ইতালিকে হারিয়ে সেমিতে জার্মানি
ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনালের হাইভোল্টেজ ম্যাচে জয় পেয়েছে জার্মানি। টাইব্রেকার নামক ‘ভাগ্য পরীক্ষায়’ ৬-৫ ব্যবধানে প্রথম বারের মত ইতালিকে হারিয়ে শেষ চারে পৌঁছে যায় জোয়াকিম লোর শিষ্যরা। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় ১-১ গোলে সমতায় থাকে।
ফ্রান্সের বোর্দোয় বাংলাদেশ সময় রাত একটায় ইতিহাস বদলানোর মিশন নিয়ে ইতালির বিপক্ষে মাঠে নামে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানি। ম্যাচের শুরু থেকেই ইতালির রক্ষণ শিবিরে চাপ প্রয়োগ করে খেলতে থাকে মুলার-ওজিলরা। ম্যাচের ২৭ মিনিটে মুলারের ক্রসে শোয়াইনস্টাইগারের হেড জালে জড়ালেও ফাউলের জন্য তা বাতিল করে দেওয়া হয়।
৪২মিনিটে মারিও গোমেজের হেড লক্ষ্য ভ্রষ্ট হলেও হতাশায় ডুবে জার্মানি শিবির। এর পরের মিনিটেই ডি বক্সে দুর্বল শট নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন মুলার। দুই মিনিট পর সুযোগ হাতছাড়া করে ইতালিও। জাক্কেরিনি নিজে শট না নিয়ে স্তেফাও স্তুরারোকে বল বাড়ান; নয়ারকে পরাস্ত করতে পারেননি ইউভেন্তুসের এই মিডফিল্ডার। ফলে গোল শূন্য অবস্থায় বিরতিতে যায় দুই দল।
বিরতি থেকে ফিরে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে দুই দল। ম্যাচের ৫৪ মিনিটে গোমেজের কাছ থেকে বল পেয়ে গোল করার সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যান মুলার। প্রথমার্ধের মতো ভুল করেননি, বুলেট শটে জাল খুঁজে নিচ্ছিলেন তিনি। অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে বলের জালে যাওয়া দেখছিলেন জানলুইজি বুফ্ন। কিন্তু ছুটে এসে দারুণ স্লাইডে কর্নারের বিনিময়ে সে যাত্রা দলকে বাঁচান ফ্লোরেন্সি।
তবে ৬৫ মিনিটে এগিয়ে যায় জার্মানি। গোমেজের ডিফেন্স চেরা পাস ডি বক্সে খুঁজে পায় হেক্টরকে। তার শট ইতালির একজনের গায়ে লাগলে বল পেয়ে যান ওজিল, সুযোগ হাতছাড়া করেননি আর্সেনালের এই মিডফিল্ডার। চার মিনিট পর ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন গোমেজ। অফ সাইড ফাঁদ ভেঙে বুক দিয়ে বল নিচে নামালেও সতর্ক বুফ্নকে ফাঁকি দিতে পারেননি।
ম্যাচের ৭৭ মিনিটে সমতায় ফেরে ইতালি। ডি বক্সে বোয়াটেংয়ের হাতে বল লাগলে পেনাল্টি পায় ইতালি। বোনুচ্চি কোন দিকে শট নেবেন অনুমান করতে পেরেছিলেন নয়ার। সেই দিকে ডাইভও দিয়েছিলেন কিন্তু গতির সঙ্গে পেরে উঠেননি। বাকি সময় আর গোল না হলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। তাতেও দুই দল একাধিক আক্রমণে গেলেও কাঙ্খিত গোলের দেখা পায়নি। ফলে, ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
টাইব্রেকারে প্রথম ৫টি করে নেওয়া শটে দুদলের তিন জন করে বল জালে পাঠাতে ব্যর্থ হন। ইতালির হয়ে গোল করেন লরেন্সো ইনসিনিয়ে ও আন্দ্রেয়া বারজাগলি। ব্যর্থ হন সিমোনে জাজা, গ্রাজিয়ানো পেল্লে ও লিওনার্দো বোনুচ্চি। জাজা নেমেছিলেন শুধু টাইব্রেকারের জন্যই। এর আগে নির্ধারিত সময়ে পেনাল্টি থেকে গোল করে সমতা এনেছিলেন বোনুচ্চি।
জার্মানির হয়ে টাইব্রেকারে জালে বল পাঠান টনি ক্রুস ও ইউলিয়ান ড্রাক্সলার। ব্যর্থ হন টমাস মুলার, মেসুত ওজিল ও বাস্তিয়ান শোয়াইনস্টাইগার। শোয়াইনস্টাইগার গোল পেলে তখনই সেমি-ফাইনালে পৌঁছে যেত জার্মানি।
এরপর পরের তিন শটে গোল করেন ইতালির এমানুয়েল জাক্কেরিনি, মার্কো পারলো ও মাত্তিয়া দে শিলিও। কিন্তু মাত্তেও দারমেইনের শট ফিরিয়ে দেন নয়ার। আর টানা চার শটে গোল করেন মাটস হুমেলস, জশুয়া কিমিচ, জেরোম বোয়াটেং ও ইয়োনাস হেক্টর। হেক্টরের শট অল্পের জন্য ফেরাতে পারেননি জানলুইজি বুফ্ফন। বল তাকে ফাঁকি দিয়ে জালে জড়ালে উল্লাসে মাতে জার্মানরা।
উল্লেখ্য, ঢাকায় সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের স্মরণে এই ম্যাচে কালো ব্যাজ পরে খেলে ইতালির খেলোয়াড়েরা।
এমআর/আরআইপি