ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

২০৮ রানে অলআউট বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১২:১০ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

শততম ওয়ানডে জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ এতটাই বিবর্ণ! আফগানিস্তানের মত দলের বোলিং শক্তির বিপক্ষে অলআউট হয়ে যেতে হলো মাত্র ২০৮ রানে। তাও পুরো ওভার খেলতে পারলো না তামিম-রিয়াদ-মুশফিকরা। আগের ম্যাচেও অলআউট হয়েছিল। শেষ ওভারের শেষ বলে গিয়ে। আজ অলআউট হলো শেষ ওভারে দ্বিতীয় বলে।

আফগান বোলিংয়ে কী সত্যিই বিষ মাখানো! যে, টানা দুই ম্যাচে এই বোলিংয়ের বিপক্ষে অলআউট হতে হবে! শুধু তাই নয়, প্রথম ম্যাচের চেয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে আরও খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আউট হওয়ার ধরণই ছিল যেন- উইকেটে নেমেছি, যত দ্রুত আউট হয়ে যেতে পারি ততই ভালো। বিশেষ করে তামিম, সৌম্য, মুশফিক, সাব্বির, মাশরাফিদের আউট দেখে এমন মনে হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। আফগান বোলারদের কৃতিত্বের চেয়ে আউট হওয়ার পেছনে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতাই সবচেয়ে বেশি।

মিরপুরের উইকেটে বোলারদের জন্য কী আছে তা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং দেখলেই বোঝা যায়। উইকেট দেখার পর বোলারদের ওপর আস্থা রেখেই সম্ভবত আফগান অধিনায়ক আসগর স্টানিকজাই টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন।

বাংলাদেশের বিপক্ষে শুরু থেকেই আস্থার প্রতিদান দিতে শুরু করেন আফগান বোলাররা। প্রথম থেকেই বাংলাদেশের দুই মারকুটে ওপেনারকে আটকে রাখতে সক্ষম হন সফরকারী বোলাররা। শুধু রান আটকে রাখাই নয়, শুরুতে থেকেই আউটের সম্ভাবনা তৈরী করেছিলেন তারা। যদিও শুরুর ধাক্কাটা সামলাতে পেরেছিলেন তামিম-সৌম্য। তবে বেশিক্ষণ নয়, দ্রুত আউট হয়ে যান তারা দু’জন।

ধীর গতির ইনিংস, অধৈয্য হয়ে গেলেন তামিম ইকবাল। সুতরাং, ১১তম ওভারে এসে মিরওয়াইজ আশরাফকে উড়িয়ে খেলতে যান তামিম ইকবাল। তাতেই উইকেট হারিয়ে বসলো বাংলাদেশ। তামিমের ক্যাচটি তালুবন্দী করলেন দৌলত জাদরান। ৩৬ বলে খেলা ২০ রানের ইনিংসটির অপমৃত্যুই ঘটলো এতে।

১৩তম ওভারে আবারও মিরওয়াইজ আশরাফের বোলিং তোপ। এবার আউট হয়ে গেলেন সৌম্য সরকার। তবে এ ক্ষেত্রে বোলারের কৃতিত্বের চেয়ে ব্যাটসম্যানের ব্যর্থতাই সবচেয়ে বেশি দায়ী। সৌম্য সরকার বলতে গেলে উইকেটটাই বিলিয়ে দিয়ে আসলেন।

মিরওয়াইজ আশরাফের ওই বলটিতে একটু এগিয়ে এসে খেলতে যান সৌম্য। সজোরে হাঁকালেও যে তার সেই শটে আত্মবিশ্বাসের চরম অভাব ছিল তা বোঝা গেছে আউটের ধরণ দেখেই। শট কভারেই হাশমতুল্লাহ শহিদীর হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। আউট হলেন ৩১ বলে ২০ রান করে।

এরপর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ আর মুশফিকুর রহীম মিলে গড়েন ৬১ রানের জুটি। তাদের এই জুটি দেখে সবাই ধরেই নিয়েছিল শুরুর ধাক্কাটা সামলে নিচ্ছেন এ দু’জন। কিন্তু না, রহমত শাহ আর নাভিন-উল হকের বোলিং তোপ সামলাতে পারেননি দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান। ২৫তম ওভারের শেষ বলে নাভিন উল হকের অফ সাইডের বল খেলতে গিয়ে মাহমুদউল্লাহ ব্যাটের নীচের কানায় লাগান এবং সেটি গিয়ে আঘাত হাসে সোজা স্ট্যাম্পে।

