যে দেশগুলো নিয়ে হবে এবারের বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ
- বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ হবে তো এ বছর? প্রশ্নটা করতেই বাফুফে সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিনের জবাব, ‘করতে চাইলেও তো করা কঠিন। কারণ, আন্তর্জাতিক সিডিউলের চাপে গ্যাপ পাওয়া মুশকিল। তারপরও চেষ্টা তো থাকবেই। এটা নিয়ে কাজ হচ্ছে।’
- ঘোষিত তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর তো এগিয়ে আসছে। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ নিয়ে কোনো অগ্রগতি আছে? ‘আমরা ওই তারিখ ধরেই কাজ শুরু করেছি। কয়েকদিনের মধ্যে কিছুটা অগ্রগতির কথা জানাতে পারবো’- জবাব বাফুফে সাধারণ সম্পাদক মো. আবু নাঈম সোহাগের।
- আপনারা তো বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের স্পন্সর। এবারের টুর্নামেন্ট নিয়ে কি ভাবছেন? কে-স্পোর্টসের সিইও এম ফাহাদ করীম জানালেন, ‘বাফুফের সঙ্গে দিন চারেক আগে মৌখিক আলোচনা হয়েছে। তারা বলেছে নির্ধারিত সময়েই হবে। দুই/তিন দিনের মধ্যে বিস্তারিত নিয়ে আলোচনায় বসবো আমরা।’
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ আয়োজনের গুরুত্বপূর্ণ তিন ব্যক্তির কথাতেই পরিস্কার তারা ঘোষিত সময়েই জাতির জনকের নামের এই টুর্নামেন্টের ষষ্ঠ আসর আয়োজনে বদ্ধ পরিকর। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ অক্টোবর হবে এই আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্ট।
ফিফা-এএফসির ব্যস্ত সূচির কারণে বিশ্বে আমন্ত্রণমূলক টুর্নামেন্টগুলো অনেক কমে গেছে। বিশ্বের অনেক ঐতিহ্যবাহী টুর্নামেন্ট হারিয়েও গেছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন এই প্রতিকূলতা ঠেলেও বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রতি বছর আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। শুধু ঘোষণা নয়, আয়োজনও করছে।
এমনিতেই সারাবছর ব্যস্ত সূচি থাকে ফিফা-এএফসির। দেশগুলোর ঘরোয়া ব্যস্ততা তো আছেই। তার ওপর ২০১৯ ও ২০২০ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের বছর। যে কারণে কোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন করলে দল পাওয়াই একটা কঠিন চ্যালেঞ্জ। যাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়, তারা আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া সিডিউলের ফাঁকফোঁকর মিলিয়ে অংশ নেয়ার চেষ্টা করে।
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের এবারের আসর নিয়ে পরিকল্পনা কেমন বাফুফের? সাধারণ সম্পাদকের কথায় বোঝা গেলো কিছু দলকে আমন্ত্রণ জানানো ছাড়া আর তেমন অগ্রগতি নেই। আর সবচেয়ে বড় যে বিষয়টা সেই টাকার তো সমস্যা নেই। গত আসরের আয়োজক কে-স্পোর্টস তো আছেই।
গত বছর ১ থেকে ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ হয়েছিলে তিন ভেন্যুতে। সিলেটে হয়েছিল গ্রুপ পর্ব, কক্সবাজারে সেমিফাইনাল এবং ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফাইনাল। এবারও কি এই তিন ভেন্যুতে হবে টুর্নামেন্ট? এখনো চূড়ান্ত কিছু না হলেও ভেন্যু কমবে তা নিশ্চিত। শুধু বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। দুটি ভেন্যু হলে এগিয়ে থাকবে সিলেট জেলা স্টেডিয়াম।
ফরম্যাট আগের মতোই। বাংলাদেশসহ ৬টি দল। দুই গ্রুপে হবে খেলা। তারপর সেমিফাইনাল ও ফাইনাল। প্রশ্ন হলো এবার কোন দেশগুলোকে দেখা যাবে জাতির জনকের নামের এই টুর্নামেন্টে? বাফুফে থেকে একটা নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে যে দলই খেলবে সেটা হবে জাতীয় দল।
বাফুফে ইতিমধ্যে কয়েকটি দেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ২৫ সেপ্টেম্বর শুরু হতে যাওয়া বঙ্গবঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের জন্য। তবে আমন্ত্রিত দলগুলোর মধ্যে নেই সর্বশেষ আসরের চ্যাম্পিয়ন ফিলিস্তিন। জানা গেছে বাফুফে এবার দক্ষিণ এশিয়ার দেশ হিসেবে টুর্নামেন্টে রাখতে যাচ্ছে ভুটানকে। পাহাড়ী এ দেশটিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গত বছর ছিল নেপাল। আরো আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে লাওস, কম্বোডিয়া ও তিমুর লেস্তেকে। পঞ্চম বিদেশি দেশ হিসেবে কাদের আমন্ত্রণ জানানো হবে তা চূড়ান্ত হবে এ সপ্তাহেই।
তবে যে দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তারা অংশ নেবে কি-না তা এখনো নিশ্চিত করেনি। বাফুফে সাধারণ সম্পাদক মো. আবু নাঈম সোহাগ বলেন, ‘আমন্ত্রণ জানালেই সেসব দেশ খেলবে তা তো নিশ্চিত না। আমাদের লাগবে ৫টি বিদেশি দল। কিন্তু কাজ করতে হচ্ছে আরো বেশি নিয়ে। কারণ, কারা খেলতে পারবে, কারা পারবে না সেটা বোঝা যাবে আমাদের আমন্ত্রণের জবাব দেয়ার পর।’
দল আর ভেন্যুর বিষয়টি বাফুফের উপরই ছেড়ে দিয়েছে পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান কে-স্পোর্টস। ফাহাদ করীম জানিয়েছেন, ‘বাফুফে জানিয়েছে তারা কয়েকটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। আর বাকি বিষয়গুলো নিয়ে কয়েকদিনের মধ্যেই আমরা বসবো।’
জাতির জনকের নামের এই আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ হয়ে আসছে ১৯৯৭ সাল থেকে। তবে মাঝে অনিয়মিত হয়ে পড়েছিল। ৯৭ ও ৯৯ সালে দুইবার হওয়ার পর দীর্ঘ ১৬ বছর এ টুর্নামেন্ট হয়নি। কাজী মো. সালাউদ্দিন বাফুফের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম আয়োজন করেন ২০১৫ সালে। তারপর ২০১৬ ও ২০১৮ সালে হয়েছে এ টুর্নামেন্ট। ৫ বারের মধ্যে দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মালয়েশিয়া অনূর্ধ্ব-২৩ দল। একবার করে জাপান লিগ একাদশ, নেপাল ও ফিলিস্তিন।
আরআই/এসএএস/জেআইএম