হোম ম্যাচে ক্লাবগুলোর উপর একগাদা শর্ত বাফুফের
গত মৌসুমে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সব খেলা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। পেশাদার লিগের সবচেয়ে বড় শর্তই পালন হয়নি লিগে। এবার লিগ হবে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামসহ ৮ ভেন্যুতে। যার ৭টিই ঢাকার বাইরে। প্রিমিয়ার লিগ শুরুর পর এটাই হবে সবচেয়ে বেশি ভেন্যুতে খেলা।
১৩ দল নিজেদের পছন্দমতো স্টেডিয়ামকে হোম ভেন্যু বানিয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম হোম ভেন্যু হিসেবে নিয়েছে মোহামেডান, আবাহনী, ব্রাদার্স ও রহমতগঞ্জ। চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়াম স্থানীয় আবাহনীর, ফরিদপুর শেখ জামাল স্টেডিয়াম শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের।
গোপালগঞ্জ শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়াম মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের, ময়মনসিংহ রফিক উদ্দিন ভুঁইয়া স্টেডিয়াম আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ ও সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের, সিলেট জেলা স্টেডিয়াম শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের, নোয়াখালী শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম নোফেল স্পোর্টিং ক্লাব ও বিজেএমসির এবং নীলফামারী শেখ কামাল স্টেডিয়াম নবাগত বসুন্ধরা কিংসের হোম ভেন্যু।
গত মৌসুমে সব খেলা হয়েছিল এক স্টেডিয়ামে। এবার ৮ টিতে। পুরোপুরি না হলেও প্রিমিয়ার লিগের প্রধান শর্তটির বড় একটা অংশ পুরণ হচ্ছে একাদশ আসরে। যদিও কোনো স্টেডিয়ামই কোনো ক্লাবকে বরাদ্ধ দেয়নি স্টেডিয়ামের মালিক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। তারা বরাদ্ধ দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে।
এসব স্টেডিয়ামকে ক্লাবগুলো শুধু নামেই ভেন্যু হিসেবে বেছে নিয়েছে তা নয়। হোম ম্যাচের জন্য একগাদা শর্তও তাদের বেধে দিয়েছে বাফুফে। যে শর্তগুলোর বেশিরভাগই পূরণ করা সম্ভব হয়না ক্লাবগুলোর পক্ষে। এখানে অবশ্য একটা বিকল্প ব্যবস্থাও আছে ক্লাবগুলোর। কোনো শর্ত পূরণ করতে না পারলে সেগুলো বাফুফেই করে থাকে। তবে ব্যয়ভার যাবে ক্লাবগুলোর উপর। লিগ শেষে খরচের টাকা ক্লাবগুলোর পাওনা থেকে কেটে রাখবে বাফুফে।
যে ২০ শর্ত ক্লাবগুলোকে দিয়েছে বাফুফে, তার মধ্যে ম্যাচের সময় মাঠ ও মাঠের বাইরের নিরাপত্তার বিষয়টিও আছে। ম্যাচের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ মোতায়েনের ব্যবস্থা করতে হবে হোম ম্যাচের ক্লাবকে; কিন্তু এটা কী ক্লাবের পক্ষে সম্ভব? বাফুফের ম্যানেজার (কম্পিটিশন্স) মো. জাবের বিন তাহের আনসারী জাগো নিউজকে বলেছেন, ‘ম্যাচের কিছু কাজ আছে যা আমরাই করে দেই। যেমন মাঠ বরাদ্ধ, রেফারি, বল। নিরাপত্তার বিষয়টি ক্লাবগুলোর উপর দিলেও যে আমরা বসে থাকি তা নয়। আমরা নিরাপত্তার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে চিঠি দেই। ক্লাবগুলো যোগাযোগ করে তাদেরে উপস্থিতি নিশ্চিত করবে।’
প্রতিপক্ষ দলের আবাসন, অনুশীলন মাঠ নিশ্চিতকরণে সহযোগিতা, স্ট্রেচার, অ্যাম্বুলেন্স, ডাক্তার, বলবয় সংগ্রহ, গোল পোস্ট প্রস্তুত, মাঠের মার্কিং, ফটোকপি মেশিন, প্রিন্টার, ম্যাচ ভিডিও, মিডিয়ার সুযোগ-সুবিধা তৈরিসহ যাবতীয় কাজ হোম ম্যাচের ক্লাবকে করার শর্ত দিয়েছে বাফুফে।
সব কিছু যখন ক্লাবের তখন গেটমানিও তাদের। প্রতিটি হোম ম্যাচের গেটমানি পুরোটাই পাবে ক্লাব। বাফুফের করে দেয়া নমুনা অনুসারে টিকিটও ছাপাবে ক্লাবগুলো। যে টিকিটে লিগের টাইটেল স্পন্সরের নামের পাশপাশি ক্লাবগুলো তাদের নিজস্ব স্পন্সরের নামও রাখতে পারবে। তবে লিগ শেষে ক্লাবগুলোর অর্জিত গেটমানির শতকরা ৭ ভাগ পাবে বাফুফে।
১৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন আবাহনী ও নবাগত নোফেল স্পোর্টিং ক্লাবের ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে একাদশ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ। শুরুর দিকে সপ্তাহের শনিবার, রবিবার ও সোমবার খেলা রাখা হয়েছে। পরে অন্য দিনেও খেলা আছে। বাফুফে খসড়া ফিকশ্চার করে ক্লাবগুলোকে দিয়েছে। ৪ জানুয়ারির মধ্যে ক্লাবগুলো ফিকশ্চার নিয়ে কোনো মতামত থাকলে বাফুফেকে জানাবে। ১৩ টি ক্লাব। তাই প্রতি রাউন্ডে ৬ টি ম্যাচ এবং একটি দলের বিশ্রাম থাকবে।
১৮ জানুয়ারি ঢাকায় লড়বে আবাহনী ও নোফেল এবং ফরিদপুরে মুখোমুখি হবে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও বসুন্ধরা কিংস। পরের দিন দুটি ম্যাচই ঢাকার বাইরে। চট্টগ্রামে স্থানীয় আবাহনীর সঙ্গে খেলবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র ও ময়মনসিংহে স্বাগতিক সাইফ স্পোটিং ক্লাবের মুখোমুখি হবে রহমতগঞ্জ। ২০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে মোহামেডানের প্রতিপক্ষ বিজেএমসি এবং সিলেটে নিজেদের ভেন্যুতে আরামবাগের সঙ্গে খেলবে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। প্রথম রাউন্ডে খেলা নেই ব্রাদার্স ইউনিয়নের।
আরআই/আইএইচএস/জেআইএম