দুই তরুণের এই প্রথম
গত এক দশকের মধ্যে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের এবারের আসরেই প্রথম খেলেছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রায় সব তারকা। দারুণ পারফরম্যান্সও করেছেন তারা। এমনকি জাতীয় দলের তারকাদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবারের লিগে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন তরুণরাও। সে তালিকায় প্রথমেই আসবে দুই ব্যাটসম্যান আব্দুল মজিদ ও আল-আমিনের নাম। লিগের তৃতীয় ও চতুর্থ সেরা রান সংগ্রহকারী এ দুই ব্যাটসম্যান। ফলশ্রুতিতে ডাক পেয়েছেন বিসিবির হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) ক্যাম্পে। ডাক পেয়েই দারুণ খুশি এ দুই নবীন।
আগামীকাল রোববার থেকে শুরু হচ্ছে এইচপির ক্যাম্প। ৯ সপ্তাহের ক্যাম্পে অংশ নিতে ইতোমধ্যেই শনিবার বিকেলে মিরপুরের একাডেমি ভবনে স্ট্রেন্থ এন্ড কন্ডিশনিং কোচ কোরে বুকিংয়ের কাছে রিপোর্ট করেছেন আল-আমিন ও মজিদ। প্রথমবারের মত এ ক্যাম্পে ডাক পাওয়া উভয় তরুণই ছিলেন উচ্ছ্বসিত। যদিও এর আগে অনূর্ধ্ব-২৩ দলের একটি বিশেষ এইচপি ক্যাম্পে ছিলেন আল-আমিন। জাগোনিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে তারা দু’জনই জানান নিজেদের অনুভূতির কথা।
বাংলাদেশের বয়সভিত্তিক দলের আবিষ্কার আল-আমিন। খেলেছেন প্রায় সকল লেভেলেই। অনূর্ধ্ব-১৩, ১৫, ১৭ ও ১৯ দলের হয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপও খেলেছেন তিনি। এবার সে গণ্ডি ছাড়িয়ে যেতে চান তিনি। সে লক্ষ্যেই এইচপি ক্যাম্পে নামবেন এ তরুণ, ‘অবশ্যই অনেক ভালো লাগছে, প্রিমিয়ার লিগে ভালো পারফরম্যান্স করার পর এইচপিতে সুযোগ পেয়েছি। চেষ্টা করবো এখান থেকে সর্বোচ্চটা শিখে নেওয়ার। এখানে শুধু বোলিং-ব্যাটিং নয় ফিটনেস নিয়েও কাজ করা হবে। আশা করছি ভালো একটা ক্যাম্প হবে।’
প্রথমবারের মত ঢাকা লিগে খেলেছেন আল-আমিন। আর তাতেই আলো ছড়িয়েছেন পুরনো ঢাকার এ ছেলে। লিগের ভিক্টোরিয়ার হয়ে ১৬ ম্যাচেই ১টি সেঞ্চুরি ও ৭টি হাফ সেঞ্চুরিসহ মোট ৬৭২ রান তুলে সেরা চতুর্থ রান সংগ্রহকারী তিনি। শুধু ব্যাটিং নয়, বল হাতেও পেয়েছেন ১৬টি উইকেট। দারুণ অলরাউন্ড নৈপুণ্য ছড়ানো এ তরুণে মুগ্ধ অনেকেই দেখছেন আগামীতে জাতীয় দলের জার্সিতে। তবে সেখানে উল্টো আল-আমিন। দারুণ সাবধানি এ নবীন জাতীয় দল নয় ভাবছেন এইচপি ক্যাম্প নিয়েই।
‘আমি জাতীয় দল বা ‘এ’ দল এসব নিয়ে ভাবছি না। হ্যাঁ এখানে ভালো করতে পারলে সামনে ‘এ’ দলের খেলা আছে, সুযোগ পেয়ে যেতে পারি। তবে আমার আপাতত একটাই লক্ষ্য, এইচপি ক্যাম্প। এখান থেকে নিজের দুর্বলতাগুলো কাজ করবো, চেষ্টা করবো সেগুলো ঠিক করে নিতে।’
আল-আমিনের মত প্রথমবারের মত এ ক্যাম্পে ডাক পেয়েছেন আব্দুল মজিদও। বড় পরিসরের ক্রিকেট অঙ্গনে একেবারেই এ নবীনের তাই উচ্ছ্বাসটা একটু বেশিই, ‘এটা আসলে বলে বুঝাতে পারবো না। দারুণ খুশি আমি। প্রিমিয়ার লিগে ভালো খেলায় সুযোগ পেয়েছি। প্রথম লক্ষ্য থাকবে নিজের কাজগুলো ঠিকভাবে করার।’
আল-আমিনের মত এবারের ঢাকা লিগে ভিক্টোরিয়ার হয়েই খেলেছেন মজিদ। শুরুতে সেভাবে নজর না কাড়লেও ধারাবাহিকভাবে পারফরম্যান্স করে সবার নজরে আসেন এ তরুণ। লিগে ১৬ ম্যাচে ৭০৬ রান করেছেন তিনি। এর মধ্যে ৫টি হাফ সেঞ্চুরির পাশাপাশি ২টি দুর্দান্ত সেঞ্চুরিও রয়েছে তার। এইচপি ক্যাম্পে এবার লক্ষ্য নিজের শক্তিকে আরও বাড়িয়ে নেওয়া।
‘এখানে আমার যে সব স্ট্রেন্থ আছে তাকে আর শক্তিশালী করা। এছাড়া এখানে অনেক ভালো ভালো কোচ থাকবে তাদের কাছ থেকে নতুন কিছু শিখে নেওয়া। পাশাপাশি নিজের যে দুর্বলতা আছে তা শুধরে নেওয়া। এছাড়াও কখন কি করতে হবে তার ধারণা পাবো এখান থেকে।’
তবে এখনই জাতীয় দলের কথা ভাবছেন না মজিদও। তার মূল লক্ষ্য পারফরম্যান্সে। ভালো পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে আগামীতে সুযোগ মিলবে এমনটাই বিশ্বাস তার।
‘আমি জাতীয় দল বা অন্যকিছু নিয়ে ভাবছি না, আশাবাদী হবার কোন কারণ নেই। আমার মূল লক্ষ্য থাকবে পারফরম্যান্স করে যাওয়া। আমি সেটাই চেষ্টা করে যাব। এরপর যদি নির্বাচকরা মনে করে আমি খেলার যোগ্য তাহলে হবে।’
আরটি/আইএইচএস/আরআইপি