আবারও হার ম্যানইউর : শঙ্কায় মরিনহোর ভবিষ্যৎ
একের পর এক পরাজয়ে বিধ্বস্ত ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাটেড। দুঃসময় যেন পিছুই ছাড়ছে না হোসে মোরিনহো এবং তার শিষ্যদের। এই সপ্তাহে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক টুর্নামেন্ট মিলিয়ে জয় অধরিই রইল ম্যানইউর। ২২ সেপ্টেম্বর প্রিমিয়ার লিগে উলভসের সঙ্গে ড্র করার পর ফুটবল লিগ কাপের তৃতীয় রাউন্ডে ডার্বি কাউন্টির মত দলের কাছে হার। এরপর শনিবার প্রিমিয়ার লিগে ওয়েস্ট হ্যামের কাছে বিধ্বস্ত হতে হলো ৩-১ গোলে। একের পর এক পরাজয়ে শঙ্কাতেই পড়ে গেলো ম্যানইউর ভবিষ্যৎ।
এরই মাঝে তিনদিন ছিল কোচ মরিনহো আর দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় পল পোগবার মাঝে বিরোধ। সেই বিরোধ মিটিয়ে পগবা মাঠে ফিরলেও ম্যানইউর খেলায় সেই উত্তাপটা পাওয়া যায়নি। ঝাঁঝটাও উধাও। পগবা ফিরলেও স্যাঞ্চেজ, হেসে লিংগার্ডকে ছাড়াই ম্যাচ শুরু করেন ম্যান ইউর পর্তুগিজ কোচ।
কিন্তু লাভ কিছুই হলো না। ম্যাচ শুরুর পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ম্যানইউ রক্ষণের ফাঁক খুঁজে ম্যাচে এগিয়ে যায় ওয়েস্ট হ্যাম। পাবলো জাবালেতার ক্রস থেকে ওয়েস্ট হ্যামকে এগিয়ে দেন ফিলিপ অ্যান্ডারসন।
এরপর বিক্ষিপ্ত কয়েকটি সুযোগ তৈরি করলেও গোলের তালা খুলতে পারেননি অ্যান্থোনি মার্শাল এবং লুকাকুরা। প্রথমার্ধের মাঝামাঝি সময় লুকাকুর হেড পোস্টে লেগেও প্রতিহত হয়। ম্যান ইউ’র হতাশা আরও বাড়িয়ে প্রথমার্ধের শেষদিকে আত্মঘাতী গোলে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় ওয়েস্টহ্যাম। ইয়ার্মোলেঙ্কোর গোল লক্ষ্য করে শট ম্যান ইউর ডিফেন্ডার ভিক্টর লিন্ডলফের পায়ে লেগে প্রতিহত হয়ে জড়িয়ে যায় জালে।
দ্বিতীয়ার্ধের ৭০ মিনিটে নির্বিষ পগবাকে মাঠ থেকে তুলে নেন মোরিনহো। এর ঠিক পরের মিনিটেই ব্যবধান কমায় ম্যান ইউ। কর্নার থেকে থেকে ভেসে আসা বল ব্যাকফ্লিক করে ওয়েস্ট হ্যামের জালে জড়িয়ে দেন রাশফোর্ড। যদিও ফের ব্যবধান বাড়িয়ে নিতে মাত্র তিন মিনিট সময় নেয় ওয়েস্ট হ্যাম। ৭৪ মিনিটে ঠিকানা লেখা থ্রু থেকে গোল করতে কোন ভুল করেননি আর্নোতোভিচ। ম্যান ইউর ম্যাচে ফেরার আশা শেষ হয়ে যায় ওখানেই। ৩-১ গোলে হেরেই মাঠ ছাড়তে হয় মোরিনহোর ছেলেদের।
লিগ শীর্ষে থাকা লিভারপুলের সঙ্গে আট পয়েন্টের ব্যবধান নিয়ে এদিন মাঠে নামে মোরিনহোর শিষ্যরা। কিন্তু অ্যাওয়ে ম্যাচে এই হার পগবাদের লিগের লড়াইয়ে পিছিয়ে দিল অনেকটাই। সাত ম্যাচ থেকে ম্যান ইউ’য়ের সংগ্রহ ১০ পয়েন্ট। তারা রয়েছে তালিকার ১০ নম্বরে। ব্রাইটন এবং হোভ আলবিওনকে হারিয়ে ম্যানচিসিটিই উঠে গেছে শীর্ষে।
ওয়েস্ট হ্যামের কাছে বিধ্বস্ত হওয়া নিয়ে কোচ হোসে মরিনহো বললেন, ‘যে দলের ভাল খেলার সব ক্ষমতা আছে তাদের পাঁচ মিনিটে ০-১ পিছিয়ে পড়া ভাল দেখায় না। তবে গোলটা অফসাইড ছিল। লাইন্সম্যান দেখেননি। দ্বিতীয় গোলের প্রসঙ্গে বলি, সবাই জানত আন্দ্রি ইয়ারমেলেঙ্কো বাঁ পায়ের ফুটবলার। অথচ ওকে সেই বাঁ পায়ে শট মারতে দিল।’
ওয়েস্ট হ্যামকে অভিনন্দন জানিয়ে মরিনহো বলেন, ‘দ্বিতীয়ার্ধেও আমরা নিজেদের খেলাটা খেলতে খানিকটা সময় নিয়েছি। আর আমাদের গোলরক্ষক কয়েকটা ভাল সেভ করেছে। ওয়েস্ট হ্যামকে অভিনন্দন জানাতে চাই, ইসা দিয়ুপের মতো ডিফেন্ডার খুঁজে পাওয়ার জন্য। বয়স মাত্র একুশ। এই বয়সেই দৈত্যের মতো প্রাচীর গড়ে লড়াই করল।’
মরিনহো এবং তার দলের এমন পারফরম্যান্সের পর প্রশ্ন উঠলো, আর কতদিন ম্যানইউ পরিচালনা বোর্ড সহ্য করবে মরিনহোকে? পল স্কোলস বলে দিলেন, ‘আমি তো বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই দেখছি ওরা জঘন্য খেলে যাচ্ছে।’ একধাপ এগিয়ে ফার্ডিনান্ডের মন্তব্য, ‘মোরিনহোর ব্যাপারে এবার অন্তত ক্লাবকে বড় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এমন অসংগঠিত ফুটবল সেই বার্তাই দিচ্ছেন।’
আইএইচএস/আরআইপি