ছক্কা মারতে যান রয়। বল গিয়ে সাব্বির রহমানের হাতে।

এর এক ওভার পরেই বাংলাদেশের আরেকটি দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ের শিকার হলো ইংল্যান্ড। একদম শটে বল রেখে রান নিতে গিয়েছিলেন বেন ডাকেট এবং জনি ব্যারেস্ট। সাব্বির রহমানের সরাসরি থ্রো গিয়ে আঘাত হানে স্ট্যাম্পে। টিভি রিপ্লে দেখে ব্যারেস্টকে আউট ঘোষণা করেন থার্ড আম্পায়ার।

এর আগে শুরুতে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইংল্যান্ড দলের অধিনায়ক জস বাটলার। ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই টাইগার বোলারদের উপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে দুই ওপেনার রয় ও ভিন্স। ৭ ওভারেই তুলে নেন ৪১ রান। এরপর ইংলিশ শিবিরে আঘাত হানেন শফিউল। জেমস ভিন্সকে মাশরাফির তালুবন্দি করে সাজঘরে ফেরান টাইগার এই বোলার। আউট হওয়ার আগে ১৬ রান করে ইংলিশ এই ব্যাটসম্যান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস : ইংল্যান্ড (ব্যাটিং)
ইংল্যান্ড : ৩০৯/৮, ৫০ ওভার (বেন স্টোকস ১০১, বাটলার ৬৩, বেন ডাকেট ৬০, জেসন রয় ৪১, জেমস ভিন্স ১৬, ক্রিস ওকস ১৬, মঈন আলি ৬, জনি ব্যারেস্ট ০, ডেভিড উইলি ০*; মাশরাফি বিন মর্তুজা ২/৫২, শফিউল ২/৫৯, সাকিব ২/৫২)।

আইএইচএস/এমএস

আরও পড়ুন