মেসি নৈপুণ্যে চেলসিকে হারালো বার্সা
কে বলবে এই চেলসিই এক সময় বার্সেলোনাকে বিদায় করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল? সেই সকল ঘটনা শুধুই অতীত। বর্তমানে এই বার্সেলোনার পারফরম্যান্সের ধারে কাছেও নেই ইংলিশ লিগের দলটি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম লেগে ১-১ গোলে কোনোমতে ড্র করলেও ক্যাম্পন্যুতে আর শেষ রক্ষা হয়নি তাদের। লিওনেল মেসির অসাধারণ পারফরম্যান্সে ৩-০ গোলের জয়ে শেষ আটে পৌঁছে গেল বার্সেলোনা।
ম্যাচ শুরুর তিন মিনিটের ভেতরেই কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগে চেলসির জালে বল জড়ান মেসি। ডান পাশ থেকে মেসি-ডেম্বলে জুটিতে বল যায় ডিবক্সে থাকা সুয়ারেজের কাছে। তার ক্রসে ডান পায়ের শটে চেলসির গোলকিপার কর্তোয়ার দুপায়ের ভেতর দিয়ে প্রায় জিরো এঙ্গেল থেকে গোল করে বসেন লিওনেল মেসি। নিজের ফুটবল ক্যারিয়ারের সবথেকে দ্রুততম সময়ে মাত্র ২ মিনিট ৮ সেকেন্ডের মাথায় গোলটি করলেন এই যাদুকর। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৯৯তম গোলটি করেও ক্ষান্ত হননি মেসি। করিয়েছেনও একটি গোল।
ম্যাচের ২০ মিনিটে অসাধারণ এক কাউন্টার এটাক থেকে চেলসির ৩ ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করে মেসি বল পাঠান ডেম্বেলের কাছে। ডেম্বেলের বুলেট গতির শট রুখে দেয়া সম্ভব হয়নি কর্তোয়ার। ফলে ২০ মিনিটে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ে চেলসি। কোয়ার্টারে যেতে হলে তখন তাদের অন্তত ২টি গোল করতেই হবে। এমন অবস্থাতেও খেই হারায়নি চেলসি। একের পর একে আক্রমণ চালিয়ে যায় তারা। সুযোগও পেয়েছিল অ্যান্তনিও কন্তের দল। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে মার্কস আলোন্সোর ফ্রি কিক বার্সার গোলকিপার টের স্টেগানকে পরাস্ত করতে পারলেও পরাস্ত করতে পারেনি গোলবারকে। গোলবারে লেগে বল বাইরে চলে গেলে ম্যাচে ফেরা হয়নি চেলসির।
দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণ বজায় রাখে চেলসি। কিন্তু অধরা গোল যেন ধরাই দিচ্ছিল না তাদের। ৫০ মিনিটে মার্কস আলোন্সোকে ডিবক্সে ফাউল করলেও রেফারি পেনাল্টি সিদ্ধান্ত দেননি। উল্টো পেনাল্টি না দেয়ার প্রতিবাদ করাতে জিরুড পান হলুদ কার্ড। ৫৭ মিনিটে ইনিয়েস্তাকে উঠিয়ে পাউলিনহোকে নামান বার্সা কোচ। চেলসির আক্রমণ প্রতিহত করার জন্যেই মূলত এই কৌশল।
৬৩ মিনিটে আবারও মেসি ম্যাজিক। আবার সুয়ারেজের পাস থেকে ডিবক্সের বাইরে থেকে বল নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন মেসি। বা পায়ের জোড়ালো শটে কর্তোয়ার পায়ের নিচ দিয়ে আবারও বল জালে জড়ান এই আর্জেন্টাইন। ফলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে কম ম্যাচ খেলে ১০০ গোল করার রেকর্ড স্পর্শ করলেন এই ফুটবলার। মেসির যেখানে ১০০ গোল করতে লাগলো ১২৩ ম্যাচ সেখানে রোনালদোর লেগেছিল ১৩৭ ম্যাচ।
৩-০ গোলে এগিয়ে থাকায় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায় বার্সেলোনার কোয়ার্টার ফাইনাল। কেননা চেলসিকে তখন বাকি ২৭ মিনিটে করতে হতো ৩ গোল। ম্যাচের ৮৯ মিনিটে রুডিগারের হেড আবারও বারে লেগে ফিরে আসলে গোলবঞ্চিত হয় চেলসি। এই জয়ে শেষ দল হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আট নিশ্চিত করলো বার্সেলোনা। এর আগে স্পেন থেকে দুইটি, ইংল্যান্ড থেকে দুইটি, জার্মানি থেকে দুইটি এবং ইতালি থেকে দুইটি দল কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে।
আরআর/বিএ