বাদল রায়ের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি তার স্ত্রীর
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের তিনবারের নির্বাচিত সহ-সভাপতি বাদল রায়ের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ওয়ারি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তার স্ত্রী মাধুরী রায়। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে এই সাধারণ ডায়েরি করেন তিনি।
গত বছর বাদল রায় প্রচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সিঙ্গাপুর থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে আসেন। সম্প্রতি বাদল রায়কে নিয়ে তার স্ত্রী মাধুরী রায়ের সঙ্গে বাফুফে প্রেসিডেন্ট কাজী সালাউদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগের মোবাইল ফোনে বেশ কথা কাটাকাটি হয়। যার কারণে, শেষ পর্যন্ত বাদল রায়ের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় জিডি করতে বাধ্য হন বাদল রায়ের স্ত্রী মাধুরী রায়।
গত ২৬ মে ওয়ারী থানায় ওই জিডিটি করেন মাধুরী। সেখানে উল্লেখ করা হয়, ‘মার্চের ২৬ তারিখ বেলা ৩টায় আবু নাঈম সোহাগ মোবাইল ফোনে আমাকে হুমকির স্বরে বলেন, বাদল রায় যেন ফেডারেশনে না আসেন। আমি কারণ জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, তিনি যদি আসেনও, তাহলে এসে এক চা খেয়ে চলে যাবেন, এর বেশি নয়। আমার স্বামী তিন তিনবারের ফুটবলে ফেডারেশনের নির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় এ ধরনের ফোন আমার কাছে হুমকি ও বড় ধরনের ষড়যন্ত্রের আভাস বলে মনে হয়। তাই আমার স্বামীর সম্মান ও জীবনের ব্যাপারে আতঙ্কে আছি।’
আজ সকালে মাধুরী রায় এ বিষয় নিয়ে জাগো নিউজকে বলেন, ‘মার্চের শেষের দিকে একবার সোহাগ ফোনে আমার কাছে অভিযোগ করেন, বাদল নাকি ফেডারেশনে গিয়ে সবার সঙ্গে এবং পিয়ন-কর্মচারীদের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করে। এটা-ওটা নিয়ে নানা অভিযোগ করেন, চিৎকার-চেঁচামেচি করে। তিনি যেহেতু ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান, সে কারণে বাফুফের বিভিন্ন কাজের ত্রুটি নিয়ে তিনি কথা বলতে চান। এটাকে তারা ‘চেঁচামেচি’ মনে করেন। সোহাগ আমাকে বলে, ওনার এগুলোর দরকার কী! তিনি অসুস্থ। ফেডারেশনে আসবেন, বসবেন, চা খাবেন এবং গল্পগুজব করে চলে যাবেন।’
সোহাগকে জবাবে কী বলেছেন মাধুরী, সেটাও জানান তিনি। মাধুরী বলেন, ‘তখন আমি সোহাগকে বলি যে, দেখো! বাদল কিন্তু ফুটবল ফেডারেশনে চা খাওয়ার জন্য যায় না। সে সারাটা জীবন ফুটবলের পেছনে ব্যায় করেছে। এমনকি ফুটবলের কারণে বাদল সংসারেও ঠিক মত সময় দেয়নি। তো ফুটবলের কোনো জায়গায় কোনো সমস্যা হলে সেগুলো নিয়ে তো সে কথা বলবেই! আর কর্মচারীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ সে করতে পারে না। আমি এটা বিশ্বাস করি না। কারণ, সে এত ছোট মনমানসিকতার মানুষ নয়। বরং, সোহাগ তুমি একটা কাজ কর, তুমি সালাউদ্দিন ভাইকে বলো, তিনি তো বাদলের বড়। তিনি কোনো সমস্যা মনে হলে সেটা নিয়ে বাদলকে ডেকে কথা বলুক।’
এরপর মাধুরী নিজেই বাফুফে সভাপতিকে ফোন করেন এ বিষয়ে কথা বলার জন্য। তিনি বলেন, ‘তারপর গত ২৬ তারিখ আমি নিজেই বাফুফে সভাপতি সালাউদ্দিন ভাইকে ফোন করি। সালাউদ্দিন ভাইর কথাগুলোও আমার কাছে ভালো লাগেনি। সোহাগ যেহেতু আমাকে বলেছে যে, তার ফেডারেশনে আসার দরকার নেই, কথা বলার দরকার নেই। তখন আমার মনে হয়েছে, যে যদি ফেডারেশনে গেলে কখনও ও অসুস্থ হয়ে যায়, তাহলে তাকে কে নিয়ে যাবে হাসপাতালে? কে দেখবে? কারণ, আমি দেখছি যে, ফুটবল ফেডারেশনের কেউই এখন আর তার সঙ্গে নেই। পরে আমি সোহাগের কথাগুলোরও পর ভিত্তি করেই ওয়ারি থানায় একটা সাধারণ ডায়েরি করি। কারণ, আমি মনে করেছি যে, ফুটবল ফেডারেশনে গেলে বাদল যদি অসুস্থ হয়ে যায়, তাহলে তাৎক্ষনিকভাবে সহযোগিতা করার জন্য কাউকে পাবে না। তার জীবনটাই নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়বে।’
বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ, দু’জনই এই মুহূর্তে সৌদি আরব অবস্থান করছেন। এ কারণে, বিষয়টা নিয়ে তাদের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
আরআই/আইএইচএস/আরআইপি