ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

জাতীয় দলে ফিরছেন নাফীস-রকিবুল-শুভ!

প্রকাশিত: ১২:৩৫ পিএম, ০৩ জুলাই ২০১৬

সোহরাওয়ার্দী শুভ, শাহরিয়ার নাফীস ও রকিবুল হাসান খুশি হতেই পারেন। তাদের পরিজন ও ভক্তদের মন ঈদের খুশির আগেই আনন্দে ভরে উঠতে পারে। কেননা তিনজনের সামনে আবারো জাতীয় দলে ফেরার হাতছানি। নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্ট তিনজনের কথাই গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর কণ্ঠে এমনই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।   

রোববার জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপে প্রধান নির্বাচক পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, এমনি এমনি নয়। আমরা ভেবে চিন্তে ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ নিয়েই শাহরিয়ার নাফীস, রকিবুল হাসান ও সোহরাওয়ার্দী শুভকে কন্ডিশনিং ক্যাম্পে ডেকেছি। নিকট ভবিষ্যতে ভিন্ন ফরম্যাটে এ তিনজনকে আবার জাতীয় দলে নেয়া যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।  
 
কেউ কেউ ভ্রুকুটি করতে পারেন, “সে কি, তারাতো বেশ কিছু দিন ধরে জাতীয় দলের বাইরে। তিনজনের গায়েই ‘সাবেকের’ তকমা লেগে গেছে। বয়সও হয়েছে কিছুটা। তাদের নিয়ে আবার টানা হ্যাচড়া কেন? তবে কি আবার পিছন ফিরে তাকানো?”

তাদের জন্য বলা, শাহরিয়ার নাফীস (৩১ বছর ৬৩ দিন), রকিবুল হাসান (২৮ বছর ২৬৯ দিন) ও সোহরাওয়ার্দী শুভ (২৭  বছর ২২৫ দিন) কারোই তেমন বেশি বয়স হয়নি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাদের চেয়ে ৮/১০ বছরের বড় ক্রিকেটারও খেলেছেন। খেলছেনও।

কিন্তু যে কোন কারণেই হোক তিনজনই কিছুদিন ধরেই জাতীয় দলের বাইরে। ২০০৫ সালের ১২ সেপ্টেম্বর কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার সঙ্গে টেস্ট অভিষেক হওয়া বাঁ-হাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার নাফীস শেষ টেস্ট খেলেছেন ২০১৩ সালের এপ্রিলে হারারেতে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে। ওয়ানডেতেও একই অবস্থা। ২০০৫ সালের ২১ জুন নটিংহ্যামে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অভিষেক। ২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার পর গত সাড়ে চার বছরে আর সুযোগ পাননি।
 
রকিবুলও পাঁচ বছরের বেশি সময় জাতীয় দলের বাইরে। ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর সেঞ্চুরিয়ানে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে টেস্ট অভিষেক আর তিন বছর পর ২০১১ সালের অক্টোবরে ঢাকার শেরেবাংলায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শেষ টেস্ট ম্যাচ।

একইভাবে ২০০৮ সালের ৯ মার্চ চট্টগ্রামে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ওয়ানডে অভিষেকের পর ২০১১ সালের ১১ এপ্রিল অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে শেষ ওয়ানডেতে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠে নামা। সেই ২০১১ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে শেরেবাংলায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে একটি মাত্র টেস্ট খেলা সোহরাওয়ার্দী শুভ ২০১০ সালের ২ মার্চ ওয়ানডে অভিষেকের পর ২০১১ সালের ১৮ অক্টোবর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে শেষ ওয়ানডে খেলার পর বাদ।

এত দিন পর তাদের আবার কন্ডিশনিং ক্যাম্পে ডাকা নিয়ে কিছু প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন ক্রিকেট পাড়ায়- ‘আচ্ছা শাহরিয়ার নাফীস, রকিবুল হাসান ও সোহরাওয়ার্দী শুভ বেশ কিছুদিন পর আবার ক্যাম্পে ডাক পেলেন কি কারণে?’  

‘প্রিমিয়ার লিগে ভালো খেলেছেন, তার পুরষ্কার হিসেবে। না তাদের ফিটনেস লেভেল জানতে ও পরখ করতে? নাকি তাদের নিয়ে নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টের আদৌ কোনো লক্ষ্য-পরিকল্পনা আছে? যদি থেকে থাকে সেটা কি?’  

