এক আর্জেন্টাইন বললেন ‘ভালো থেকো বাংলাদেশ’
এক দুই বছর নয়, বাংলাদেশের সঙ্গে এরিয়েল কোলম্যানের সম্পর্ক এক যুগেরও বেশি সময় ধরে। ২০০৫ সালে বাংলাদেশ ফুটবল দলের ট্রেনার হিসেবে চাকরি নিয়ে প্রথম বাংলাদেশ এসেছিলেন স্বদেশি কোচ দিয়েগো ক্রুসিয়ানির সঙ্গে। ক্রুসিয়ানি চলে যাওয়ার পর এ আর্জেন্টাইন জাতীয় দলে জুটি বেঁধেছিলেন ব্রাজিলের এডসন সিলভা ডিডোর সঙ্গে। ডিডো ২০০৮-০৯ সালে জাতীয় দলের কোচ ছিলেন। তখনো কোলম্যান ছিলেন ট্রেনার।
মাঝে ৩ বছর নিজ দেশেই চাকরি করেছেন কোলম্যান। তারপর ২০১৩ সালে শেখ জামালে যোগ দেন। সেই থেকে প্রিমিয়ার লিগের তিনবারের চ্যাম্পিয়নদের ঘরের ছেলে হয়ে কাজ করছেন। ধানমন্ডিপাড়ার দলটির সুখে-দুঃখে মিসে গেছেন মেসি-ম্যারাডোনার দেশের ৫০ বছর বয়সী এ ভদ্রলোক। সেই সম্পর্কটাও শেষ হয়েছে দুই দিন আগে। দীর্ঘদিন বাংলাদেশে কাটানো এই আর্জেন্টাইন দেশে ফিরে যাচ্ছেন সপ্তাহখানেকের মধ্যেই।
এপ্রিল পর্যন্ত কোলম্যানের সঙ্গে চুক্তি ছিল শেখ জামালের। মৌসুমের সিংহভাগ শেষ হয়ে যাওয়ায় এখন আর ট্রেনারের সঙ্গে চুক্তি বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা মনে করেনি ক্লাবটি। তাই তো কোলম্যানের সঙ্গে অর্ধযুগের সম্পর্কের ইতি টেনে দিয়েছে প্রিমিয়ার লিগের তিনবারের চ্যাম্পিয়নরা। এপ্রিলের বেতনটা হাতে পেলেই দেশের ফ্লাইট ধরবেন কোলম্যান।
অনেকদিন ধরে এই দেশে আছেন। বাংলাদেশকে বলতেন তার সেকেন্ড হোম। সেকেন্ড হোম ছেড়ে যেতে কেমন লাগছে? ‘খারাপ লাগাটাই স্বাভাবিক। আমি ১৪ বছর আগে প্রথম এসেছিলাম। জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করেছি। টানা ৬ বছর ধরে কাজ করলাম শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবে। এ দেশের মানুষের সঙ্গে আমার সখ্যতাও গড়ে উঠেছিল। আমি অনেক কিছুই মিস করবো’- বৃহস্পতিবার রাতে জাগো নিউজকে বলছিলেন কোলম্যান।
বাংলাদেশের কোন জিসিটা আপনার ভালো লেগেছে দীর্ঘদিনে? কোলম্যানের জবাব, ‘অবশ্যই এদেশের মানুষ। আমার অনেকের সঙ্গেই ভালো সম্পর্ক হয়েছিল। আমি চলে যাওয়ার পর বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের মানুষদের মিস করবো। আমি চলে যাচ্ছি। যাওয়ার আগে বলবো- ভালো থেকো বাংলাদেশ।’
বাংলাদেশের বিশেষ কোনো খাবার মিস করবেন কী? ‘অবশ্যই। তবে বিশেষভাবে মিস করবো বাংলাদেশের ইলিশ মাছ ও চিকেন বিরিয়ানি। এ খাবার দুটো আমার খুব পছন্দের’- বলছিলেন কোলম্যান।
আবার বাংলাদেশে আসার কোনো সম্ভাবনা আছে? ‘তা জানি না। শেখ জামালের সঙ্গে চুক্তি শেষ হওয়ার পর দু’একটা ক্লাব থেকে অফার পেয়েছিলাম; কিন্তু কোনোটাই গ্রহণের মতো ছিল না। তাই চলে যাচ্ছি। আমি এখন শেষ মাসের বেতনের অপেক্ষায় আছি। হাতে পেলেই দেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবো’- বলেন কোলম্যান।
কোন কষ্ট নিয়ে ফিরছেন কী? কোলম্যান বললেন, ‘এ দেশ ও এদেশের মানুষকে মিস করবো এটাই কষ্ট। তবে আপাতত আমি আমার পরিবারের সদস্যদের কাছে যাচ্ছি সেটাই বড় কথা। আবার কখনো বাংলাদেশে আসবো কিনা তা ঈশ্বরই জানেন।’
আরআই/আইএইচএস/পিআর