ফাইনালের জন্য প্রস্তুত মদ্রিচের শহর ‘জাদার’
ডায়নারিক আল্পস। ইতালি, কসোভো, বসনিয়া অ্যান্ড হার্জেগোভেনিয়া, আলবেনিয়া, মন্টেনেগ্রো, সার্বিয়া, স্লোভেনিয়া এবং ক্রোয়োশিয়ায় এই আল্পস অবস্থিত। ক্রোয়েশিয়ার অন্তর্ভুক্ত আল্পসের পাদদেশে বসবাস করতো অনেকগুলো পরিবার। যাদের নিত্যনৈমিত্তিক কাজ ছিল গাছ কেটে নিজেদের পেট চালানো।
জাদার শহরের ঠিক পাশেই ডায়নারিক আল্পসের পাদদেশে এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন লুকা মদ্রিচ। মদ্রিচের ছোটবেলাটা ছিল অনেক কষ্টের। এখনকার আফগানিস্তান, ইরাক কিংবা সিরিয়ার বাচ্চারা যেমন ঘুম থেকে উঠে যুদ্ধ দেখে মদ্রিচের ছোটবেলাটাও ছিল ঠিক তেমন।
সেই ছোট্ট মদ্রিচের শহর জাদার এবার পুরোপুরি প্রস্তুত বিশ্বকাপের জন্য। জাদার হচ্ছে ক্রোয়েশিয়ার সবচেয়ে পুরাতন ঘনবসতিপূর্ণ শহর। ভ্রমণপিয়াসু মানুষদের জন্য বেশ পরিচিত এই জাদার। এই শহরের ৪ জন ফুটবলারই আজ ফ্রান্সের বিপক্ষে বিশ্বকাপের ফাইনালে মাঠে নামার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়ার হয়ে দুর্দান্ত খেলা ড্যানিয়েল সুবাসিচ, রাইট ব্যাক সিমে ভ্রাসালকো এই জাদার শহরেই জন্মগ্রণ করেন। তাছাড়া রিজার্ভ গোলরক্ষক ডোমিনিক লিভাকোভিচেরও জন্ম এখানে।
১৯৬৪ সালে চিত্র পরিচালক হিচকক একবার বলেছিলেন, ‘সূর্যাস্ত দেখার জন্য জাদার হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা। ফ্লোরিডার থেকেও এটি বেশি সুন্দর। প্রত্যেক সন্ধ্যাতেই এটার সৌন্দর্য একদিনের থেকে অন্যদিনকে হার মানায়।’ সেই জাদারের সূর্যাস্তের সময়েই বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলার জন্য মাঠে নামবে ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলাররা।
ড্যানিয়েল সুবাসিচের বাবা ৬৩ বছর বয়সী জোভান জাগরেবের এই শহরেই বসবাস করেন। যখন জোভান ফুটবল খেলতেন তখন ছয় বছর বয়স্ক সুবাসিচ টিভিতে বসে ফুটবল উপভোগ করতেন। সুবাসিচের মা ৬২ বছর বয়সী বোয়া টিভিতে বসে ছেলের বীরত্বগাঁথা উপভোগ করেছেন। ক্রোয়েশিয়া এবং মোনাকোর হয়ে সুবাসিচির সব অর্জন এবং ফুটবলে তার সবকিছু নিয়ে একটি রুম ভর্তি করে রেখেছেন তিনি।
সুবাসিচের মতো ভ্রাসালকো, মদ্রিচ, লিভাকোভিচের পরিবারও বিশ্বকাপের উন্মাদনা ভাসছে। মোটকথা, পুরো জাদার শহরই প্রস্তুত বিশ্বকাপের ফাইনাল দেখার জন্য। তারা যদি বিশ্বকাপ জিততে নাও পারে তবুও তাদের নিয়ে গর্বের শেষ হবে না এই জাদার শহরের।
আরআর/পিআর