হিজাব পরে নারী বিশ্বকাপে ইতিহাস গড়লেন মরক্কোর বেনজিনা
নারী বিশ্বকাপ ফুটবলে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে আজ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামে আফ্রিকান মুসলিম দেশ মরক্কো। ম্যাচের শুরুর একাদশেই রাখা হয় ডিফেন্ডার নউহাইলা বেনজিনাকে। যিনি মাঠে নামেন মাথায় হিজাব বেধে এবং পুরো শরীর ঢাকা পোশাক পরে।
শুধু বিশ্বকাপই নয়, নারী ফুটবলের সিনিয়রদের কোনো বৈশ্বিক কিংবা মহাদেশীয় টুর্নামেন্টে এই প্রথম কোনো মুসলিম ফুটবলার মাথায় হিজাব পরে মাঠে নামার ইতিহাস গড়লেন।
এক সময় নারী ফুটবলে কোনো ফুটবলার মাথায় হিজাব বেধে খেলতে নামার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিলো ফিফা। তাদের যুক্তি ছিল, স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা ইস্যুতে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিলো। তবে, ২০১৪ সালেই এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে বাধ্য হয়েছিলো ফিফা। অ্যাক্টিভিস্ট, অ্যাথলেট, বিভিন্ন দেশের সরকার এবং ফুটবল কর্মকর্থাদের আইনি লড়াইয়ের পর এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়।
২০১৪ সালে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার প্রায় ৯ বছর পর এই প্রথম কোনো মুসলিম নারী ফুটবলার মাথায় হিজাব বেধে এবং পুরো শরীর পোশাকে ঢেকে ফুটবল খেলতে নামলেন।
মুসলিম উইমেন ইন স্পোর্টস নেটওয়ার্ক-এর কো ফাউন্ডার আসমাহ হেলাল বলেন, ‘আমার কোনো সন্দেহ নেই যে আরও অনেক অনেক মুসলিম নারী এবং বালিকারা বেনজিনাকে দেখে উৎসাহী হবে। শুধুমাত্র একজন খেলোয়াড় হিসেবে উৎসাহী হবে তা নয়, বরং সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী থেকে শুরু করে, কোচ এবং অন্য খেলাগুলোয়ও এভাবে মেয়েদের আগমণ ঘটবে বলে আমার বিশ্বাস।’
বেনজিনা মরক্কোর নারী ফুটবল লিগে নিয়মিত খেলে থাকেন। তিনি খেলেন অ্যাসোসিয়েশন অব ফোর্সেস আর্মড রয়্যাল ক্লাবের হয়ে। মরক্কোর শীর্ষ নারী ফুটবল লিগে তার ক্লাব বর্তমানে টানা অষ্টমবার চ্যাম্পিয়ন।
চলতি নারী বিশ্বকাপে মেলবোর্নে জার্মানির সঙ্গে প্রথম ম্যাচে ৬-০ গোলে হেরে গিয়েছিলো মরক্কো। ওই ম্যাচে খেলেননি বেনজিনা। অবশেষে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর আজ দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে অ্যাডিলেইডে প্রথম একাদশেই খেলার সুযোগ পান তিনি। এই ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে মরক্কান মেয়েরা।
এই ম্যাচে ডিফেন্সিভ লাইনে খুব দারুণ ভুমিকা রাখেন বেনজিনা। দক্ষিণ কোরিয়ার একটি কাউন্টার অ্যাটাক ঠেকাতে গিয়ে ম্যাচের শেষের দিকে একটি হলুদ কার্ডও দেখতে হয়েছে তাকে।
প্রথম আরব এবং উত্তর আফ্রিকান দেশ হিসেবে নারী বিশ্বকাপে খেলছে মরক্কো। মরক্কো অধিনায়ক গিজলানে চেবাক বলেন, ‘আমরা গর্বিত প্রথম আরব দেশ, যারা নারী বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়েছি।’
আইএইচএস/