লড়াইটা দুই গোলরক্ষক লরিস-সুবাসিচেরও
পুরো এক মাসের বেহুঁশ করা ফুটবল। কত রং ছড়িয়েছিল শুরু থেকে। ছিটকে গেছে কত রথি-মহরাথি। টিকে রইল কেবর দুটি দেশ। ফ্রান্স এবং ক্রোয়েশিয়া। এই দুই দল থেকেই রাশিয়া বিশ্বকাপ বাছাই করে নেবে আগামী চার বছরের চ্যাম্পিয়নকে। সুতরাং, কে হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন? এটা অনেকটাই নির্ভর করলে দুই দলের দুই গোলরক্ষকের ওপর।
চলতি বিশ্বকাপের শুরু থেকে যেভাবে গোলপোস্ট সামলে হুগো লরিস এবং ড্যানিয়েল সুবাসিচ দলকে তুলে এনেছে বিশ্বকাপের ফাইনালে, তাতে নিশ্চিত ফাইনালে লড়াই হবে বিশ্বসেরা এই দুই গোলরক্ষকেরও। লরিস না সুবাসিচ- কে হবে শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন?
আজ রাতেই পর্দা নামছে যাচ্ছে ফুটবল মহাযজ্ঞ রাশিয়া ফুটবল বিশ্বকাপ ২০১৮-এর। ফাইনাল শুরুর বাকি আর কিছুক্ষণ। দু’দলই সেরে নিয়েছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। তবে ম্যাচে তারকা খেলোয়াড়দের দিকে যতটাই লক্ষ্য রাখা হোক না কেন দলের জয়ে কিন্তু মূল ভুমিকা রাখবে গোলরক্ষকরাই। মাঠে তাদের সেরা খেলার উপরই নির্ভর করবে, কারা নিতে চলেছে এবারের রাশিয়া বিশ্বকাপ।
দু’দলের গোলরক্ষকই রয়েছেন নিজেদের ক্যারিয়ারের সেরা ফর্মে। ফ্রান্সকে ফাইনালে তুলতে যেমন লরিসের প্রশংসা করতে হবে তেমনি মধ্যম সারির একটি দল নিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছানোর সুবাসিচের ভূমিকাও নেহাতই কম নয়। ইতিমধ্যেই বনে গেছেন ক্রোয়েশিয়া সমর্থকদের মধ্যমনি।
বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এক গোল আর শেষ ষোলোয় আর্জেন্টিনার বিপক্ষে তিন গোল হজম করলেও, বাকি তিন ম্যাচে লরিস সুরক্ষিত রাখেন ফ্রান্সের গোলবার। হতে দেননি একটি গোলও। কোয়ার্টার ফাইনাল এবং সেমিতে যেন লরিস আরও বেশি অপ্রতিরোধ্য। ঠেকিয়েছেন প্রতিপক্ষ দলের অনেকগুলো গোলের সুযোগ।
সেমিতে বেলজিয়ামের সাথে হাড্ডা-হাড্ডি লড়াইয়ের মাঝে ক্লাব সতীর্থ টবি অ্যালডারউইয়ারল্ড প্রায় গোল হয়ে যাওয়া একটি জোরালো শট দুর্দান্ত ক্ষিপ্রতায় ফিরিয়ে দিয়েছিলেন টটেনহাম হটস্পারে খেলা এই গোলরক্ষক। লরিস তার খেলা পাঁচ ম্যাচে মোট গোল ঠেকিয়েছেন ১০টি। যা কিনা ক্রোয়েশিয়ান গোলরক্ষক সুবাসিচের চেয়ে দুটি বেশি।
তবে গোল ঠেকানোয় লরিসের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও একদিক থেকে তো ইতিমধ্যেই বিশ্বকাপের ইতিহাসে নাম লিখে বসে আছেন সুবাসিচ। শেষ ষোলোর ম্যাচে ডেনমার্কের বিপক্ষে টাইব্রেকারে সেভ করেছেন ডেনমার্ক খেলোয়াড়দের তিন তিনটি শট। এছাড়াও এক বিশ্বকাপে রেকর্ড চারটি পেনাল্টি ঠেকানোর কৃতিত্ব এখন তার।
রাশিয়ার বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচটিও টাইব্রেকে গড়িয়ে যায় এবং রাশানদের পেনাল্টি ঠেকিয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী এই গোলরক্ষক। বাকি ম্যাচগুলোয় ক্রোয়েশিয়ার জয়েও রাখেন দারুণ ভূমিকা। বিশ্বকাপে পাঁচটি গোল হজম করলেও গোল ঠেকিয়েছেন ৮ টি।
মূলতঃ ফ্রান্স আর ক্রোয়েশিয়া দু’দলের ফাইনালে পৌঁছাতে শুরু থেকেই অবদান ছিল এই দু’দলের গোলরক্ষকদের। তাই আজ ফ্রান্স যেমন নিজেদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ ঘরে তোলার লক্ষ্যে লরিসের দিকে তাকিয়ে থাকবে তেমনি ক্রোয়েশিয়া তাদের প্রথম বিশ্বকাপ জেতার লক্ষ্যে তাকিয়ে থাকবে টাইব্রেকার স্পেশালিস্ট ড্যানিয়েল সুবাসিচের দিকে।
এসএস/আইএইচএস/জেআইএম