সম্ভাবনাময় তরুণ ক্রিকেটারের তালিকায় মুস্তাফিজ
সাম্প্রতিক সময়ে অনেক তরুণ ক্রিকেটার তাদের দক্ষতা ও মেধা দিয়ে জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিভাবান এই তরুণদের উত্থানে বিস্মিত ক্রিকেটবিশ্ব। এমন পাঁচ সম্ভাবনাময় তরুণ ক্রিকেটারের তালিকায় জায়গা পেয়েছেন বাংলাদেশের বিস্ময় বালক মুস্তাফিজ।
মুস্তাফিজুর রহমান
সুপারহিরোদের নাকি তৈরি করা যায় না, তারা জন্মান। স্বাভাবিক নিয়ম তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। অন্য দশজনের জন্য যেটা সারা জীবনের সাধনা, সেই সফলতা নাকি এমনিতেই লুটিয়ে পড়ে তাদের পায়ে। তারা সাফল্যের পেছনে ছোটেন না বরং সাফল্যই হন্যে হয়ে ছোটে তাদের পিছু।
‘পরিশ্রম আর সাধনায় আপনি হয়তো নায়ক হতে পারবেন, কিন্তু মহানায়ক সৃষ্টি হয় নিয়তির ইশারায়।’ পুরোনো এই প্রবাদকে বাস্তবে রূপ দিতেই যেন আবির্ভাব তার। মাত্র দু’দিন আগেও যার পরিচয় ছিল কেবল সম্ভাবনাময় একজন বোলার হিসেবে। হঠাত করেই তাকে নিয়ে মাতাল গোটা ক্রিকেট বিশ্ব। তিনি আর কেউ নন বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মুস্তাফিজ।
টি-টোয়েন্টি দিয়ে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপিয়েছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। সেদিন অফ কার্টার, অন কার্টার- যেন কার্টারের সঙ্গে স্লোয়ার, ইয়র্কার দিয়ে আফ্রিদি-হাফিজদের নাকানি-চুবানি খাইয়ে দিয়েছিলেন তিনি।টি-টোয়েন্টির অনেকটা রূপকথার মতই ওয়ানডে অভিষেক হয়েছিল মুস্তাফিজ নামক বাংলাদেশের ক্রিকেট নক্ষত্রের। ভারতীয় শিবিরকে স্তব্ধ করে দিয়ে মুস্তাফিজ একাই তুলে নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট। পরের ম্যাচে আরও একধাপ এগিয়ে। ছয় উইকেট নিয়ে প্রথমবারের মত ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বাদ এনে দেন বাংলাদেশকে। টেস্ট অভিষেকেও দারুণ উজ্জ্বল মুস্তাফিজ। চার উইকেট পেলেও মূল্যবান সময়ে ম্যাচের মোড় ঘুড়িয়ে দিয়ে হয়েছিলেন ম্যাচ সেরা।
ভারতের অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শেষ তিন ম্যাচে অংশ নিয়ে তুলে নেন ৯ উইকেট। এরপর প্রথম বারের মত আইপিএলে অংশ নিয়ে সকলের প্রশংসার পাত্রে পরিণত হন মুস্তাফিজ। প্রতিপক্ষে ব্যাটসম্যানদের ধরাশয়ী করে দিতে তার জুড়ি নেই। রানের চাকা অচল করে দিতেও বেশ পটু। তার বলে ভূপাতিত হচ্ছেন বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানরা। প্রথমবার অংশ নিয়েই ট্রফি জয়ের সাথে আইপিএলে সেরা উদীয়মান খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হন।
কাগিসো রাবাদা
পেস বোলারের জন্য বরাবরই বিখ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকা। স্টেইন-মরকেলদের তালিকায় এবার যোগ হয়েছেন কাগিসো রাবাদা। মাত্র ২০ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকেই তুলে নেন হ্যাটট্রিক। আর অনুরধ-১৯ বিশ্বকাপে অনবদ্ধ পারফর্মেন্স করে দলে এনে দেন বিশ্বকাপের শিরোপা। প্রোটিয়াদের বর্তমান দলে মূল বোলারের ভূমিকা পালন করছেন রাবাদা।
বেন স্টোকস
ইংল্যান্ড জাতীয় দল থেকে ফ্লিনটপের অবসরের পর অনেক দিন অল রাউন্ডারের অভাবে ভুগছিল ইংলিশ দল। বেন স্টোকস জাতীয় দলে যোগ দিয়ে সে অভাব পূরণ করেছেন। ২০১৪ সালে জাতীয় দলে যোগ দিয়ে পরের বছরই নিজেকে মেলে ধরেন স্টোকস। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তুলে নেন ডাবল শতক। আর ব্যাটিংয়ের সঙ্গে দিন দিন বোলিংটাকেও ভালোই রপ্ত করেছেন।
অজিঙ্কা রাহানে
রঞ্জি ত্রফিতে পারফর্ম করে ভারত জাতীয় দলে জায়গা পাওয়া রাহানেকেই কোহলি পরবর্তী অধিনায়ক ধরা হয়। টেস্টের অভিষেকেই তুলে নেন নিজের প্রথম শতক। কঠিন অবস্থায় স্বচ্ছন্দে ব্যাটিং তার সবচেয়ে আশ্চর্যজনক দক্ষতা। এটা যে তার সহজাত দক্ষতা টা নয়, নিজের দক্ষতা, কৌশল এবং ধৈর্য মামলা বিন্যাস টেস্ট ক্রিকেটে দুর্দান্ত করে তুলেছে। টেস্টর সঙ্গেএবার তাকে ভারতের ওয়ানডে দলে নিয়মিত সদস্য হতে হবে।
অ্যাডাম জাম্পা
শেন ওয়ার্নের জায়গা নিজের করে নিতেই অস্ট্রেলিয়া দলে নাম লিখিয়েছেন অ্যাডাম জাম্পা। এই লেগ স্পিনারের অ্যাকশন, ধরণ প্রায় সবই ওয়ার্নের মত। ভারতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে জায়গা পেয়েই নিজের জাত চিনিয়েছেন। এছাড়া আইপিএলে পুনের হয়ে প্রথম ম্যাচের ৬ উইকেট তুলে নেন। তাই অস্ট্রেলিয়া দলে জাম্পার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ আশা করা যায়।
এমআর/পিআর