ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পাশাপাশি ক্রীড়া কমপ্লেক্সও হবে পূর্বাচলে!
অত্যাধুনিক জাতীয় ক্রীড়া কমপ্লেক্স তৈরির জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কাছ থেকে পূর্বাচলে বরাদ্দ পাওয়া ৩৭.৫০ একর জমি হাতছাড়া হয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি)। সরকারের কাছ থেকে পুরো জায়গাটাই নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সেখানে নিজস্ব অর্থায়নে শেখ হাসিনা ক্রিকেট স্টেডিয়াম তৈরি করবে বিসিবি।
হাতের মুঠোর জমি হাতছাড়া হওয়ার পর পূর্বাচলেই নতুন জমি পেতে চাইছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। দেশের সবচেয়ে বড় ও অত্যাধুনিক জাতীয় ক্রীড়া কমপ্লেক্স সেখানেই তৈরি করতে চান যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি। শুক্রবার ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাগো নিউজকে তার ব্যক্তিগত ইচ্ছের কথা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমরা জাতীয় ক্রীড়া কমপ্লেক্স তৈরি করবো। আমার ইচ্ছে পূর্বাচলে করার। কারণ, এটি কেন্দ্রীয়ভাবে করা হবে। তাই ওখানে কমপ্লেক্স হলে পূর্বাচল এলাকাবাসীরও লাভ হবে, বাংলাদেশের মানুষেরও লাভ হবে।’
একটি আধুনিক ক্রীড়া কমপ্লেক্স তৈরির পরিকল্পনা সরকারের অনেক আগে থেকেই নেয়া। তবে এই উদ্যোগের পালে জোর হাওয়া লেগেছে বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায়। গত ৩০ ডিসেম্বর হওয়া একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ইশতেহারে খেলাধুলার বিষয়ে যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল সেখানে গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল ক্রীড়া ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও প্রশিক্ষণ সুবিধা সম্প্রসারণে।
সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যে এ নিয়ে দুটি সভাও হয়েছে। যেখানে প্রতি জেলায় একটি করে যুব ও ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ‘ক্রীড়া ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও প্রশিক্ষণ সুবিধা সম্প্রসারণ’ প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবেই প্রতি জেলায় ক্রীড়া কমপ্লেক্স করবে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। আর কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীতে হবে সবচেয়ে বড় ও অত্যাধুনিক জাতীয় ক্রীড়া কমপ্লেক্স।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. মাসুদ করিম জাগো নিউজকে বলেছেন, ‘প্রতি জেলায় ক্রীড়া কমপ্লেক্স তৈরির জন্য খুব সহসাই জমি খোঁজার কাজ শুরু হবে। ডিসিদের চিঠি দিয়ে জমি নির্ধারণ করতে বলা হবে।’
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অগ্রাধিকার দেবে কমপ্লেক্সের জন্য জেলা স্টেডিয়ামসংলগ্ন জায়গা। কারণ, ক্রীড়া কমপ্লেক্স তৈরির জন্য নতুন করে জমি অধিগ্রহণ করবে না সরকার। জায়গা পাওয়া সাপেক্ষেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুরু হবে যুব ও ক্রীড়া কমপ্লেক্স তৈরির কাজ।
কেন্দ্রীয়ভাবে জাতীয় ক্রীড়া কমপ্লেক্স করতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের দরকার ৩০ থেকে ৩৫ একর জায়গা। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তারা পূর্বাচলে জমি পেতে রাজউককে চিঠি দেবে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিকল্পনা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় ক্রীড়া কমপ্লেক্সের একটি মাস্টার প্ল্যান করে তারা খুব তাড়াতাড়িই জমা দেবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে। তার ভিত্তিতে জমি পাওয়ার উদ্যোগ নেবে মন্ত্রণালয়।
আনুমানিক ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিতব্য এই ক্রীড়া কমপ্লেক্সে থাকবে ফুটবল, ক্রিকেট মাঠসহ শীর্ষ ২০টির মতো খেলার সুযোগ-সুবিধা। অ্যাথলেটিক ট্র্যাক, সাঁতারের জন্য ২৫ মিটারের পুল, সাইক্লিংয়ের ভেলোড্রাম, টেনিস কোর্ট, ভলিবল, কাবাডি, হ্যান্ডবলসহ বাছাই করা খেলার সুযোগ সুবিধা থাকবে জাতীয় ক্রীড়া কমপ্লেক্সে। মাল্টি পারপাস ইনডোর, বিভিন্ন খেলার ক্যাম্প করার জন্য আবাসন সুযোগ-সুবিধা, একাডেমিক ভবন এবং বিভিন্ন কোর্স করার সুযোগও থাকবে এখানে।
আরআই/আইএইচএস/এমএস