ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

সালাউদ্দিন-চুন্নু-হালিমের স্মৃতিতে ৪৪ বছর আগের আফগানবধ

রফিকুল ইসলাম | প্রকাশিত: ০৮:৫০ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ফুটবলে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের হিসাব-নিকাশ অনেক পুরোনো। বৈশ্বিক ফুটবলে অভিষেকের বছর ছয়েক পরই আফগানদের সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিল বাংলাদেশের।

১৯৭৯ সালে এশিয়ান কাপ ফুটবলের বাছাই পর্বে ২ নম্বর গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গে ছিল আফগানিস্তান ও কাতার। এই গ্রুপের খেলা হয়েছিল ঢাকায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে বাংলাদেশ উঠেছিল এশিয়ান কাপে। চার ম্যাচে ৭টি গোল করেছিল বাংলাদেশ। যার তিনটি করেছিলেন মো. আবদুল হালিম, দুটি কাজী মো. সালাউদ্দিন এবং একটি করে গোল ছিল মো. মহসীন ও আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নুর।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচের প্রথমটি ড্র হয়েছিল ২-২ গোলে। দুটি গোলই করেছিলেন মো. আবদুল হালিম। ওই ড্রয়ের পরের ম্যাচে কাতারের বিপক্ষে ১-১।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

তাই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য হয়ে উঠেছিল বাঁচামরার। জিতলে এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্ব, হারলে বিদায়-এমন সমীকরণ নিয়ে মাঠে নেমে দুর্দান্ত ৩-২ গোলের এক জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। এর পর গত ৪৪ বছরে আর আফগানিস্তানকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ।

আগামীকাল (রোববার) বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় আফগানদের বিপক্ষে ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। এটি হবে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের নবম লড়াই।

বিজ্ঞাপন

এর আগের ৮ সাক্ষাতে একটি ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ, দুটি জিতেছে আফগানিস্তান। ড্র হয়েছে পাঁচ ম্যাচ। ৮ ম্যাচের তিনটি হয়েছে ঢাকায়। ঘরের মাঠে বাংলাদেশ কোনো ম্যাচ হারেনি আফগানিস্তানের কাছে। একটি জিতেছে, দুটি ড্র করেছে।

আফগানিস্তানের কাছে বাংলাদেশ প্রথম হারে ২০১৫ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে। বাংলাদেশকে ৪-০ গোলে হারিয়ে প্রথম জয় উৎসব করেছিল আফগানরা। দ্বিতীয় হারটি ছিল ২০১৯ সালে দুশানবেতে বিশ্বকাপের বাছাইয়ে। আফগানিস্তান জিতেছিল ১-০ গোলে। দুই দলের শেষ ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়েছে ২০২১ সালে কাতারে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে।

৪৪ বছর আগে আফগানিস্তানকে হারানো দুর্দান্ত জয়ের সেই ম্যাচের স্মৃতিচারণ করে কাজী মো. সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘অনেক দিন আগের কথা। ম্যাচটির বর্ণনা পুরোপুরি দিতে পারবো না। কারণ, বেশি কিছু মনে নেই। তবে গোল করেছিলাম সেটা মনে আছে। ওই ম্যাচটি জেতাতেই আমরা এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে উঠেছিলাম। কে কখন গোল করেছিলাম সেটাই মনে করতে পারছি না। শুধু জয়ের কথাটিই মনে আছে।’

বিজ্ঞাপন

ম্যাচের প্রথম গোল করেছিলেন আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু। দ্বিতীয়টি করেছিলেন মো. আবদুল হালিম। ২-২ গোলে এগিয়ে চলছিল ম্যাচ। শেষের দিকে জয়সূচক গোলটি করেছিলেন কাজী মো. সালাউদ্দিন। কেমন ছিল ম্যাচটি? আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নুর কাছে জানতে চাইলে তিনিও অনেক কিছু মনে না থাকার কথা বললেন।

‘অনেক দিন আগের ঘটনা। প্রায় ৪৫ বছর। তেমন কিছু মনে পড়ছে না। ম্যাচটি আমরা ৩-২ গোলে জিতেছিলাম। একটি গোল করেছিলাম আমি। সবচেয়ে বড় কথা ওই ম্যাচটি আমাদের জন্য স্মরণীয় ছিল। সেটিই ছিল আমাদের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক টুর্নামেন্টে প্রথম জয়। আগের জয় ছিল ফ্রেন্ডলি ম্যাচে। প্রথম দুই ম্যাচ ড্রয়ের পর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচটি জেতা ছাড়া কোনো বিলল্প ছিল না। জিতলে এশিয়ান কাপে খেলার টিকিট। ম্যাচ আমরা জিতে অনেক আনন্দ করেছিলাম। আমাদের জন্য গ্রেট ম্যাচ ছিল’-বলছিলেন আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু।

ওই টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলেছিলেন মো. আবদুল হালিম। তার জোড়া গোলেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২-২ এ ড্র করে বাছাই পর্ব শুরু করেছিল বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় ও নিজের গোলের স্মৃতি বর্ণনা করে মো. আবদুল হালিম বলেন, ‘গোলটির কথা আমার ভালোই মনে আছে। পোস্টে ছিলেন সান্টু ভাই (শহিদুর রহমান সান্টু)। তার হাতে বল ছিল। আমি বললাম সান্টু ভাই জোরে লংবল মারেন। আমি যাচ্ছি। দিলাম দৌড়। আমি অনেক রান করতে পারতাম। কারণ, আমি স্প্রিন্টার ছিলাম। ২০০ মিটারে খেলেছি জেলা পর্যায়ে। সান্টু ভাই যখন লম্বা করে বলটি মারলেন তখন আমি ছিল আফগানিস্তানের ডিবক্সের কাছে। বলটি ধরেই আমি ব্যাকভলিতে গোল করি।’

বিজ্ঞাপন

আফগানিস্তানকে হারানোর পর বাংলাদেশ গ্রুপের শেষ ম্যাচটি খেলেছিল কাতারের বিপক্ষে। ম্যাচটি বাংলাদেশ হেরেছিল ৩-১ গোলে। বাংলাদেশের গোলটি করেছিলেন কাজী মো. সালাউদ্দিন। ওই হারের পরও বাংলাদেশ এক জয় ও দুই ড্রয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে উঠেছিল।

আরআই/এমএমআর/জেআইএম

বিজ্ঞাপন