নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর আর সুযোগ পাচ্ছে না রিয়াল-বার্সা-জুভেন্টাস
শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ এনে আগেই হুমকি দেয়া হয়েছিল ইউরোপের সেরা তিন ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা এবং জুভেন্টাসকে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিষিদ্ধ করা হবে। শেষ পর্যন্ত এই তিন ক্লাবের বিরুদ্ধে শুরু হলো ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন। খুব দ্রুতই নিষেধাজ্ঞার শাস্তি নেমে আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে এই তিন ক্লাবের ওপর।
উয়েফার দৃষ্টিতে ‘শৃঙ্খলা ভেঙে’ ইউরোপিয়ান সুপার লিগে যোগ দেয়ার পরও তাদের কাছে স্রেফ ক্ষমা চেয়ে পার পেয়ে যায় ৯টি ক্লাব; কিন্তু এই লিগ থেকে এখনও সরে না আসায় বাকি তিন ক্লাব- রিয়াল, বার্সা এবং জুভেন্টাসের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের গুরুতর অভিযোগ আনা হচ্ছে উয়েফার পক্ষ থেকে।
এবার এই তিন ক্লাবের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বলে ঘোষণা দিয়েছে। তাদের অনুমতি না নিয়ে ‘দলবাজি’ করার কারণে নিষেধাজ্ঞার মুখেও পড়তে যাচ্ছে মেসি-রোনালদো-বেনজেমাদের ক্লাব।
ইউরোপিয়ান ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা উয়েফা একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘উয়েফার এথিক্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি পর্যবেক্ষক দিয়ে একটি তদন্ত কার্য পরিচালনা করা হয়। এই তদন্ত কার্যের পর তথাকথিত ইউরোপিয়ান সুপার লিগের সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ এবং সম্পর্ক থাকার কারণে রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা এবং জুভেন্টাস- এই তিনটি ক্লাবের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়ার কাজ শুরু হলো। এই তিনটি ক্লাবই উয়েফার রুলস অ্যান্ড রেগুলেশন ভঙ্গ করেছে।’
মে মাসের ১২ তারিখ উয়েফা স্বাধীন এথিক্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি ইন্সপেক্টর নিয়োগ করে বিষয়া তদন্ত করার জন্য।
এপ্রিলির মাঝামাঝি সময়ে রিয়াল, বার্সা, অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার সিটি, চেলসি, লিভারপুল, আর্সেনাল, টটেনহ্যাম, ইন্টার মিলান, এসি মিলান এবং জুভেন্টাসের মতো ১২টি শক্তিশালী ইউরোপীয় ক্লাবকে নিয়ে গঠন করা হয়েছিল বিদ্রোহী লিগ, ইউরোপিয়ান সুপার লিগ।
তারা ঠিক করেছিল, আগামী মৌসুম থেকে উয়েফার ‘আশ্রয়ে’ তারা আর থাকবে না। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ না খেলে খেলবে সুপার লিগ। যে টুর্নামেন্টে কোনো ওঠা-নামা থাকবে না। কিন্তু ঘনঘন খেলা হবে সেই ক্লাবগুলোর। তাতে মুনাফা বাড়বে, কাটবে আর্থিক সংকট, বাঁচবে ফুটবল।
কিন্তু সেই সুপার লিগ ভূমিষ্ঠ হওয়ার আটচল্লিশ ঘণ্টার মধ্যেই ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ফিফা হুমকি দিতে থাকে। উয়েফা শাসাতে শুরু করে। উয়েফা জানিয়ে দেয়, ফের অনুমতিছাড়া অন্য ক্লাবে খেলতে গেলে ১০০ মিলিয়ন ইউরো জরিমানা দিতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা, ক্লাবগুলোর সমর্থককুলও বিদ্রোহের পথে নেমে পড়ে।
এরপর নতিস্বীকারে বাধ্য হয় ১২ ক্লাবের মধ্যে ৯টি ক্লাব। রিয়াল, বার্সা এবং জুভেন্টাস বাদে সবাই ঘোষণা দেয় যে, তারা আর সুপার লিগ প্রজেক্টে নেই। তারা ভুল করেছিল। তারা আনুষ্ঠানিকভাবে উয়েফার কাছে ক্ষমাও চেয়ে নেয়।
উয়েফা প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার সেফেরিন গত মাসে হুঁশিয়ারির সুরেই বলেছিলেন, ‘যদি ওরা সুপার লিগ খেলে তাহলে নিশ্চয়ই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলবে না।’
সেই হুমকির পরও প্রজেক্ট থেকে সরে আসেনি এই তিনটি ক্লাব। যে কারণে সামনের মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল, বার্সা এবং জুভেন্টাসকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে উয়েফার পক্ষ থেকে।
আইএইচএস/