দেখা হবে কাতারে
রোমাঞ্চ, উত্তেজনা, অঘটন কী ছিল না ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে। চার বছর পর আশা বিশ্বকাপে ঠিক এরকম উন্মাদনার জন্যেই মুখিয়ে থাকে পুরো পৃথিবীর প্রায় ৭০০ কোটি মানুষ। তাদেরকে হতাশ হতে হয়নি এবার। ফেবারিটদের পতন হলেও একটা বিশ্বকাপে ঠিক যত রঙ থাকা উচিৎ তার থেকেও বেশি ছিল রাশিয়াতে।
৩১ দিনের ম্যারাথন শেষে বিশ্বকাপের মশাল চলে যাবে কাতারের হাতে। ২০১০ সালে জুরিখে এক ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রতাপশালী যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ করে নেয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে তখন থেকেই চলছিল নানা আলোচনা-সমালোচনা।
২০১৪ সালে বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে কাতারের নাম ঘোষণার বিরুদ্ধের দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এক পর্যায়ে মনেও হচ্ছিল হয়তো, ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হতে কাতারের নাম মুছে ফেলা হতে পারে। কিন্তু সেসব কিছুকে পাশ কাঁটিয়ে ২০২২ সালের বিশ্বকাপের আয়োজক হতে পুরোদমে প্রস্তুত কাতার।
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ হওয়াতে কাতারে অন্য দেশগুলোর তুলনায় গরমটা একটু বেশিই বৈকি। আবহাওয়ার কথা চিন্তা করে প্রথমবারের মত বিশ্বকাপ আয়োজন করা হবে নভেম্বর মাসে। তখন কাতারে শীতকাল থাকায় খেলোয়াড়দেরও সুবিধা হবে। তাছাড়া শোনা যাচ্ছে কাতারেই ৪৮ বিশ্বকাপ অংশ নেওয়ার কথা। তবে আদৌ এটা সম্ভবপর হবে কি না সেটা ফিফার পরবর্তী বৈঠকেই বোঝা যাবে। তবে ৪৮ হোক কিংবা ৩২ দল হোক।
মোট ৮টি অত্যাধুনিক স্টেডিয়ামে খেলানো হবে ম্যাচগুলো। হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে এই স্টেডিয়ামগুলো তৈরি করছে তারা। কাতার বিশ্বকাপ যে সকলের মনে ভিন্ন আলোড়ন সৃষ্টি করার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে সেটা এখন থেকেই আঁচ করা যাচ্ছে।
সম্প্রতি কাতার বিশ্বকাপ কমিটির প্রধান হাসান আল তাওয়িদি জানিয়েছেন, ‘আমরা চাপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত। বিশ্বকাপের থেকে বড় কোন প্লাটফর্ম নেই নিজেদেরকে জানানোর। রাশিয়া অসাধারণ একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছে। মানুষের মনে গেঁথে রাখার মত একটি বিশ্বকাপ আয়োজন করেছে তারা। আমরা বিশ্বাস করি রাশিয়ার এই আয়োজনের পর মানুষের প্রত্যাশাও অনেক বাড়বে। আমরা নিজেদের নিয়ে আত্মবিশ্বাসী সেটা পূরণ করতে পারবো।’
কাতার মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে কি না সেটা হয়তো সময়েই বলে দিবে কিন্তু রাশিয়া বিশ্বকাপের পর আবারো ৪ বছর ৪ মাসের অপেক্ষা ফুটবল অনুরাগীদের ফিরিয়ে আনছে এশিয়ার মাটিতে। ফুটবল উন্মাদনায় ছেয়ে যাক পুরো কাতার তথা সারাবিশ্ব। চার বছর পর আবারো বিশ্বকাপ ফুটবলে দেখা হবে কাতারে। ততদিন না হয় বিশ্বকাপের হাসি, কান্না, আনন্দ, কষ্টের স্মৃতিতে ডুবে থাকুক ফুটবল পাগল আপামর মানুষ।
আরআর/জেআইএম