এরপর ২৮তম ওভারের প্রথম বল হাঁটু গেঁড়ে বসে স্কয়ার লেগে সুইফ শট খেলতে যান মুশফিক। যেটা আবার তার প্রিয় শটও বটে; কিন্তু প্রিয় শটেই ধরা খেলেন তিনি। নাভিন-উল হকের হাতে গিয়ে জমা পড়ে বলটি। ৫১ বলে ৩৮ রান করে আউট হয়ে গেলেন মুশফিক।

তখনও উইকেটে সাকিব আল হাসান এবং সাব্বির রহমান। সাকিবের ওপর আস্থা ছিল পাহাড় সমান; কিন্তু তিনিও ব্যর্থ। মাত্র ১৭ রান করে লেগ বিফোর আউট হয়ে গেলেন তিনি। যদিও এ ক্ষেত্রে আম্পায়ারের ভুলের শিকার তিনি। টিভি রিপ্লেতে দেখা যাচ্ছিল সাকিবের লেগ বিফোর আউটে ব্যাটে লেগে বল প্যাডে লেগেছিল।

সাকিবের পর ফিরে গেলেন সাব্বির রহমানও। মাত্র ৪ রান করলেন এই মারকুটে ব্যাটসম্যান। গত ম্যাচেও তিনি ছিলেন ব্যর্থ। এই ম্যাচেও আস্থার প্রতিদান দিতে পারলেন না। দলীয় ১৩৮ রানের মাথায় আউট হন সাব্বির। ব্যাটসম্যান হিসেবে এরপর ক্রিজে শুধু মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তার সঙ্গে মাশরাফি।

কঠিন এই বিপদের মুহূর্তে ধরে খেলার প্রয়োজন ছিল; কিন্তু উল্টো শট খেলতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিলেন মাশরাফিও। ফলে ১৪১ রানে আউট নাই হয়ে গেলেন ৭জন ব্যাটসম্যান। মোসাদ্দেকের সঙ্গে জুটি গড়েন তাইজুল ইসলাম। দু’জনের ২৪ রানের জুটিটি ছিল দারুণ কার্যকর।

হঠাৎ রশিদ খানের মায়াবী ঘূর্ণি। তাতে পর পর দুই বলে লেগ বিফোর হয়ে গেলেন তাইজুল ইসলাম এবং তাসকিন আহমেদ। লেগ স্পিনার রশিদ খান তৈরী করেন হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা। তবে রুবেল হোসেন এসে সে সম্ভাবনা উড়িয়ে দেন।

শেষ উইকেট জুটিতে রুবেল হোসেনকে নিয়ে ৪৩ রানের দারুণ এক জুটি গড়ে তোলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের রান গিয়ে থামলো ২০৮ রানে। ৫০তম ওভারের তৃতীয় বলে ২ রান নিতে গিয়ে রানআউট হয়ে যান রুবেল হোসেন। ৪৫ রানে অপরাজিত থাকেন সৈকত।

আফগান বোলারদের মধ্যে রশিদ খান ৩টি, মোহাম্মদ নবি এবং মিরওয়াইজ আশরাফ নেন ২টি করে উইকেট।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর কার্ড
টস : আফগানিস্তান
বাংলাদেশ ২০৮/১০, ৪৯.২ ওভার (তামিম ২০, সৌম্য ২০, মাহমুদুল্লাহ ২৫, মুশফিকুর রহীম ৩৮, সাকিব আল হাসান ১৭, সাব্বির রহমান ৪, মোসাদ্দেক হোসেন ৪৫*, মাশরাফি ২, তাইজুল ১০, তাসকিন ০, রুবেল ১০, অতিরিক্ত ১৭; রশিদ খান ৩/৩৫, মোহাম্মদ নবি ২/১৬, মিরওয়াইজ আশরাফ ২/২৩, রহমত শাহ ১/৩০, নাভিন-উল হক ১/৪৯)।

আইএইচএস/এমএস

আরও পড়ুন