আলোচিত পাঁচ বোলার
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন জাতীয় দলের সব তারকা ক্রিকেটার। সবার ভিড়ে বল হাতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছেন জাতীয় দলের তারকারাই। সেখান থেকেই তুলে ধরা হলো আলোচিত পাঁচ বোলারকে।
মাশরাফি বিন মর্তুজা
মাশরাফি বিন মর্তুজাকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের স্বল্প দৈর্ঘের ম্যাচের অধিনায়ক তিনি। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে স্বপ্নের মতো ২০১৫ সাল পার করে বাংলাদেশ। নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনা না করলেও অনেকেই বলেছিলেন আগের সেই ধার নেই তার বলে। নিন্দুকদের এক হাত নিয়ে ছেড়েছেন মাশরাফি। যথারীতি মুখে নয়, বল হাতে। এবারের লিগে প্রথম পর্ব শেষে বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে সেরা বোলার ছিলেন তিনিই। সুপার লিগে উঠলে হয়তো থাকতেন শীর্ষেই। তবে প্রথম পর্বের ১১ ম্যাচে নেওয়া ২২ উইকেট দিয়েই বাংলাদেশিদের মধ্যে সেরা পাঁচে নিজেদের অবস্থান ধরে রেখেছেন। তবে শুধু বল হাতেই নয় ব্যাট হাতেও নজর কাড়েন দেশ সেরা এ পেসার। প্রিমিয়ার লিগের অতীতের ইতিহাস ভেঙে দ্রুততম (৫০ বলে) সেঞ্চুরির মালিক এখন মাশরাফি। শুধু তাই নয়, ওই ইনিংসে ১১টি ছক্কা মেরেও রেকর্ড গড়েন তিনি।
তাসকিন আহমেদ
ভারতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে এক রাশ হতাশা নিয়ে দেশে ফিরেছিলেন পেসার তাসকিন আহমেদ। তবে বোলিং পারফরম্যান্সের জন্য নয়। হঠাৎ করেই বোলিং অ্যাকশন নিষিদ্ধ হওয়ার কারণে। দেশে ফিরে কিছুদিন বোলিং অ্যাকশন নিয়ে কাজ করার পর প্রিমিয়ার লিগে নাম লেখান ২১ বছর বয়সী এ তারকা। আবাহনীর হয়ে খেলতে নেমে শুরুতে ভালো করতে না পারলেও মাঝপথ থেকেই জ্বলে ওঠেন তিনি। দুর্দান্ত বোলিং করে প্রতিপক্ষকে একের পর এক ম্যাচে করছেন কোণঠাসা। প্রয়োজনীয় সময়ে ব্রেক থ্রু এনে দিয়ে হয়ে ওঠেন অধিনায়কের নির্ভরতার প্রতীক। ১৫ ম্যাচে ২৬ উইকেট নিয়ে লিগের তৃতীয় সেরা বোলার এ পেসার।
সাকিব আল হাসান
প্রায় ছয় বছর যাবত বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডারের স্থান দখল করে রয়েছেন সাকিব আল হাসান। মাঝে দু’একবার দুইয়ে নামলেও আবার শীর্ষে ফিরেছেন দাপটের সঙ্গেই। গত বছরের শেষ দিক থেকেই ফর্মটা ভালো যাচ্ছিল না তার; কিন্তু তিনি যে ‘নম্বর ওয়ান’ তাই ফিরে এসেছেন দাপটের সাথেই। এবারের লিগে শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকা আবাহনীতে সাকিব আল হাসান আসার পর দুর্বার হয়ে ওঠে দলটি। টানা আট ম্যাচের কোনোটিতেই হারতে হয়নি তাদের। লিগে খেলেছেন ৮ ম্যাচ। আর তাতে কী বল, কী ব্যাট- দুর্দান্ত পারফর্মার ছিলেন তিনি। ৮ ম্যাচেই তুলে নিয়েছেন ১৮ উইকেট। ব্যাট হাতেও ছিলেন দুর্দান্ত। করেছেন ২টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ২১০ রান। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানের বিপক্ষে করেছেন এবারের লিগের সবচেয়ে দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি। মাত্র ২০ বলে অর্ধশত তুলে রেকর্ড জয়ের স্বাদ দিয়েছেন দলকে।
কামরুল ইসলাম রাব্বি
২০০৯ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়েই শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিপক্ষের সিরিজ দিয়ে আলোয় আসেন কামরুল ইসলাম রাব্বি। এরপর ২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটও খেলেছেন তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফরমার। দুই বছর আগেও প্রিমিয়ার লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হয়েছিলেন এ নবীন। জাতীয় দলের ক্যাম্পেও একাধিকবার ডাক পেয়েছেন। যদিও ক্যাপ মাথায় তোলার সৌভাগ্য হয়নি এখনও। তবে নির্বাচকদের দৃষ্টি কেড়ে নিতে নিয়মিত পারফরম্যান্স করে যাচ্ছেন এ নবীন। ১৬ ম্যাচে ২৭ উইকেট নিয়ে এবারের লিগের দ্বিতীয় সেরা উইকেট শিকারি তিনি। তবে ৩ উইকেট বেশি নিয়ে শীর্ষে রয়েছেন তারই সতীর্থ শ্রীলঙ্কান চতুরঙ্গ ডি সিলভা।
সাকলাইন সজীব
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তাসকিন আর আরাফাত সানি নিষিদ্ধ হওয়ার কারণে বাংলাদেশ জাতীয় দলে নেয়া হয় সাকলাইন সজীবকে; কিন্তু মাঠে নেমে আশানুরূপ ফল করতে না পারায় সমালোচনার তোপে পড়তে হয় তাকে। যদিও ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে নিজের প্রিয় সংস্করণে ফিরেই জাত চেনান এ স্পিনার। ১৬ ম্যাচে ২৬ উইকেট নিয়ে এবারের লিগের তৃতীয় সেরা বোলার তিনিই। শুধু তাই নয়, এবারের লিগের সেরা বোলিং ফিগারের মালিকও তিনি। প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে একাই সাত উইকেট তুলে নিয়েছিলেন এ বাঁ-হাতি। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের দ্বিতীয় সেরা বোলিং সাফল্য এটি। এর আগে ২০০৩ সালে ঢাকায় জিম্বাবুয়ে ‘এ’ দলের বিপক্ষে ১৭ রান খরচায় ৭ উইকেট নিয়েছিলেন আব্দুর রাজ্জাক।
জাগো চ্যাম্পিয়নের পঞ্চম সংখ্যা পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে
আইএইচএস/বিএ