মেসি ম্যাজিক
শুধুমাত্র তাকে দিয়েই সম্ভব। অসম্ভবকে সম্ভব করার কারিগর তো তিনিই। রে হাডসন তো এমনি এমনি বলেননি- `He`s a miracle from God`। এই তো সেদিনও ইনজুরির জন্য ছিলেন মাঠের বাইরে। কোপায় তাঁকে কোন রাউন্ড থেকে পাওয়া যাবে সেটা নিয়েই ছিল সংশয়। প্রথম ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চিলির বিপক্ষে স্কোয়াডেই ছিলেন না। তবুও আর্জেন্টিনা জিতল ২-০ গোলে।
দ্বিতীয় ম্যাচেও পানামার বিপক্ষে প্রথম একাদশে ছিলেন না। ৭ মিনিটেই ওতামেন্দির গোলে এগিয়ে যাওয়া আর্জেন্টিনা এরপর গোলের জন্য হাপিত্যেশ করতে শুরু করলে টাটা মার্টিনো ম্যাচের ৬১ মিনিটে নামিয়ে দিলেন মেসিকে। পুরো সোলজার ফিল্ড দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানাল তাকে।
দুই দিন আগেই ম্যারাডোনা বলেছিলেন মেসি নাকি নেতা হিসেবে যোগ্য নন। আগের দিনই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো বলেছেন, তিনি গত ২০ বছরের সেরা খেলোয়াড়। ম্যারাডোনার খোঁচা আর রোনালদোর কথার জবাব মুখ নয় বরং নিজের জাদুকরি বাঁ-পায়েই দিবেন এমনটাই ঠিক করে রেখেছিলেন হয়তো।
কি অদ্ভূত! মেসি মাঠে নামার আগে আর্জেন্টিনা খেলছিল ঘুম পাড়ানি ফুটবল, মেসি নামতেই জাদুমন্ত্রের মতো বদলে গেল সব। মাঠে নামার ৬ মিনিটের মধ্যেই গোল! পানামার এক ডিফেন্ডারের শট হিগুয়াইনের হাতে লেগে মেসির পায়ে পড়লে ফিনিশিং দিতে মোটেও ভুল করেননি লিটল ম্যাজিশিয়ান।
১০ মিনিট পর আবার মেসির গোল, এবার চিরচেনা ঢংয়ে তার ট্রেডমার্ক ফ্রি-কিকে। প্রায় ২৫ মিটার দূর থেকে তার আসল সৌন্দর্য মাখা বাঁকানো শট ফেরানোর সাধ্য ছিল না কারো। ঠিক ১০ মিনিট পর করে ফেললেন হ্যাটট্রিকও।
এবার পানামার ডিফেন্সের মেরুদন্ড ভেঙ্গে গোলরক্ষককে বোকা বানালেন সহজ সরল কিন্তু ক্ষুরধার এক প্লেসিংয়ে। মাঠে নামার মাত্র ২৬ মিনিটের মধ্যেই হ্যাটট্রিক! তাও ইনজুরি থেকে ফিরে এসে। এরপর আগুয়েরোও গোল করলে ৫-০’র ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লা আলবিসেলেস্তেরা।
কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বলিভিয়ার বিপক্ষেও প্রথম একাদশে মেসিকে রাখেননি মার্টিনো। সেঞ্চুরি লিংক পার্কের ৮০ হাজার দর্শকের গগনবিদারী মেসি, মেসি চিৎকারে বাধ্য হয়েই দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে তাকে মাঠে নামান টাটা। এবার গোল করতে না পারলেও আরেকটা অভূতপূর্ব কাণ্ড ঘটিয়েছেন মেসি।
বলিভিয়ার গোলরক্ষকের দুই পা এবং দুই হাতের ছোট্ট একটু ফাঁকা জায়গা দিয়ে বলটা বের করে নিয়ে গেছেন মায়াবী বিভ্রমে। ওই এক মুভমেন্টেই গ্যালারির দর্শকদের পয়সা উসুল করে দিয়েছেন লিও। আর্জেন্টিনাও ম্যাচটা জিতেছে ৩-০ গোলে। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে চলে গেছে কোয়ার্টার ফাইনালে।
কোয়ার্টারের প্রতিপক্ষ ভেনেজুয়েলা। সেখানে শুরু থেকেই খেলবেন মেসি। এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্ট মাত্র ৭৫ মিনিট খেলেই যে জাদু দেখিয়েছেন, কে জানে পুরো ৯০ মিনিট ফিট থেকে খেলতে পারলে আরো কি কি দেখাবেন! তার ছন্দে থাকা মানেই যে আর্জেন্টিনার জয়ের নিশ্চয়তা!
জাগো চ্যাম্পিয়নের চতুর্থ সংখ্যা পুরোটা পড়তে ক্লিক করুণ এই লিংকে...
আইএইচএস/পিআর