চূড়ান্ত পর্বে চোখ রেখেই মিয়ানমার যাচ্ছেন নারী ফুটবলাররা
ঢাকায় গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ধারাবাহিকতা দ্বিতীয় রাউন্ডেও ধরে রাখতে চান নারী ফুটবলাররা। এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় রাউন্ড খেলতে গোলাম রব্বানী ছোটন মেয়েদের নিয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমার যাচ্ছেন। সেখানে ২৭ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে এ টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় রাউন্ড। বাংলাদেশের গ্রুপ প্রতিপক্ষ ফিলিপাইন, চীন ও স্বাগতিক মিয়ানমার।
এই টুর্নামেন্টের আগের আসরে চূড়ান্ত পর্বে খেলেছিল বাংলাদেশ। সেবারও ঢাকায় বাছাই পর্ব চ্যাম্পিয়ন হয়ে মারিয়া-কৃষ্ণারা টিকিট পেয়েছিলেন চূড়ান্ত পর্বের। তবে এবার দল বাড়ায় বাছাইটা হচ্ছে দুই পর্বে।
প্রথম পর্বের ‘এফ’ গ্রুপের খেলা হয়েছিল কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে গত বছর সেপ্টেম্বরে। বাহরাইন, লেবানন, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ভিয়েতনামকে হারিয়ে বাংলাদেশ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠেছে দ্বিতীয় রাউন্ডে।
মিয়ানমারে তিন প্রতিপক্ষের দুটিই বাংলাদেশের সামনে একেবারে নতুন। ফিলিপাইন ও চীনের সঙ্গে আগে কখনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে খেলেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। তবে ২০১৭ সালে এই টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত পর্বে থাইল্যান্ড খেলতে যাওয়ার প্রস্তুতি হিসেবে চীনে চারটি প্রীতি ম্যাচ খেলেছিল তারা।
যার দুটি ছিল দেশটির অনূর্ধ্ব-১৪ দলের বিপক্ষে এবং দুটি একটি প্রাদেশিক দলের বিপক্ষে। চার ম্যাচের দুটি জিতেছিল বাংলাদেশ। হেরেছিল একটি, অন্যটি ড্র।
চীন সম্পর্কে তাই ভালো ধারণা আছে বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটনের। দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিপক্ষ হবে স্বাগতিকরা। এ ম্যাচের ফল নিজেদের পক্ষে আনতে পারলেই গ্রুপসেরা হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হবে মৌসুমীদের।
‘এখানে তিনটি দলই ভালো। তবে আমরাও ভালো। আমাদের মেয়েরা দীর্ঘদিন ধরে অনুশীলনে আছে। আশা করি, সব ম্যাচ জিতে গ্রুপসেরা হয়েই চূড়ান্ত পর্বে যেতে পারবো’-বলেছেন গোলাম রব্বানী ছোটন।
বাছাই পর্বের দ্বিতীয় রাউন্ড হচ্ছে দুই ভেন্যুতে। অন্য গ্রুপের খেলা লাওসে। সেখানে খেলছে লাওস, অস্ট্রেলিয়া, ভিয়েতনাম ও ইরান। দুই গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দল পাবে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য চূড়ান্ত পর্বের টিকিট। যে পর্বে স্বাগতিকরা ছাড়াও সরাসরি খেলছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন উত্তর কোরিয়া, রানার্সআপ দক্ষিণ কোরিয়া ও তৃতীয় জাপান।
মিয়ানমারে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ২৭ ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইনের বিরুদ্ধে। ১ মার্চ স্বাগতিকদের মুখোমুখি হবেন মৌসুমীরা। গ্রুপের শেষ ম্যাচ ৩ মার্চ চীনের সঙ্গে। লাওসে ‘এ’ গ্রুপের খেলা হবে ৩ থেকে ৭ মার্চ।
মিয়ানমারে অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই পর্বের দ্বিতীয় রাউন্ড শেষ হওয়ার সপ্তাহ পার হলেই বাংলাদেশের মেয়েদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ সিনিয়র সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। ১২ থেকে ২২ মার্চ নেপালের বিরাটনগরে হবে দক্ষিণ এশিয়ার মেয়েদের সবচেয়ে বড় ফুটবল টুর্নামেন্ট।
অনূর্ধ্ব-১৬ যে দলটি যাবে মিয়ানমার, সেখানে ৯ জন ফুটবলার আছেন যার খেলবেন জাতীয় দলে। সাফের আগে মিয়ানমারের এ টুর্নামেন্টে জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের জন্য হবে দারুণ এক অভিজ্ঞতা অর্জনের ক্ষেত্র। বাফুফে অবশ্য জাতীয় দলের বাকি খেলোয়াড়দের পাঠাচ্ছে মিয়ানমার। সেখানে জাতীয় দলেরও অনুশীলন হবে বলে জানিয়েছেন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন।
সর্বশেষ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ ফাইনালে উঠে হেরেছিল ভারতের কাছে। এই অঞ্চলের মেয়েদের ফুটবলে নেপালও বেশ উঠে এসেছে। যে কারণে বাংলাদেশ আস্তে আস্তে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পড়বে। বিশেষ করে জাতীয় দলের টুর্নামেন্টে বাংলাদেশকে একটু বেশি চ্যালেঞ্জে পড়তে হয়। কারণ, বাংলাদেশের ফুটবল মানেই বয়সভিত্তিক খেলোয়াড়। কোচ আশা করছেন, এখন যেভাবে মেয়েদের প্রস্তুতি চলছে তা অব্যাহত থাকলে আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে ভারতের সঙ্গে জয়ের স্বপ্ন দেখত পারবেন সিনিয়র পর্যায়ে।
আরআই/এমএমআর/জেআইএম