আগামী শুক্রবার মোহাম্মদ আলির দাফন
মোহাম্মদ আলি একজন খাঁটি মুসলিম। সে মতেই শেষকৃত্য করা হবে কিংবদন্তী এই ক্রীড়াবীদের। তবে বিশ্বব্যাপি কোটি ভক্ত-সমর্থকের কথা চিন্তা করে একটু সময় নেয়া হচ্ছে। আগামী শুক্রবার তার নিজের বাড়ি কেন্টাকির লুইজভিলে আয়োজন করা হয়েছে শেষকৃত্যের। মুসলিম রীতি মেনে হবে জানাজা। এরপর মুসলিম রীতিতেই করা হবে দাফন।
শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানে অভ্যাগতদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখবেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন। কথা বলার সুযোগ পাবেন বিশ্ববিখ্যাত কমেডিয়ান বিলি ক্রিস্টাল এবং ক্রীড়া সাংবাদিক ব্রায়ান্ট গাম্বেল। জানাজা এবং সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে লুইজভিলের কেভহিল গোরস্থানে দাফন করা হবে তাকে। এই লুইজভিলেই ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন মোহাম্মদ আলি।
তার আগের দিনই বৃহস্পতিবার পরিবারের পক্ষ থেকে বিশেষ প্রার্থণার আয়োজন করা হবে। যেটা হবে একেবারেই প্রাইভেট। পরিবার এবং আত্মীয়-স্বজনরাই সেখানে উপস্থিত থাকবেন।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার শেষ রাতের দিকে অ্যারিজোনার ফোনিক্স এরিনা হাসপাতালে ৭৪ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনবারের বিশ্ব হ্যাভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন, দ্য গ্রেটেস্ট অ্যাথলেট অন দ্য আর্থ মোহাম্মদ আলি।
মোহাম্মদ আলির শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারবেন সারাবিশ্বের সব ধর্ম-বর্নের মানুষ। তার পারিবারিক মুখপাত্র বব গানেল বলেছেন, ‘তিনি ছিলেন সারা বিশ্বেরই নাগরিক। সুতরাং, তাকে শেষ বিদায় জানানোর জন্য সারা বিশ্বের যে কোন দেশের, যে কোন ধর্মের, যে কোন বর্ণের মানুষ উপস্থিত হতে পারবেন।
বৃহস্পতিবার বিশেষ দোয়া এবং প্রার্থনার পর শুক্রবারও শেষকৃত্যের আসল অনুষ্ঠান শুরুর আগে পারিবারিকভাবে আরও একটি বিশেষ দোয়া ও মুনাজাতের আয়োজন করা হবে। এরপর লুইজভিলের মূল রাস্তা ধরে মোহাম্মদ আলির মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হবে গোসল ও কাপনের কাপড় পরানোর জন্য। আরও একটি অ্যাভেনিউ ধরা হবে মৃতদেহ নেয়ার জন্য, যেটি তার নামে নামকরণ করা হয়েছে। ওই রাস্তাটিতেই ১৯৬০ সালে অলিম্পিক স্বর্ণ পদক জয়ের পর মোহাম্মদ আলির নামে মিছিল হয়েছিল।
শেষকৃত্যের মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টায়, কেএফসি ইয়াম সেন্টারে। যেখানে প্রায় ২০ হাজার মানুষ একসঙ্গে বসতে পারে। মোহাম্মদ আলির পরিবার জানিয়েছে, সব আনুষ্ঠানিকতা সারার পর ধর্মীয় অনুশাসন মেনে একজন ইমামের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হবে জানাজা।
বব গানেল বলেন, মোহাম্মদ আলি হলে গণমানুষের চ্যাম্পিয়ন। এ কারণে, তার বিদায় পর্বতেও সেটা ফুটে উঠবে। সব ধরনের মানুষ, সব ধর্মের এবং বর্ণের মানুষ এখানে একত্রিত হতে পারবে। শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে কেএফসি ইয়াম সেন্টারের ওয়েবসাইট।
মিস্টার গানেল আরও জানিয়েছেন, শুক্রবার রাত স্থানীয় সময় ৯.১০-এ মারা যান মোহাম্মদ আলি। শেষ মুহূর্তে তাকে বিদায় জানানোর সুযোগ পেয়েছেন তার স্ত্রী, ছেলে-মেয়েরা। এরপরই সারা বিশ্ব থেকে শোক জানানো হচ্ছে। তবে তার নিজের শহরে সবচেয়ে বেশি। পতাকা অর্ধনমিত করে রাখা হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ মোহাম্মদ আলি সেন্টারে আসছে এবং ফুল দিয়ে শোক প্রকাশ করে যাচ্ছে।
আইএইচএস/এবিএস