লা লিগার জমজমাট মৌসুম শুরু আজ
গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ অলিম্পিক হতে পারে, তবে এই পৃথিবীতে জনপ্রিয়তার তুলনায় ফুটবলের ধারে-কাছেও কোন খেলা নেই সম্ভবত। ফুটবল বিশ্বকাপ বাদ দিলেও, ইউরোপিয়ান বিভিন্ন লিগের দিকে চোখ রাখলেই বোঝা যায়, কতটা দর্শকপ্রিয় এবং কতটা সমৃদ্ধ এই লিগগুলো। ফুটবলের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং সবচেয়ে সমৃদ্ধ লিগ স্প্যানি লা লিগা। স্পেনের ঘরোয়া এই লিগের জমজমাট নতুন মওসুম শুরু হচ্ছে আজ। প্রথম দিনই মাঠে নামছে বার্সেলোনা।
বর্তমান সময়ের বিশ্বসেরা দুই ফুটবলার লিওনেল মেসি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর উপস্থিতির কারণেই নয়, ক্লাব ফুটবলের যে ঐতিহ্য, তাতে রিয়াল মাদ্রিদ এবং বার্সেলোনার মত দুটি বিশ্বসেরা ক্লাবের কারণেই মূলতঃ স্প্যানিশ লা লিগার এত জনপ্রিয়তা, এত কদর। তাতে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছেন শুধু মেসি এবং রোনালদো।
এল ক্ল্যাসিকোর মত দুই বিশ্বসেরা ক্লাবের লড়াই বিশ্বের আর কোথাও হয় না। যে লড়াইটি দেখার জন্য পৃথিবীর অন্য সব টিভি চ্যানেল অফ করে দিতে বাধ্য হন ফুটবল প্রেমীরা। যতই লা লিগাকে কেউ অপছন্দ করুক, কিন্তু খেলা দেখতে বসে এল ক্ল্যাসিকো দেখে না, এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। এরপর মৌসুমজুড়ে দুর্দান্ত সব খেলা উপহার দেয়ার পাশাপাশি অসাধারণ লড়াই, মন্ত্রমুগ্ধের মত আটকে রাখে ফুটবল দর্শকদের।
যদিও গত কয়েক বছর লা লিগাকে অনেকেই একঘেঁয়ে হিসেবে উল্লেখ করতেও ছাড়ছেন না। কারণ, লিগটির লড়াই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে বার্সেলোনা এবং রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যে। যদিও সর্বশেষ কয়েকবছর একাধিপত্য বিস্তার করেছে বার্সেলোনা। কিন্তু, আশার সংবাদ হলো, এই দুই ক্লাবের আধিপত্যে কম বাজেটের দল নিয়েও ভাগ বসিয়ে দিয়েছে মাদ্রিদের আরেকটি দল অ্যাটলেটিকো।
কোচ দিয়েগো সিমিওনের অধীনে এই ক্লাবটি শিরোপাও ছিনিয়ে নিয়েছে বার্সা-রিয়ালের কাছ থেকে। গত মৌসুমে শিরোপা জিততে না পারলেও লিগের একেবারের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত লড়াইটা জমিয়ে রেখেছিল ত্রি-মুখি হারে। এটা একটা সুস্থ প্রতিযোগিতার ইঙ্গিবাহী। এবারও কী তেমন হবে!
মেসি এবং রোনালদো আগের মতই রয়েছেন বার্সেলোনা এবং রিয়াল মাদ্রিদে। যদিও এবারের দল বদলের বাজারে বার্সা হারিয়েছে তাদের দীর্ঘদিনের রক্ষণসৈনিক আলভেজকে। বিপরীতে বেশ কয়েকজন প্রতিভাবান ফুটবলারকে স্বাক্ষর করিয়েছেন লুইস এনরিকে। নিয়ে এসেছেন অ্যাটলেটিকো তারকা আর্দা তুরানকে। বিপরীতে রিয়াল মাদ্রিদ আগের সৈনিকদের নিয়েই নামছে লড়াইয়ের মাঠে। সঙ্গে কোচ জিনেদিন জিদান। প্রত্যাশা করা হচ্ছে, জিদানের অধীনেই হয়তো এবার বিপ্লব ঘটাবে রিয়াল মাদ্রিদ।
দিয়েগো সিমিওনের অধীনে অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ দু’একজন খেলোয়াড়কে হারালেও সেই আন্তোনিও গ্রিজম্যান কিন্তু রয়েই গেছেন দলটিতে। সুতরাং, অন্য সবার জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়েই দেখা দিবে তারা। আছে ভ্যালেন্সিয়া, সেভিয়ার মত দলগুলোও। যারা নিজেদেরকে যে কোন সময় জায়ান্ট কিলার হিসেবে আবির্ভূত করে দিতে পারে রিয়াল-বার্সা-অ্যাটলেটিকোর সামনে।
দেখা যাক, এবার এতসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে মৌসুম শেষে শিরোপাটা কে জিতে? জমজমাজ লিগ শেষে এই প্রশ্নের উত্তর মিলবে আগামীবছর মে মাসে।
আইএইচএস/পিআর