শুক্রবার বিপিএলের ‘প্লেয়ার্স বাই চয়েজ’
আগামী ৪ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে জমজমাট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের চতুর্থ আসর। গত আসরের সফলতার ধারাবাহিকতায় এবারও প্লেয়ার্স বাই চয়েজ পদ্ধতিতে চলবে খেলোয়াড় বাছাই প্রক্রিয়া। এ উপলক্ষে আগামীকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকার হোটেল রেডিসনে দল তৈরির ভাগ্য পরীক্ষায় নামবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। যদিও ইতোমধ্যেই বেশ কিছু খেলোয়াড় নিশ্চিত করেছে তারা।
তৃতীয় আসরে ছয়টি দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিপিএল। তবে ওই আসরের সিলেটের ফ্র্যাঞ্চাইজিকে নিয়ম না মানার কারণে বহিষ্কার করে বিসিবি। তবে চলতি আসরে আরও দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজি দল বাড়ায় মোট সাত দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে এ আসর।
নতুন দল নেওয়ায় ফিরে এসেছে খুলনা ও রাজশাহী। খুলনার ফ্রাঞ্চাইজি কিনেছে জেমকন গ্রুপ আর রাজশাহীর ফ্রাঞ্চাইজি কিনেছে ম্যাঙ্গো এন্টারটেইনম্যান্ট। এছাড়াও রংপুরের মালিকানা বদল হয়ে আই স্পোর্টসের কাছ থেকে এখন গেছে সোহানা স্পোর্টস লিমিটেড কোম্পানির কাছে।
প্রত্যেকেটি দলের অনুরোধের ভিত্তিতে জাতীয় দলের বিদেশি কোচ ছাড়া নির্বাচক, স্থানীয় কোচ, ট্রেনার সবাই যে কোন দলের সঙ্গে থাকতে পারবেন প্লেয়ার্স ড্রাফটে। গত আসরে এ সুযোগ ছিলো না তাদের। তবে ম্যাচ ডেতে নির্বাচকরা ড্রেসিংরুমে থাকতে পারবেন না; কিন্তু ট্যাকনিক্যাল অ্যাডভাইজ, টিম গঠনের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করতে পারবে তারা। তাই প্লেয়ার্স বাই চয়েজের সময় এবার টেবিলে থাকছেন তারা।
ভারত ছাড়া সব দেশের ক্রিকেটারই খেলছেন এবারের বিপিএলে। বিশেষ করে পাকিস্তান থেকে ৪২ জন, ইংল্যান্ড থেকে ৩৮ জন ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে ৩৫ জন ক্রিকেটারকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে প্লেয়ার্স ড্রাফটে। স্থানীয় খেলোয়াড় আছেন ১৪৪ জন। স্থানীয় খেলোয়াড়দের থেকে প্রতিটি দলকে কমপক্ষে ১০ জন রাখতেই হবে এবং কমপক্ষে তিনজন করে রাখতে হবে বিদেশি খেলোয়াড়। সর্বনিম্ন তিনজন ও সর্বোচ্চ চারজন বিদেশিকে ম্যাচে খেলাতে পারবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো।
গতবারের মতো এবার থাকছে না আইকন। তাদেরকে ‘এ প্লাস’ ক্যাটাগরিতে নেওয়া হয়েছে। গত এক-দেড় বছরের মধ্যে যারা ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভালো খেলেছে তাদের মধ্য থেকেই ‘এ প্লাস’ ক্যাটাগরিতে সুযোগ পেয়েছেন ক্রিকেটাররা।
সেখান থেকে ৭ জন সেরা ক্রিকেটারকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এ ৭ জনের মধ্যে রয়েছেন সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহীম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মাশরাফি বিন মর্তুজা, সৌম্য সরকার ও সাব্বির রহমান। এখানে সাকিব পাচ্ছে সর্বোচ্চ ৫৫ লাখ, মুশফিক-রিয়াদ-তামিম-মাশরাফি ৫০ লাখ এবং সৌম্য ও সাব্বির পাচ্ছেন ৪০ লাখ করে। তবে আলোচনা সাপেক্ষে নিজেদের দাম আরও বাড়িয়ে নেবার সুযোগ পাচ্ছেন ‘এ প্লাস’ ক্যাটাগরিতে ক্রিকেটাররা। তবে অতিরিক্ত টাকার দায়ভার নেবেনা বিসিবি।
পুরনো দলগুলো দুজন করে খেলোয়াড় রেখে দেয়ার সুবিধা পাওয়ায় প্রথম ডাকের সুযোগ পাবে নতুন দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি খুলনা এবং রাজশাহী। এ দুই দলের মধ্যে লটারি হবে। সেখান থেকে চারজন খেলোয়াড় অন্তর্ভুক্ত করবে তারা। এরপর শুরু হবে মূল লটারি।
লটারিতে প্রথম যাদের নাম উঠবে সে প্রথম খেলোয়াড় নেবার সুযোগ পাবে। এভাবে খেলোয়াড় নেবে সাতটি দল। দ্বিতীয় ধাপে আগের ধাপে যারা শেষে খেলোয়াড় নিবেন তারা প্রথম খেলোয়াড় নিবেন। এরপর পর্যায়ক্রমে খেলোয়াড় নিবে তারা। দুই রাউন্ডের জন্য একবার লটারি। এক থেকে সাত আবার সাত থেকে এক।
‘এ প্লাস’ ক্যাটাগরিতে থাকা খেলোয়াড়দের মধ্যে সাকিব ঢাকায়, মুশফিক রবিশালে, তামিম চট্টগ্রামে, মাহমুদউল্লাহ খুলনায়, মাশরাফি কুমিল্লায়, সাব্বির রাজশাহীতে এবং সৌম্য রংপুরের হয়ে খেলবে।
এছাড়াও পুরনো পাঁচটি দল দুইজন করে খেলোয়াড় রেখে দেবার সুযোগ পেয়েছে। সে হিসাবে ঢাকা ডাইনামাইটসে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও নাসির হোসেন, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সে ইমরুল কায়েস ও লিটন দাস, চিটাগাং ভাইকিংসে তাসকিন আহমেদ ও এনামুল হক বিজয়, রংপুর রাইডার্সে আরাফাত সানি ও মোহাম্মদ মিথুন এবং বরিশাল বুলস আল-আমিন হোসেন ও তাইজুল ইসলামকে ধরে রেখেছে।
গত আসরে টানা খেলা থাকার কারণে শেষ দিকে মাত্রাতিরিক্ত স্লো হয়ে যায় উইকেট। এতে ব্যহত হয় ক্রিকেটারদের স্বাভাবিক খেলা। তাই নিয়মিত পরিচর্যা করতে টানা খেলা হবে না এবারের আসরে। দুই তিন দিন খেলার পর একদিন করে বিরতি দেওয়া হবে।
তবে আগের মতই প্রত্যেকে প্রত্যেকের সঙ্গে দু’বার করে গ্রুপ ম্যাচে মোকাবেলা করবে। থাকছে গতবারের মতো এবারও এলিমিনেটর পদ্ধতি। দুটি সেমিফাইনাল ও একটি ফাইনালসহ সবমিলিয়ে বিপিএলের খেলা হবে মোট ৪৬টি।
আরটি/আইএইচএস/পিআর