ইংল্যান্ডের কাছে সুইডেন ‘খুব ভয়ঙ্কর’
কোয়ার্টার ফাইনালে আপনারাই তো সবচেয়ে সহজ প্রতিপক্ষ পেয়েছেন। তাই আপনি নিশ্চয়ই খুব চাপে নেই? ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেটকে এ প্রশ্ন করার সঙ্গে সঙ্গেই চটে গেলেন তিনি। ক্ষুব্ধ কণ্ঠে তিনি জবাব দিলেন, ‘আপনারা বোধহয় পরিসংখ্যান দেখেননি। সুইডেনের সঙ্গে আমাদের ফল কখনোই ভালো নয়। সুইডেন ভয়ঙ্কর প্রতিপক্ষ। ওদের নিয়ে তাই আমি যথেষ্ট চাপে আছি।’
শনিবার দিনের প্রথম ম্যাচে সুইডেনের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে নামছে গ্যারেথ সাউথগেটের ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপে এর আগে দু’বার মুখোমুখিতে হয়েছিল ইংল্যান্ড-সুইডেন। কোনোবারই সুইডিসদের হারাতে পারেনি ইংলিশরা। ২০০২ বিশ্বকাপে ১-১ ড্র হয়েছিল। ২০০৬ বিশ্বকাপেও ড্র, ২-২ ব্যবধানে।
আগের দু’বারই ছিল গ্রুপ পর্বে। এবার অবশ্য নক আউট পর্বে দেখা হচ্ছে বলে ড্র হওয়ার কোনও সুযোগ নেই। গ্যারেথ সাউথগেট মনে করেন, সুইডেনকে হাল্কা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। তার বক্তব্য, ‘সুইডিসরা খুব সাবলীল ফুটবল খেলে। আর দলের মধ্যে কেউ স্বার্থপর হয়ে খেলে না। তাই ওদের সমীহ করতেই হচ্ছে।’
সুইডেনকে নিয়ে যত চিন্তিত ইংল্যান্ড কোচ, ততটা চিন্তিত নন দলীয় অধিনায়ক হ্যারি কেনকে। তিনি বলেছেন, ‘আমরা মানসিকভাবে দারুণ জায়গায় আছি। কারণ, ১৯৯০ সালের পর এই প্রথম টাইব্রেকারে আমরা কোনও ম্যাচ জিতেছি। এটাই প্রমাণ করে দলের একতা।’
সঙ্গে হ্যারি জুড়ে দেন, ‘এবার বিশ্বকাপের শুরু থেকেই আমি দলের বদলে যাওয়া এই চরিত্র নিয়ে বলছিলাম। কলম্বিয়া ম্যাচে সেই কথাটাই সত্যি প্রমাণ করেছে আমার সতীর্থরা।’
সুইডেনকে নিয়ে চাপে না থাকলেও ম্যাচকে একেবারে হালকাভাবে নিচ্ছেন না হ্যারি কেনও। তার মন্তব্য, ‘ওদের দলে অনেক ভালো ফুটবলার রয়েছে। যারা ম্যাচের রং বদলাতে পারে। তাই আমাদের আত্মবিশ্বাস থাকলেও সতর্ক থাকতে হবে।’
ইংল্যান্ড অধিনায়কের আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে রয়েছে তার পায়ে গোলের বন্যা। ৬ গোল করে তিনিই এখন সর্বোচ্চ স্কোরার হিসেবে গোল্ডেন বুট জয়ের পথে। গত পাঁচটা বিশ্বকাপে একমাত্র ২০০২ সালের বিশ্বকাপে ব্রাজিলের রোনাল্দো ৮ গোল করে ‘গোল্ডেন বুট’ পেয়েছিলেন।
এরপর ‘গোল্ডেন বুট’ জয়ীরা কেউ ৫ বা ৬ গোল করেছিলেন। এবার হ্যারি কেনের পকেটে এখনই ৬ গোল। যা বাড়িয়ে রোনাল্দোকে টপকে যাওয়া অসম্ভব নয়। বিশেষ করে তার গোল করার দক্ষতার সম্ভাবনা দারুণ। ৯টা মাত্র গোলের চেষ্টা থেকে তিনি গোল করেছেন ৬টি। যা বিশ্বকাপে কোনও স্ট্রাইকারের নেই। যদিও এর মধ্যে চারটিই করেছেন পেনাল্টি থেকে।
ইংল্যান্ডকে অবশ্য ভয় পাচ্ছে না সুইডিসরা। দলের তারকা মিডফিল্ডার সেবাস্তিয়ান লারসন প্রায় চ্যালেঞ্জের সুরে বলেছেন, ‘ইংল্যান্ডকে আমরা বরবাদ করে দিতে পারি। আমাদের সেই শক্তি আছে। আমরা কারও দয়ায় এই জায়গায় পৌঁছাইনি। পৌঁছেছি নিজেদের যোগ্যতায়। আর আমরা নিজেদের খেলার দিকেই বেশি নজর দিতে চাই। অন্যদের নিয়ে ভাবতে চাই না।’
লারসন ১৭ বছর কাটিয়েছেন ইংল্যান্ডে। তার ফুটবল জীবনের বেশিরভাগ সময়ই কেটেছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে। এ কারণে ইংল্যান্ডের ফুটবল সম্পর্কে তার ধারণা খুব স্পষ্ট। লারসন বলেন, ‘১৭ বছর ইংল্যান্ডে কাটিয়েছি বলেই এই ম্যাচটা আমার কাছে স্পেশাল। সেটা জিতে ফের সেমিফাইনালে খেলাই এখন আমাদের প্রথম লক্ষ্য।’ ১৯৯৪ সালে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলেছিল সুইডেন। সেবার তারা হেরেছিল ব্রাজিলের কাছে। ইংল্যান্ড শেষবার সেমিফাইনালে উঠেছিল ১৯৯০ সালে। তারা হেরেছিল জার্মানির কাছে।
আইএইচএস/পিআর