মোহামেডানকে হারিয়ে ফাইনালে রহমতগঞ্জ
ফেডারেশন কাপ ফুটবলের অন্যতম সফল দল মোহামেডান। সাদা-কালোরা এ পর্যন্ত শিরোপা জিতেছে ১০ বার। শেষটা ২০০৯ সালে। এর পর দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি এই টুর্নামেন্টের ফাইনালেই উঠতে পারেনি। দীর্ঘ এক যুগ পর ফাইনালে ওঠার সুযোগ এসেছিল তাদের সামনে। সেই সুযোগটাও হাতছাড়া হলো।
বৃহস্পতিবার কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে মোহামেডানকে ২-১ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে রহমতগঞ্জ। রহমতগঞ্জের গোল করেছেন ফিলিপ ও সানডে। মোহামেডানের গোলদাতা রাজিব।
জয়ের পথটা মোহামেডান তৈরি করেছিল দ্রুতই। পঞ্চম মিনিটে এগিয়ে গিয়ে ম্যাচের কর্তৃত্ব নিয়েছিল সাদা-কালোরা। কিন্তু সেই গোল তারা ধরে রাখতে পারেনি।
পিছিয়ে পড়া রহমতগঞ্জ কোয়ার্টার ফাইনালের মতো দুর্দান্তভাবে ম্যাচে ফিরেছে এবং শেষ পর্যন্ত জয় ছিনিয়ে নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনালে উঠেছে পুরনো ঢাকার ক্লাবটি।
একটি লালকার্ডই তছনছ করে দিয়েছে মোহামেডানকে। মেসিডোনিয়ার ডিফেন্ডার ইয়াসমিন মেসিনোভিকি দ্বিতীয় হলুদ কার্ড ৬৭ মিনিটে। তার পর থেকেই রহমতগঞ্জ চেপে ধরে মোহামেডানকে এবং বাকি সময়ে ১০ জনের দলের বিপক্ষে দুটি গোল করে চমক দেখান ফাইনালে উঠে।
মোহামেডানের এগিয়ে যাওয়া গোলটি আসে পঞ্চম মিনিটে। আলমগীর মোল্লার কর্নারে দূরের পোস্ট থেকে অ্যারন জন রিয়ারাডনের হেড এবং গোলমুখ থেকে নিখুঁত টোকায় জাল খুঁজে নেন ডিফেন্ডার রাজীব হোসেন।
তিন মিনিট পর আলমগীরের ভাসানো ক্রসে বক্সের ভেতরে সাহেদ মিয়ার হেড ক্রসবারের একটু উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। ২২ মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়েও ব্যবধান দ্বিগুণের ভালো সুযোগ নষ্ট করেন সাহেদ।
৩৫ মিনিটে সমতায় ফেরার ভালো একটা সুযোগ পেয়েছিল রহমতগঞ্জ। বক্সের ভেতরে এনামুল ইসলাম গাজীর শট রিয়ারডনের গায়ে লেগে খানিকটা দিক পাল্টে চলে যায় ফিলিপ আজাহর কাছে। ঘানার এই ফরোয়ার্ডের জোরালো শট বাইরের জাল কাঁপায়।
৪০ মিনিটে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন মোহামেডানের সাহেদ। অনিকের পাস থেকে ডান দিক দিয়ে বক্সে ঢুকে কাট ব্যাক করেন সুলেমানে দিয়াবাতে, গোল মুখে ফাঁকায় থেকেও তুষারকে পরাস্ত করতে পারেননি সাহেদ। গোলরক্ষক বরাবর মেরে বসেন এই মিডফিল্ডার।
৬৭ মিনিটে আক্রমণে ওঠা রহমতগঞ্জের আজাহকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন ডিফেন্ডার মেসিনোভিকি। ৭৫ মিনিটে মোহামেডানের ওবি মোনেকের শট কর্নারের মাধ্যমে ফেরান তুষার।
রহমতগঞ্জে সমতায় ফেরে ৭৮ মিনিটে। আশরাফুল ইসলামের লং পাস অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে নিয়ন্ত্রণে নেন আজাহ। পেছনে থাকা ডিফেন্ডারকে প্রতিরোধের সুযোগ না দিয়ে জোরালো শটে গোল করেন এই ঘানাইয়ান ফরোয়ার্ড।
সমতায় ফেরার পর মোহামেডানের ওপর চড়াও হয় রহমতগঞ্জ। গোলাম জিলানীর দল সফল হয় শেষ মিনিটে। এক ডিফেন্ডারের লং পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সাদেকুজ্জামান ফাহিমকে বোকা বানিয়ে বল বের করে নিয়ে আজাহ ক্রস বাড়ান বক্সে।
গোলমুখে আনমার্কড থাকা চিজোবা ঠাণ্ডা মাথায় লক্ষ্যভেদ করেন। যে গোল নির্ধারণ করে দেয় ম্যাচের ভাগ্য। আবাহনী থেকে এবার রহমতগঞ্জে ফেরা সানডে শেষ পর্যন্ত হয়ে গেলেন দলকে ফাইনালে ওঠানোর নায়ক।
আরআই/এসএএস/এমএমআর/জেআইএম