ক্রিকেটের পাশেই অত্যাধুনিক ফুটবল স্টেডিয়াম হবে কক্সবাজারে
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের লাবণী পয়েন্টের পর্যটন করপোরেশনের জায়গায় আন্তর্জাতিক মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণ হয়েছে আগেই। ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড নির্মিত শেখ কামালের নামের এই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
নতুন খবর হলো কক্সবাজারবাসী লাবণী পয়েন্টে ক্রিকেটের পাশপাশি পাচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের ফুটবল স্টেডিয়ামও। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছুদিন আগে সেখানকার ৫০ একর জায়গায় পাশপাশি দুটি স্টেডিয়াম নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জহিদ আহসান রাসেল এমপি।
যেহেতু লাবনী পয়েন্টে রয়েছে ক্রিকেট স্টেডিয়াম, সেহেতু কক্সবাজারের অন্য কোথাও হবে আন্তর্জাতিক মানের ফুটবল স্টেডিয়াম- সেভাবেই জায়গা অনুসন্ধান করছিল ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। ফুটবলের জন্য কয়েকটি স্থান প্রাথমিকভাবে নির্ধারণও করা হয়েছিল। কিন্তু গত মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন অন্য কোথাও নয়, লাবণী পয়েন্টেই পাশপাশি ফুটবল ও ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণের।
‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা- দুই স্টেডিয়ামের কোনোটিতেই বড় গ্যালারি হবে না। ঝাউ গাছগুলো নষ্ট করা যাবে না। সমুদ্রের দিকটা থাকবে উম্মুক্ত, এ দিকে কোনো গ্যালারি হবে না। দর্শক যাতে অন্য দিকের গ্যালারি থেকে খেলাও দেখতে পারে, সমুদ্রের সৌন্দর্য্যও উপভোগ করতে পারে’- বলেছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি।
কক্সবাজারে এই স্টেডিয়াম নির্মাণের এই নতুন নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী গত আগস্টের শেষ সপ্তাহে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রজেক্ট উপস্থাপন করার পর সংশ্লিষ্টদের এ দেশের দুই বড় খেলার স্টেডিয়াম দুটি কক্সবাজারে পাশাপাশি নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা।
‘আমাদের ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন জায়গার প্রজেক্টগুলো প্রায় ঘণ্টাখানেক সময় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করেছিলাম। তখন প্রধানমন্ত্রী আমাদের বলেছেন, কক্সবাজারের লাবণী পয়েন্টেই ফুটবল ও ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণ করতে। স্টেডিয়াম কীভাবে হবে সেই বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে প্রজেক্টগুলো নিয়ে মন্ত্রণালয়ের সভা আছে। ওই সভায় সেগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে’-বলেন জাহিদ আহসান রাসেল এমপি।
‘বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড তো সেখানে ‘শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও ক্রিকেট কমপ্লেক্স’ নির্মাণের কাজ অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছে। এখন সেখানে ফুটবল স্টেডিয়াম কীভাবে সম্ভব?- এমন প্রশ্ন করলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের উন্নয়ন শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ক্রিকেট স্টেডিয়ামের জন্য সর্বোচ্চ ২৫ এবং ফুটবলের জন্য সর্বোচ্চ ১৫ একর জায়গা লাগবে। সেখানে জায়গা আছে প্রায় ৫০ এককর। আমরা হিসেব করে দেখছি দুই স্টেডিয়াম করলেও মাঝে যে ফাঁকা জায়গা থাকবে সেখানে পাঁচ তারকা হোটেলও নির্মাণ করা যাবে।’
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের উন্নয়ন শাখার ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘ক্রিকেট তো পুরো জায়গায় কাজ করেনি। তারা ২০-২১ একরের মতো জায়গায় বাউন্ডারি দিয়েছে। এখন আমরা দেখবো ক্রিকেট স্টেডিয়াম রেখে ফুটবল স্টেডিয়াম নির্মাণ সম্ভব কি না। আর ক্রিকেট স্টেডিয়াম যদি জায়গার ঠিক মাঝে হয়ে থাকে তাহলে ভাঙতে হলে ভাঙবো। কারণ, আমাদেরকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর এখন আমরা সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের মধ্যে দিয়ে কার্যক্রম শুরু করবো।’
উল্লেখ্য যে, শুরু থেকে কক্সবাজারের এই জায়গায় ফুটবল ও ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণের কথা থাকলেও পরে সেটা আস্তে আস্তে এককভাবে ক্রিকেটের হতে চলেছিল। বছর তিনেক আগে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সমন্বিত একটি প্রতিনিধি দল ওই জায়গা পরিদর্শন করে ফুটবল স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য ১২ একর জায়গা দেয়ার একটা প্রাথমিক কথাবার্তাও হয়েছিল।
কিন্তু বাফুফের এ নিয়ে বেশি তৎপরতা না থাকায় পুরো জায়গাটাই চলে যাচ্ছিল ক্রিকেটের কাছে। এখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কক্সবাজারের লাবণী পয়েন্টে পাশাপাশি নির্মাণ হবে দেশের প্রধান দুই খেলার দৃষ্টিনন্দন আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম।
আরআই/এসএএস/এমএস