রোববার বিকেলে জাগো নিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপে এসব প্রশ্নের বিষদ ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু। তার সোজা-সাপটা উচ্চারণ, ‘অবশ্যই পরিকল্পনা আছে। অনেক ভেবে চিন্তেই তাদের ডাকা হয়েছে। তিনজনকে নিয়ে আছে ভিন্ন ভিন্ন ভাবনা। এর মধ্যে শাহরিয়ার নাফীস ও রকিবুলকে আপাতত সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভাবা হচ্ছে না। তাদের টেস্টে ব্যাকআপ ব্যাটসম্যান হিসেবে চিন্তা করা হচ্ছে।’

বলতে পারেন, রকিবুল-শাহরিয়ার নাফীসের অভিজ্ঞতা ও ফর্ম দুটোকে বিবেচনায় এনে তাদের টেস্ট পাইপলাইনে রাখা যায় কিনা, সেটাই ভাবা হচ্ছে। আমাদের চিন্তটা এমন, টেস্টে আমাদের ব্যাটিংয়ে যে বহর আছে, তার মধ্যে কারো ইনজুরি হতে পারে। কেউ একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইনজুরিতে মাঠের বাইরে ছিটকে পড়তে পারেন। তাদের ব্যাকআপ হিসেবে শাহরিয়ার নাফীস ও রকিবুলকে বিবেচনায় আনা হয়েছে। দুজনই পরিণত ও অভিজ্ঞ পারফরমার। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেলেছে।

শাহরিয়ার নাফীস এবারের প্রিমিয়ার লিগে মোটামুটি খেললে গত জাতীয় লিগ ও বিসিএলে বেশ ভালো খেলেছে। আর রকিবুলকে এবারের লিগে বেশ আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে। তাই তারা আমাদের নজরে এসেছে। খুব সহসা হয়ত সুযোগ পাবে না। তবে অদূর ভবিষ্যতে এদের দুজনকে নিয়েই আমাদের চিন্তা আছে।’  

প্রধান নির্বাচক জানালেন, সোহরাওয়ার্দী শুভকে সীমিত ওভারে কথা ভেবেই ডাকা হয়েছে। এ সম্পর্কে মিনহাজুলের ব্যাখ্যা, ‘টেস্ট এবং ওয়ানডে দুই ফরম্যাটেই সাকিব আমাদের এক নম্বর বাঁহাতি স্পিনার। তার সঙ্গে উভয় ফরম্যাটে অন্তত একজন করে ব্যাকআপ বা দ্বিতীয় বাঁহাতি স্পিনার দরকার। সে  হিসেবে সোহরাওয়ার্দী শুভকে ওয়ানডেতে বিবেচনায় এনেছি।’

‘কেন আরাফাত সানিতো আছে? মাঝে সেই ছিল সাকিবের সঙ্গী। তার বিকল্প হিসেবেতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সাকলাইন সজীবকে উড়িয়ে নেয়া হয়েছিল ভারতে। তারা দুজন থাকতে আবার সোহরাওয়ার্দী শুভকে ডাকা কেন?’

প্রধান নির্বাচকের ব্যাখ্যা, ‘এই কারণে যে, আরাফাত সানির বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আমরা শুধু তার একার ওপর নির্ভর করে থাকতে পারিনা। টেস্ট ও সীমিত ওভারের ফরম্যাটে সাকিবের একজন করে সঙ্গী প্রয়োজন।’

‘টেষ্টে তাইজুল অবধারিত সাকিবের সঙ্গী। কিন্তু ওয়ানডেতে এখন সাকিবের সঙ্গী নেই। বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আরাফাত সানিকে খেলানোয় একটা ঝুঁকি থেকেই যায়। তারও আগে তাকে পরীক্ষা দিয়ে পাশ করতে হবে।’

‘সেক্ষেত্রে কেউ কেউ হয়ত বলবেন সাকলাইন সজীবের কথা। হ্যা আমিও মানছি সাকিবের পর সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সাকলাইন সজীব বাকি সব বাঁহাতি স্পিনারদের চেয়ে বেটার। কিন্তু ফিল্ডিংটা তার বড় ঘাটতির জায়গা। এছাড়া ব্যাটিংও নেই। সেই কারণেই আমরা সোহরাওয়ার্দী শুভর দিকে ঝুকেছি।’

‘শুভর বোলিংটা সাকলাইন সজীবের চেয়ে একটু পিছনে। কিন্তু ফিল্ডিং আছে। ব্যাটসম্যান হিসেবে শুভ বেশ ভাল। সব মিলে আমরা তাকেই চিন্তা করছি। প্রধান নির্বাচকের কথা শুনে মনে হচ্ছে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজেই হয়তো দলে অন্তর্ভুক্ত হবেন সোহরাওয়ার্দী শুভ।’

এআরবি/আরটি/এএইচ/পিআর