কঠিন বিপদে বাংলাদেশ
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে কিছুটা ব্যাকফুটে বাংলাদেশ। আফগান বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে রানের চাকাই রয়েছে মন্থর। শুধু তাই নয়, নিয়মিত বিরতিতে তিনটি উইকেটও হারিয়ে ফেলেছে বাংলাদেশ। তামিম ইকবাল-সৌম্য সরকারের পর তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মুশফিকুর রহীমও বড় ইনিংস খেলতে ব্যার্থ হলেন, আউট হয়ে গেলেন তিনিও।
ধারাবাহিকতা ধরে রাখলেন পরের ব্যাটসম্যানরাও। সাকিব আল হাসানের ওপর আস্থা ছিল পাহাড় সমান; কিন্তু তিনিও ব্যর্থ। মাত্র ১৭ রান করে লেগ বিফোর আউট হয়ে গেলেন তিনি। যদিও এ ক্ষেত্রে আম্পায়ারের ভুলের শিকার তিনি। টিভি রিপ্লেতে দেখা যাচ্ছিল সাকিবের লেগ বিফোর আউটে ব্যাটে লেগে বল প্যাডে লেগেছিল।
সাকিবের পর ফিরে গেলেন সাব্বির রহমানও। ৪ রানে আউট হলেন সাব্বির। গত ম্যাচেও তিনি ছিলেন ব্যর্থ। এই ম্যাচেও আস্থার প্রতিদান দিতে পারলেন না। ১৩৮ রানে আউট হন সাব্বির। ব্যাটসম্যান হিসেবে এরপর ক্রিজে শুধু মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তার সঙ্গে মাশরাফি।
কঠিন এই বিপদের মুহূর্তে ধরে খেলার প্রয়োজন ছিল কিন্তু উল্টো শট খেলতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিলেন মাশরাফিও। ফলে ১৪১ রানে আউট হয়ে গেলো ৭জন ব্যাটসম্যান।
এ রিপোর্ট লেখার সময় বাংলাদেশের রান ৩৪ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রান। ৫ রানে উইকেটে রয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত এবং তার সঙ্গী তাইজুল ইসলাম রয়েছেন ০ রানে।
মিরপুরের উইকেটে বোলারদের জন্য কী আছে তা দুই দলের দুই অধিনায়কই ভালো বলতে পারবেন। তবে বোলারদের জন্য যে সুবিধাজনক সেটা অন্তত ক্রিকেট ভক্তরা সম্ভবত বুঝে গেছেন। কারণ, বোলারদের ওপর আস্থা রেখেই আফগান অধিনায়ক আসগর স্টানিকজাই টস জিতে নিলেন ব্যাট করার সিদ্ধান্ত।
বোলিং শুরু করে তার ইতিমধ্যে বোলাররা আস্থার প্রতিদান দিতে শুরু করেছেন। অন্তত বাংলাদেশের দুই মারকুটে ওপেনারকে যেভাবে আটকে রাখতে সক্ষম হন সফরকারী বোলাররা তাতে সে ধারণাই প্রমাণিত হচ্ছিল প্রথম থেকে। শুধু তাই নয়, শুরুতে দু’একবার আউটের সম্ভাবনাও তৈরী করেছিলেন বোলাররা এবং যদিও শুরুর ধাক্কা সামলেছিলেন তামিম-সৌম্য। তবে বেশিক্ষণ নয়, দ্রুত আউট হয়ে যান তারা দু’জন।
আফগান বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের মুখে বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটাও হয় খুব ধীর গতিতে। প্রথম ওভারে ৩, পরের ওভার মেডেন, এর পরের ওভারে ১ রান নিতে সক্ষম হন তামিম আর সৌম্য। চতুর্থ ওভারে ৯ রান নিয়ে হাত খোলার চেষ্টা করেন ব্যাটসম্যানরা।
আফগানদের সাঁড়াসি বোলিংয়ের মুখে ১১তম ওভারে এসে উইকেট হারিয়ে বসলো বাংলাদেশ। মিরওয়াইজ আশরাফকে উড়িয়ে খেলতে গিয়ে দৌলত জাদরানের হাতে ক্যাচ দিলেন তামিম ইকবাল। ৩৬ বলে খেলা ২০ রানের ইনিংসটির অপমৃত্যুই ঘটলো এতে।
১৩তম ওভারে আবারও মিরওয়াইজ আশরাফের বোলিং তোপ। এবার আউট হয়ে গেলেন সৌম্য সরকার। তবে এ ক্ষেত্রে বোলারেরি কৃতিত্বের চেয়ে ব্যাটসম্যানের ব্যর্থতাই সবচেয়ে বেশি দায়ী। সৌম্য সরকার বলতে গেলে উইকেটটাই বিলিয়ে দিয়ে আসলেন আফগানদের।
মিরওয়াইজ আশরাফের ওই বলটিতে একটু এগিয়ে এসে খেলতে যান সৌম্য। সজোরে হাঁকালেও যে তার সেই শটে আত্মবিশ্বাসের চরম অভাব ছিল তা বোঝা গেছে আউটের ধরণ দেখেই। শট কভারেই হাশমতুল্লাহ শহিদীর হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ৩১ বলে ২০ রান করেন তিনি।
এরপর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ আর মুশফিকুর রহীম মিলে গড়েন ৬১ রানের জুটি। সবাই ধরেই নিয়েছিল শুরুর ধাক্কাটা সামলে নিচ্ছেন এ দু’জন। কিন্তু না, রহমত শাহ আর নাভিন-উল হকের বোলিং তোপ সামলাতে পারেননি দুই নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান রিয়াদ-মুশফিক। ২৫তম ওভারের শেষ বলে নাভিন উল হকের অফ সাইডের বল খেলতে গিয়ে ব্যাটের নীচের কানায় লাগান এবং সেটি গিয়ে আঘাত হাসে সোজা স্ট্যাম্পে।
এরপর ২৮তম ওভারের প্রথম বল হাঁটু গেঁড়ে বসে স্কয়ার লেগে সুইফ খেলতে যান মুশফিক। যেটা আবার তার প্রিয় শটও বটে; কিন্তু প্রিয় শটেই ধরা খেলেন তিনি। নাভিন-উল হকের হাতে গিয়ে জমা পড়ে বলটি। ৫১ বলে ৩৮ রান করে আউট হয়ে গেলেন তিনি।
আইএইচএস/এবিএস