ভারতের বিপক্ষে জয় পেল না পকিস্তান
ক্রিকেট বিশ্বকাপ মানেই উত্তেজনা, সেই উত্তেজনা কয়েক গুণ বৃদ্ধি পায় যখন বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয় চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত এবং পাকিস্তান। বিশ্বকাপ ছাড়া বিভিন্ন টুর্ণামেন্টে জয় পেলেও বিশ্বকাপে আজ পর্যন্ত ভারত বধের স্বাদ পায়নি পাকিস্তান। ২০১১ বিশ্বকাপ পর্যন্ত এই দুই দল মুখোমুখি হয় মোট ৫ বার এর মধ্যে প্রতিবারই জয় পায় ভারত।
১৯৯২সালের ৪ মার্চ বিশ্বকাপে প্রথম মুখোমুখি হয় এশিয়ার দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী। প্রথমে ব্যাটিং-এ নেমে অজয় জাদেজার ৪৬, শচিন টেন্ডুল্কারের অপরাজিত ৫৪ এবং কপিল দেবের ৩৪ বলে ৩৫ রানের উপর ভর করে ৭ উইকেট এর বিনিময়ে ২১৬ রান করে ইনিংস শেষ করে ভারত। মুস্তাক আহমেদ উইকেট পান ৩ টি এবং আকিব জাভেদ পান ২ টি।
২১৭ রানের টার্গেট নিয়ে ব্যাটিং এ নামলে ৪৮.১ ওভারে সবক’টি উইকেটের বিনিময়ে ১৭৩ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করেন আমির সোহেল, তিনি ৯৫ বলে ৬২ রান করেন এই ওপেনার। জাভেদ মিয়ানদাদ করেন ৪০ রান। কপিল দেব, মনোজ প্রভাকর, জাভাগাল শ্রীনাথ ২ টি করে উইকেট পান। ভারত ম্যাচ জিতে ৪৩ রানে।
১৯৯৬ সালের ৯ মার্চ দ্বিতীয় বার বেঙ্গালুরুতে মুখোমুখি হয় এই দুই দল। এই ম্যাচ ভারত জয় পায় ৩৯ রানে। আগে ব্যাটিং করে সিদ্ধুর ১১৫ বলে ৯৩ রান অজয় জাদেজার ২৫ বলে ৪৫ রানের ঝড়ো ইনিংসে ২৮৭ রানের টার্গেট দেয় তারা। ওয়াকার ইউনুস এবং মুস্তাক আহমেদ নেন ২টি করে উইকেট।
জবাবে দুর্দান্ত ব্যাটিং দিয়ে ইনিংস শুরু করে পাকিস্তান। আমির সোহেলের ৪৬ বলে ৫৫ এবং সাঈদ আনোয়ারের ৩২ বলে ৪৮ রানের ঝড়ো ইনিংস এ নিজেদের প্রতিশোধের ইচ্ছে জানিয়ে দেয় তারা কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি। ভিঙ্কেটেশ প্রসাদ এবং অনিল কুম্বলে গুড়িয়ে দেয় পাকিস্তান দূর্গ, দুই জনই ৩ টি করে উইকেট নেন। ভারত জয় পায় ৩৯ রানে।
১৯৯৯ সালের ৮ জুন ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্রাফোর্ডে তৃতীয় বারের মত মুখোমুখি হয় এই দুই দল। প্রথমে ব্যাটিং করে টেন্ডুলকারের ৬৫ বলে ৪৫ রাহুল দ্রাবিড়ের ৬১ এবং আজহারউদ্দীনের ৫৯ রানের ইনিংসের উপর ভর করে ৬ উইকেটে ২২৭ রান করে তারা। ওয়াসিম আকরাম এবং আযহার মাহমুদ ২ টি করে উইকেট নেন।
২২৮ রানের টার্গেটে ব্যাটিংএ নেমে প্রথম ধাক্কা খায় পাকিস্তান যখন মাত্র ৬ রান করে শহিদ আফ্রিদি বিদায় নেন শ্রীনাথের বলে। এরপর ইঞ্জামাম উল হক এর ৪১ এবং মইন খানের ৩৪ রান ছাড়া আর কোন ব্যাটসম্যানকে ক্রিজে টিকতে দেননি ভারতীয় বোলাররা। ৪৫.৩ ওভারে ১৮০ রানে থামে পাকিস্তান ইনিংসের। ভিঙ্কেটেশ প্রসাদ তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেন মাত্র ২৭ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন তিনি। শ্রীনাথ উইকেট পান ৩ টি। ভারত জয় পায় ৪৭ রানে।
২০০৩ সালের ১ মার্চ চতুর্থ বারেব মত মুখোমুকি হয় ভারত ও পাকিস্তান। প্রথমে ব্যাটিং করে সাঈদ আনোয়ার ১২৬ বলে ১০১ ইউনুস খানের ৩২ রানের ঝড়ো ইনিংসে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ২৭৩ রানে করে। জহির খান এবং আশিস নেহরা ২ টি করে উইকেট নেন।
ভারত টেন্ডুলকারের ৭২ বলে ৯৮ রাহুল দ্রাবিড়ের ৪৪, যুবরাজ সিং এর ৫০ রানের উপর ভর করে ৬ উইকেটের সহজ জয় পায় তারা। ওয়াকার ইউনুস ২ টি, শোয়েব আখতার ও শহিদ আফ্রিদি নেন ১ টি করে উইকেট।
শেষ বার তাদের দেখা হয় ২০১১ সালের ৩০ মার্চ। পাঞ্জাব ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শেবাগের ২৫ বলে ৩৮ এবং টেন্ডুলকারের ১১৫ বলে ৮৫ রানের উপর ভর করে ২৬০ তোলে। ওয়াহাব রিয়াজ নেন ৫ উইকেট, সাঈদ আজমল পান ২ টি।
জবাবে ব্যাটিং এ নেমে মোহাম্মাদ হাফিজের ৪৩ রান ও মিসবাহ-উল-হকের ৫৬ রানের ইনিংসে জয়ের আশা দেখতে পায় পাকিস্তান কিন্তু লোয়ার মিডল অর্ডারের ছন্দপতনে আর জয় পায়নি পাকিস্তান। ২৩১ রানে থামে তাদের ইনিংস। ভারত জয় পায় ২৯ রানের ব্যবধানে। জহির খান, আশিস নেহরা, মুনাফ পাটেল, হরভজন সিং, যুবরাজ সিং প্রত্যেকে ২ টি করে উইকেট নেন।
২০১৫ বিশ্বকাপে ১৪ই ফেব্রুয়ারী এই দুই দলের ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে দুই দলের বিশ্বকাপ যাত্রা। এখন দেখার বিষয় ভারত তার শতভাগ জয়ের রেকর্ড ধরে রাখবে, না পাকিস্তান ব্যবধান কমিয়ে আনবে।
এমআর