চোখের সামনে যখন ৯ কিংবদন্তী ফুটবলার
সোনালী দিনগুলো পেছনে ফেলে আসা কিংবদন্তী ফুটবলারদের কদর বাড়ে বড় বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট হলে। বিশ্বকাপেতো কথাই নেই। বিভিন্ন প্রজন্মের সুপারস্টাররা বিভিন্ন মিডিয়ায় বিশেষজ্ঞ বিশ্লেষণের জন্য চলে আসেন বিশ্বকাপে।
বিশ্বকাপের নানা খবর সংগ্রহের পাশপাশি সাবেক তারকাদেরও খুঁজতে থাকেন বিভিন্ন দেশ থেকে আসা গণমাধ্যমকর্মীরা। কারো সঙ্গে কোথাও দেখা হলেই শুরু হয়ে যায় অটোগ্রাফ, সেলফি। সেই সঙ্গে নিউজের কিছু উপাত্ত।
রাশিয়া বিশ্বকাপে পা পড়েছে অনেক কিংবদন্তী ফুটবলারের। বিভিন্ন সময়ে তাদের সান্নিধ্যের সুযোগও হয়েছে। কিন্তু এক সঙ্গে ৯ জন কিংবদন্তীকে পাওয়া তো ভাগ্যেরই ব্যাপার। সে সুযোগ এসেছিল ফিফার বিশেষ এক ম্যাচ আয়োজনের কারণে।
১১ জুলাই মস্কোর রেড স্কয়ারের ফুটবল পার্কে ফিফার ৯ জন কিংবদন্তী ফুটবলার ও রাশিয়ার সাবেক কয়েকজন তারকা নিয়ে আয়োজন করেছিল ৪০ মিনিটের সিক্স-এ সাইড ম্যাচ। অস্থায়ীভাবে বানানো পরিপাটি সিনথেটিক টার্ফ। এমনভাবে সাজানো হয়েছিল যেন বিয়ে বাড়ি। সেখানেই ম্যাচ এবং ম্যাচের আগে-পরে মিলিয়ে ঘন্টা খানেক মাতিয়ে রাখলেন এক ঝাঁক সাবেক সুপারস্টার।
ক্রোয়েশিয়া-ইংল্যান্ড দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মিডিয়া ট্রিবিউনের ঠিক পাশে বসে খেলা দেখলেন বিশ্ব ফুটবলের সাবেক কিংবদন্তী। ইংল্যান্ডের অ্যালেন শিয়েরার, গ্যারি লিনেকার ও আর্জেন্টিনার রবার্তো আয়ালা। তাদের উপস্থিতি জানার পরই সেখানে মিডিয়া হুমড়ি খেয়ে পড়লেন। এক পর্যায়ে নিরাপত্তারক্ষীরা এসে সবাইকে সরিয়ে দিলেন।
আর রেড স্কয়ারে যখন এক সঙ্গে এতো তারকা? ব্রাজিলের দুইবার বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য কাফু, জার্মানির ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক লোথার ম্যাথিউজ, আর্জেন্টিনার সাবেক ডিফেন্সিভ মিডিফিল্ডার পাবলো সরিন, উরুগুয়ের সাবেক ফরোয়ার্ড এবং ২০১০ বিশ্বকাপের গোল্ডেন বল বিজয়ী দিয়েগো ফোরলান, পর্তুগালের জার্সি গায়ে ১৪২ ম্যাচ খেলা ফরোয়ার্ড নুনো গোমেজ, মেক্সিকোর সাবেক সুদর্শন গোলরক্ষক জর্জ ক্যাম্পস, স্পেনের সাবেক রাইটব্যাক মিগুয়েল ফার্নান্দেজ, সুইজারল্যান্ডের সাবেক তারকা গোলরক্ষক যুবারবুইয়া ও কলোম্বিয়ার সাবেক ফরোয়ার্ড হুয়ান পাবলো অ্যাঞ্জেলসকে এক সঙ্গে সামনে পাওয়ায় গণমাধ্যমকর্মীদের কী অবস্থা বুঝতেই পারছেন। এদের সঙ্গে রাশিয়ান সাবেক কয়েকজন সুপারস্টারও যে ছিলেন।
সাবেক তারকাদের ম্যাচ মানেই মজা, খুনসুটি। আবার অতীতের মতো ফুটবল পায়ে আলো ছড়ানো। এদের সবার খেলাই দেখা ছিল। তবে টিভি পর্দায়। এই প্রথম কয়েক গজ সামনে এসব সুপারস্টার। মিনি মাঠের গা ঘেঁষেই বানানো হয়েছিল মিনি গ্যালারি। সেখানেই বসার স্থান ছিল মিডিয়া কর্মীদের। একদম হাত ছোঁয়া দূরত্বে। ম্যাচের পরে তো তারকাদের গা ঘেঁষা অবস্থা।
এই যে সামনে কাফু। তিনি কথা বলে সামনে এগুতেই ফোরলান। আবার পাবলো সরিন। লুথার ম্যাথিউজও কুশল বিনিময় করে গেলেন মিডিয়া ও ভক্তদের সঙ্গে। কাফুর ব্রাজিল, সরিনের আর্জেন্টিনা, ম্যাথিউজের জার্মানি, নুনো গোমেজের পর্তুগাল আর ক্যাম্পসের মেক্সিকোর কোনটিই উঠতে পারেনি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। তাইতো নিজেদের দল নিয়ে কম-বেশি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে সবাইকেই।
কথা বলা, করমর্দন করা, অটোগ্রাফ নেয়া, সেলফিবন্দী হওয়া। অসাধারণ এক মুহূর্ত। তাঁরা যে বড় ফুটবলারই নন, বড় মনেরও মানুষ। সেটা খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগটা করে দেয়ায় ফিফা ও আয়োজক কমিটি ধন্যবাদ পেতেই পারে। এক-দুইজন নন, এক সঙ্গে ৯ কিংবদন্তী। তাও আবার এতো কাছে।
আরআই/এসএএস/জেআইএম