ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

ভালো শুরুর মিশনে অগ্রণী ভূমিকা নেবেন কে

প্রকাশিত: ০৩:৪৬ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

অধিনায়ক মাশরাফি আর কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের মুখে বার বার শুরু ভালো করার তাগিদ। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সিরিজ শুরুর ঠিক ২৪ ঘণ্টা আগে আনুষ্ঠানিক মিডিয়া সেশনে অন্তত বার তিনেক ভালো শুরুর কথা বলেছেন টাইগার অধিনায়ক এবং কোচ।

হাথুরু কথা শুরুই করেছেন ভালো শুরুর তাগিদ দিয়ে। তার সোজা-সাপ্টা উচ্চারণ, ‘আমার মূল লক্ষ্য আফগানিস্তানের বিপক্ষে সব ম্যাচ জেতা। সে লক্ষ্য পূরণে প্রথম ম্যাচ খুবই ভাইটাল। প্রথম খেলার প্রথম ঘণ্টাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। অধিনায়ক মাশরাফিও ভালো শুরু করতে মুখিয়ে রয়েছেন।

তবে ভালো শুরুর তাগিদটা তার বর্ণনায় এসেছে ভিন্নভাবে। তিনি বলেছেন, ‘বিশ্বকাপে যে জায়গায় শেষ করেছিলাম, ছয় মাস পর আবার ঠিক সেখান থেকেই শুরু করতে চাই।’

বাংলাদেশ অধিনায়ক ও প্রশিক্ষকের কথার সারমর্ম পরিষ্কার, তাদের মূল লক্ষ্য, আফগানিস্তানকে তুলোধুনো করা। সে মিশনের স্বার্থক বাস্তব রূপ দিতে হলে শুরুটা ভালো করা খুব জরুরি। তাই স্বাগতিক টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনায় ঘুরে ফিরে শুরুটাই ভালো করার চিন্তা।

কোচ ও অধিনায়ক যতই ভালো শুরুর তাগিদ অনুভব করুন না কেন, ইতিহাস জানাচ্ছে আফগান বধে শুরু তেমন প্রভাব পড়েনি বাংলাদেশের। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, দুই বছর আগে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলি স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপে আফগানদের সাথে প্রথম দেখায় দুর্দান্ত শুরুর পরও বাংলাদেশ হেরে গিয়েছিল।

শুরুর নিয়ন্ত্রণ ছিল বাংলাদেশের হাতে। নিজেদের ইনিংসের অর্ধেকটা যেতেই আফগানরা চলে যায় ব্যাকফুটে। এক পর্যায়ে ৯০ রানে (২৬.৫ ওভার) ইনিংসের অর্ধেকট শেষ; কিন্তু প্রতিপক্ষকে শুরুতে চাপে ফেলার সুবিধা নিতে পারেনি মুশফিকের দল।

খাদের কিনারায় পড়েও সেখান থেকে এখনকার অধিনায়ক আসগার স্টানিকজাই ( ৯০) এবং সামিউল্লাহ শেরওয়ানির ( ৮১) অসামান্য দৃঢ়তায় শেষ পর্যন্ত আড়াইশোর ঘরে (২৫৪) আফগানিস্তান। শেষ পর্যন্ত ৩২ রানের জয়ে হাসিমুখে মাঠ ছাড়ে আফগানরা।

আর গত বছর অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা ম্যানোকা ওভালে বিশ্বকাপ যাত্রার প্রথম দিনের চিত্র ছিল ভিন্ন। ওই খেলায় মাশরাফি বাহিনীর শুরু তেমন ভাল হয়নি। ১১৯ রানে ফিরে গিয়েছিলেন চার টপ অর্ডার তামিম (১৯), এনামুল (২৯), সৌম্য (২৮) ও মাহমুদউল্লাহ (২৩)।

