ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

ভাগ্য খুলবে মোশাররফ রুবেলের!

প্রকাশিত: ০৮:২৫ পিএম, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬

কার কখন কিভাবে কিসের মধ্য দিয়ে ভাগ্য খুলে যায় কে জানে? ‘সাবেকের’ তকমা গায়ে লাগিয়ে ফেলা মোশাররফ রুবেলের ভাগ্য কি আবার খুলবে? তিন বছর পর আবার জাতীয় দলে ফিরবেন এ বাঁ-হাতি স্পিনার?

মনে হচ্ছে ভাগ্য তার অনুকূলে। এখন পর্যন্ত যা ঘটেছে, তার সবটাই কিশোরগঞ্জের প্রায় ৩৫ বছর বয়সী এ ক্রিকেটারের পক্ষে। তাই যদি না হবে, তাহলে কন্ডিশনিং ক্যাম্পের বাইরে থেকেও কেনই বা আফগানিস্তান ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের জন্য ২০ জনের দলে জায়গা পাবেন তিনি?

ছিলেন এইচপি ট্রেনিং প্রোগ্রামে। সেখান থেকে জাতীয় দলের অনুশীলন ক্যাম্পে ডাক পাওয়াটাও নাটকীয়! আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে এইচপি ট্রেনিং শেষে রুবেল ঘুরতে গিয়েছিলেন কলকাতায়। সেখানেই এক সাংবাদিক বন্ধুর মাধ্যমে খবর পান, নির্বাচকরা তাকে হন্নে হয়ে খুঁজছেন।

খুঁজছেন মানে, তাকে ক্যাম্পে যোগ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এ যে মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি! কলকাতা থেকে যোগাযোগ মাধ্যম ভাইভারে নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন ও মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর সঙ্গে কথা হয় তার।

সেখানেই মিললো সুখবর, প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল ও আরেক নির্বাচক হাবিবুল বাশার তাকে বললেন, ‘শোন, যত শিগগির সম্ভব জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দাও।’

নির্বাচকদের সঙ্গে কথা বলা শেষ করেই ছুটলেন বিমান অফিসে। কিন্তু হায়! কোনো এয়ারলাইন্সেই ৩০ আগস্ট পর্যন্ত টিকিট নেই। কী আর করা? শেষ পর্যন্ত সড়ক পথে বাসেই বেনাপোল হয়ে যশোর পর্যন্ত এসে বিমানে সোজা রাজধানী ঢাকায়।

২৯ আগস্ট সকালেই প্র্যাকটিসে যোগ দিলেন। এখানেই শেষ নয়। ৩ সেপ্টেম্বর প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচেও মাঠে নামার সুযোগ পেয়ে গেলেন। নেমেই স্পিন ঘূণিতে বাজিমাত। ১০ ওভারে ৩৯ রানে সাকিব, মুমিনুল, সাব্বির, নাসির ও শফিউলের উইকেট ঝুলিতে পুরে নিলেন।

মঙ্গলবার দ্বিতীয় ও শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে ৭ ওভার বল করে উইকেট না পেলেও ব্যাট হাতে নিজেকে মেলে ধরলেন। প্র্যাকটিস ম্যাচে ভালো করার পুরস্কার- আফগানিস্তান ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের জন্য সাজানো ২০ জনের দলে জায়গা পেয়ে গেলেন।

কিন্তু প্রশ্ন হলো, কী এমন হলো যে, এইচপি ট্রেনিং প্রোগ্রাম থেকে সোজা তাকে জাতীয় দলে ডাকা? ভেতরের খবর, এইচপির খণ্ডকালীন স্পিন পরামর্শক ভারতের ভেঙ্কটাপতি রাজুর কারণেই আবার ডাক পেলেন তিনি।

আগস্টে সপ্তাহ খানেকের জন্য এইচপির স্পিনারদের বিশেষ ট্রেনিং করাতে ঢাকা এসেছিলেন ভারতের ওই সাবেক বাঁ-হাতি স্পিনার। নেটে অন্য সব বাঁ-হাতি স্পিনারদের সাথে মোশাররফ রুবেলকে দেখে মনে ধরে যায় ভেঙ্কটাপতি রাজুর।

জানা গেছে, তিনিই যাবার সময় জাতীয় দলের হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের কাছে মোশাররফ রুবেলের ব্যাপারে সুপারিশ করে যান। বলেন, এই লম্বা হাই আর্ম অ্যাকশনের বাঁ-হাতি স্পিনারকে পরখ করে দেখতে পারেন।

ভারতের হয়ে খেলা বাঁ-হাতি স্পিনার রাজু যার বিষয়ে উৎসাহী, সে ভালো না হয়েই যায় না- এ বোধ থেকেই হেড কোচ চন্ডিকা মোশাররফ রুবেলকে ডাকার কথা বলেন নির্বাচকদের। এদিকে নির্বাচকরাও একজন বিকল্প স্পিনারের সন্ধানে ছিলেন।

আরাফাত সানির অ্যাকশন প্রশ্নবিদ্ধ। সাকিবের সঙ্গে একজন ভালো মানের বাঁ-হাতি স্পিনার দরকার। সে অনুভব থেকেই সোহরাওয়ার্দী শুভকে কন্ডিশনিং ক্যাম্পে ডাকা হয়েছিল; কিন্তু শুভ সে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। নেটে মোটেই ভালো বল করেননি তিনি।

শুভর পারফরমেন্সে যারপরনাই হতাশ কোচ ও নির্বাচকরা। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন সপ্তাহ খানেক আগে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপে পরিষ্কার হতাশা ব্যক্ত করেছিলেন। জানা গেছে, নির্বাচকরা যখন সোহরাওয়ার্দী শুভর পারফরমেন্সে চরম হতাশ, ঠিক তখন ভেঙ্কটাপতি রাজু মোশাররফ রুবেলের নাম সুপারিশ করলে নির্বাচকরা শেষ মুহূর্তে তাকে ক্যাম্পে ডাক দেন।

২৮ আগস্ট ক্যাম্পে যোগ দেয়া রুবেল তিন দিন ট্রেনিং করেই প্র্যাকটিস ম্যাচে স্পিন জাদুতে মাঠ মাতান। এদিকে নাটকীয়ভাবে ২০ জনের দলে ডাক পাওয়া মোশাররফ রুবেলও মনে মনে আশার জাল বুনছেন।

২০১৩ সালে শেষবার জাতীয় দলে সুযোগ পেলেও ম্যাচ খেলা হয়নি তার। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে শেষবার মাঠে নামা হয়েছিল ২০০৮ সালের ১৪ মার্চ শেরে বাংলায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপে মোশাররফ রুবেল বলেন, ‘আমি সামর্থ্যের শেষ বিন্দু দিয়ে চেষ্টা করছি। নির্বাচকরা যোগ্য মনে করলে অবশ্যই জায়গা পাবো।’

এআরবি/আইএইচএস

আরও পড়ুন