স্পেনে ফিরে আসছেন নেইমার, তবে
২২২ মিলিয়ন ইউরোর রেকর্ড মূল্যে বার্সা থেকে পিএসজিতে যোগ দিয়েছিলেন ২০১৭ সালে। কিন্তু যে উদ্দেশ্য নিয়ে প্যারিসে গিয়েছিলেন নেইমার, সেই উদ্দেশ্য মোটেও বাস্তবায়ন হচ্ছে না তার। বরং, পিএসজিতে তিনি রয়েছেন পুরোপুরি একটা ভারসাম্যহীন অবস্থায়। এমন পরিস্থিতিতে নেইমারকে নিয়ে বারবারই গুঞ্জন ওঠে, প্যারিস ছেড়ে যাওয়ার। যদিও এই গুঞ্জনটা আসে রিয়াল মাদ্রিদের পক্ষ থেকে। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো চলে যাওয়ার পর তার স্থান পূরণে নেইমারই সবচেয়ে আদর্শ, সে সম্ভাবনা থেকেই গুঞ্জনটা সবচেয়ে বেশি ঢালপালা মেলেছিল।
কিন্তু নেইমারকে আর নিতে পারেনি রিয়াল। তবে এরই মধ্যে আবার সাবেক ক্লাব বার্সা সতীর্থদের সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্ক ধরে রেখেছেন ব্রাজিল তারকা। কিছুদিন আগেও বার্সায় গিয়ে কাতালানদের ট্রেনিং সেন্টারে সাবেক সতীর্থদের সঙ্গে সাক্ষাৎও করে এসেছেন তিনি।
এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী পত্রিকা ডেইলি মিরর সংবাদ প্রকাশ করেছে, যে কারণে বার্সা ছেড়েছিলেন নেইমার, এবার ঠিক একই সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন তিনি পিএসজিতেও। বার্সায় ছিলেন মেসির ছায়া হয়ে। আর্জেন্টাইন এই তারকা ছায়া থেকে বের হওয়ার জন্যই তিনি গেলেন পিএসজিতে। কিন্তু সেখানে এখন তিনি ঢাকা পড়ছেন তরুণ তারকা কাইলিয়ান এমবাপের ছায়ায়।
কিছুদিন আগেই টাইমস ম্যাগাজিন তাদের কভার ফটো করেছে এমবাপেকে নিয়ে। যে সৌভাগ্য কখনো হয়নি নেইমারের। শুধু তাই নয়, বিশ্বকাপজয়ী তারকা হিসেবেও এমবাপের গ্রহণযোগ্যতা দিন দিন বাড়ছে। যে কারণে, নেইমার এখন পিএসজিতে হয়ে পড়ছেন দ্বিতীয় ব্যাক্তি। সুতরাং, প্যারিস ছাড়তে হচ্ছেই তাকে। সে পরিকল্পনা তিনি নিজের এজেন্ট এবং ঘনিষ্টজনদের মাধ্যমে জানিয়েছেন বার্সাকেও।
এদিকে নেইমারের প্যারিস ছাড়তে চাওয়ার গুঞ্জনের কথা চাউর হওয়ার পর তাকে নেয়ার জন্য নাকি উঠে-পড়ে লেগেছে বার্সা-রিয়াল দুই দলই। মাদ্রিদভিত্তিক পত্রিকা মার্কা জানিয়েছে, নেইমারের সম্ভাব্য ফিরে আসা নিয়ে আলোচনা চলছে বার্সায়ও। যে ২২২ মিলিয়ন ইউরোয় তিনি পিএসজিতে গেলেন, সেই একই মূল্য দিয়েই তাকে ফিরিয়ে আনা হতে পারে।
যদিও বার্সেলোনা ভাইস প্রেসিডেন্ট জর্দি কার্দোনের জানিয়েছেন, নেইমারকে ফিরিয়ে আনার কোনোই পরিকল্পনা নেই তাদের। মুন্ডো দেপোর্তিভো একদিন আগেই রিপোর্ট প্রকাশ করেছিলো, বার্সা নেইমারকে ফিরিয়ে আনতে যাচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বার্সা ভাইস প্রেসিডেন্ট এই বক্তব্য দিলেন।
মার্কা রিপোর্ট প্রকাশ করে সেখানে বলেছে, ‘রিয়াল মাদ্রিদ জানে, ২০১৯ সালেই পিএসজির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে দেবে নেইমার। সে ২২২ মিলিয়ন ইউরোর যে ট্রান্সফার ফিতে পিএসজিতে গিয়েছিল সেটা যে কোনোভাবে পরিশোধ করে দেবে।’ বার্সেলোনা তার ফিরে আসার খবর স্কীবার কিংবা অস্বীকার যাই করুক, রিয়ার মাদ্রিদও বসে নেই এ ব্যাপারে। তারাও চেষ্টা করছে নেইমারকে দলে নিয়ে আসার জন্য।
রিয়াল মাদ্রিদ শুরুতে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, রোনালদোর পরিবর্তে বড় কোনো ফুটবলারকে আর ক্লাবে নিয়ে আসবে না। পরিবর্তে তারা সেই অর্থ দিয়ে ক্লাবের মাঠ এস্টাডিও বার্নাব্যুর সংস্কার কাজ চালাবে। যদিও ক্লাব সদস্যদের কাছে এই সিদ্ধান্ত ছিল প্রশ্নের মুখে।
প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি কিংবা কোনো কিছু ব্যাখ্যাও দেননি। তিনি ওই সময় শুধু বলেছিলেন, ‘বড় কোনো খেলোয়াড়কে ক্লাবে আনা এবং তার পারিশ্রমিক মিলিয়ে স্টেডিয়াম সংস্কারের চেয়ে বেশি অর্থ ব্যায় হবে।’
কিন্তু লা লিগা এবং উয়েফা চ্যাম্পিয়নশিপে রিয়াল মাদ্রিদের বাজে সূচনা এখন আবার নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে কর্তৃপক্ষকে। এরই মধ্যে প্যারিসে নেইমারের বর্তমান অবস্থা আবারও আশাবাদী করে তুলেছে লজ ব্লাঙ্কোজদের।
আইএইচএস/জেআইএম