Mashrafee

সে চাপ কাটে সাকিব ( ৫১ বলে ৬৩) ও মুশফিকের (৫৬ বলে ৭১) আত্ববিশ্বাসী উইলোবাজিতে। পঞ্চম উইকেটে তাদের জুড়ে দেয়া ১১৪টি (১৫.৩ ওভারে) মূল্যবান জুটিতে টিম বাংলাদেশের স্কোর গিয়ে ঠেকে ২৬৭তে।

শুরুতে অধিনায়ক মাশরাফির বল হাতে জ্বলে ওঠা আর মাঝপথে সাকিবের স্পিন ভেলকি- দুয়ে মিলে ১০৫ রানের বিশাল জয়। কাজেই পরিসংখ্যান জানান দিচ্ছে, আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ভাল শুরুর চেয়ে প্রয়োজনের সময় জ্বলে ওঠা এবং ফিনিশিং টাচ দেয়ার ওপরই গড়ে উঠেছে টাইগারদের সাফল্যের ভীত।

সেই সাফল্যের মিশনে অধিনায়ক মাশরাফির স্টিয়ারিং হতে পারেন সাকিব আর মুশফিক। যদিও সাকিব-মুশফিক ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জুটির মালিক নন। সেটা তামিম ইকবাল আর মুশফিকুর রহিমের, ১৭৮ রানের। তারপরও পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য দুই উইলোবাজ সাকিব ও মুশফিক। যাদের জুটিটাও দারুণ।

দলের বিপদ ও প্রয়োজনে এ দুজনারই সবচেয়ে বেশি জ্বলে ওঠার রেকর্ড। এ জুটির হাত ধরে বহুবার বিপদমুক্ত বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত পেয়েছে সাফল্যের নাগাল। আফগানদের সাথে সর্বশেষ সাক্ষাতে সাফল্যের রূপকারও সাকিব-মুশফিক জুটি।

রোববারের ম্যাচেও এই জুটির দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ। তাদের সময় মত জ্বলে ওঠার ওপর মাশরাফি বাহিনীর সম্ভাবনার বড় অংশ নির্ভর করবে। কোচের লক্ষ্য পূরণে শুরু ভাল করার মিশনে আরও দুজন রাখতে পারেন অগ্রনী ভুমিকা। একজন অধিনায়ক মাশরাফি নিজে। অন্যজন ওপেনার তামিম।

গত বিশ্বকাপে এই আফগানিস্তানের সাথে প্রথম ওভারে আঘাত হেনে ভাইটাল ব্রেক থ্রু দিয়েছিলেন নড়াইল এক্সপ্রেস। তার বলেই রিটার্ন ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আফগান ওপেনার জাভেদ আহমাদী। প্রথম ওভারে উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গার পর সেই যে ব্যাকফুটে যায় আফগানিস্তান, আর সামনে আসতে পারেনি।

কাজেই স্টানিকজাই বাহিনীর ব্যাটিং লাইন আপে শুরুতে ভাঙ্গন ধরানোর মিশনে বাংলাদেশ অধিনায়ক সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারেন। আর স্বগতিক দল যদি আগে ব্যাট করে, তাহলে কোচের ইচ্ছে অনুযায়ী প্রথম ঘন্টায় দলকে শক্ত ভীত গড়ে দেয়ার গুরু দায়িত্ব বর্তাবে তামিম ইকবালের ওপর।

টেস্ট আর ওয়ানডে দুই ফরম্যাটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি রান তার। নিজের দিনে যে কোন বোলিং শক্তিকে দুমড়ে-মুচড়ে ফেলার পর্যাপ্ত সামর্থ্য অাছে চট্টলার এ ড্যাশিং ওপেনারের। গত বিশ্বকাপে পারেননি। কে জানে রোববারের দিনটি হয়ে যেতে পারে তামিমের।

শনিবার নেটে অনেকটা সময় সিরিয়াস ব্যাট অনুশীলন বলে দিল কিছু একটা করতে মুখিয়ে তামিম। দেখা যাক, কোচের ইচ্ছা অনুযায়ী ভালো শুরুর মিশনে সামনে থেকে কে নেতৃত্ব দেন?

এআরবি/আইএইচএস/এমএস

আরও পড়ুন