মঙ্গলবার ঢাকায় শুরু ‘দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ’
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম এলাকা যেন ঘুম থেকে জাগেনি। অথচ ২৪ ঘণ্টা পর দেশের প্রধান এ স্টেডিয়ামে শুরু হবে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। টুর্নামেন্টের পোষাকি নাম সাফ সুজুকি কাপ। যে টুর্নামেন্ট ইতোমধ্যেই খ্যাতি পেয়েছে ‘দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ’ হিসেবে।
রাত পোহালেই যে ভেন্যুতে এ অঞ্চলের সেরা টুর্নামেন্ট সেখানে পা রাখলে অবশ্য কিছুই বোঝার উপায় নেই। বাংলাদেশ তৃতীয়বারের মতো এ টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে। তবে আগের দুই আসরের মতো এবার ফুটবলপ্রেমীদের মন সেভাবে ছুঁতে পারছে না সাফ সুজকি কাপ। ফুটবলের সুরটা পুরো বেজে ওঠেনি। কোথায় যেন ছন্দপতন।
তবে সোমবার দুপুরের পর থেকে মতিঝিলের বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন ভবন একটু গমগম করেছিল। মনে হয়েছে কিছু একটা হতে যাচ্ছে ঢাকায়। টুর্নামেন্টের লোগো উম্মোচন, অংশগ্রহনকারী ৭ দলের ম্যানেজার্স মিটিং এবং ভারত বাদে বাকি দলগুলোর কোচদের টুর্নামেন্টপূর্ব সংবাদ সম্মেলন ঘিরে দিনভর মানুষে গিজগিজ করেছে ভবন।
দক্ষিণ এশিয়ার এই ফুটবল টুর্নামেন্টের সর্বশেষ ৩ আসরের ফাইনাল খেলা আফগানিস্তান এবার নেই। সাফ অঞ্চল থেকে বেড়িয়ে গেছে ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়নরা। সর্বাধিক ৭ বারের চ্যাম্পিয়ন ভারত পাঠিয়েছে তাদের অনূর্ধ্ব-২৩ দল। ফুটবলবোদ্ধারা মনে করছেন, এবারের ৭ দল শক্তিতে খুব কাছাকাছি। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ টুর্নামেন্টই আশা করছেন সবাই।
সার্ক গোল্ডকাপ নামে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল টুর্নামেন্ট যাত্রা শুরু করেছিল ১৯৯৩ সালে পাকিস্তানের লাহোর থেকে। চার দল নিয়ে হয়েছিল ওই টুর্নামেন্ট। বাংলাদেশ খেলেনি সার্ক গোল্ডকাপের প্রথম আসরে। দুই বছর পর একই নামে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় আসর বসে শ্রীলংকার কলম্বোয়। বাংলাদেশ অংশ নিয়ে সেমিফাইনাল পর্যন্ত উঠে বিদায় নেয় ভারতের কাছে হেরে।
দুই আসর পর নাম বদলে সার্ক গোল্ডকাপ হয়ে যায় ‘সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সাফ)’ গোল্ডকাপ। নেপালে অনুষ্ঠিত ওই আসর বাংলাদেশ বিদায় নেয় গ্রুপ পর্ব থেকেই। ১৯৯৯ সালে ভারতের গোয়ায় অনুষ্ঠিত আসরে বাংলাদেশ ফাইনালে উঠেছিল প্রথমবারের মতো। হেরে যায় ভারতের কাছে। ২০০৩ সালে প্রথম স্বপ্ন পূরণ হয় বাংলাদেশের। ঢাকায় অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় ফাইনালে টাইব্রেকারে মালদ্বীপকে হারিয়ে।
তার পর থেকেই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ পরিণত হতে থাকে আন্ডারডগে। ২০০৫ সালে পাকিস্তানের করাচিতে বাংলাদেশ ফাইনালে উঠলেও পরের ৫ আসরে বাংলাদেশ চরমভাবে ব্যর্থ হয়। এর মধ্যে ২০০৯ সালে ঢাকায় সেমিফাইনালে পা রাখতে সক্ষম হয়, বাকি আসরগুলোর গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়। এক সময়ের ফেভারিট বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে আস্তে আস্তে চলে যায় গণনার বাইরে। সর্বশেষ ৩ আসরে ৯ ম্যাচ খেলে জয় মাত্র একটি।
মঙ্গলবার শুরু হয়ে সাফ সুজুকি কাপ শেষ হবে ১৫ সেপ্টেম্বর। বাংলাদেশ খেলবে ‘এ’ গ্রুপে ভুটান, নেপাল ও পাকিস্তানের সঙ্গে। ‘বি’ গ্রুপের দল ভারত, মালদ্বীপ ও শ্রীলংকা।
এক নজরে সাফের পূর্বের ১১ আসর
সাল |
আয়োজক |
চ্যাম্পিয়ন |
রানার্সআপ |
১৯৯৩ |
পাকিস্তান |
ভারত |
শ্রীলংকা |
১৯৯৫ |
শ্রীলংকা |
শ্রীলংকা |
ভারত |
১৯৯৭ |
নেপাল |
ভারত |
মালদ্বীপ |
১৯৯৯ |
ভারত |
ভারত |
বাংলাদেশ |
২০০৩ |
বাংলাদেশ |
বাংলাদেশ |
মালদ্বীপ |
২০০৫ |
পাকিস্তান |
ভারত |
বাংলাদেশ |
২০০৮ |
মালদ্বীপ-শ্রীলংকা |
মালদ্বীপ |
ভারত |
২০০৯ |
বাংলাদেশ |
ভারত |
মালদ্বীপ |
২০১১ |
ভারত |
ভারত |
আফগানিস্তান |
২০১৩ |
নেপাল |
আফগানিস্তান |
ভারত |
২০১৫ |
ভারত |
ভারত |
আফগানিস্তান |
আরআই/এসএএস/আরআইপি