নতুনত্ব আসছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে
শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করছে চট্টগ্রাম আবাহনী। টুর্নামেন্টের তৃতীয় আসর কবে শুরু হবে তা চূড়ান্ত না হলেও আয়োজক ক্লাব কাজ গুছিয়ে আনা শুরু করেছে। এ বছরের শেষ দিকে ৮ দলের এ টুর্নামেন্ট আয়োজনের চিন্তাভাবনা করছে চট্টলার জায়ান্টরা।
চট্টগ্রাম আবাহনীর মহাসচিব শামসুল হক চৌধুরী এমপি জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, সেপ্টেম্বরে না হলে অক্টোবরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জেষ্ঠ পুত্রের নামের এ টুর্নামেন্টের তৃতীয় আসর আয়োজন করতে চান তারা।
চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের সর্বশেষ আসর বসেছিল গত বছর ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ। প্রথম টুর্নামেন্ট হয়েছিল ২০১৫ সালের ২০ থেকে ৩০ অক্টোবর। বিদেশি ক্লাবগুলো পাওয়া নিয়ে জটিলতার কারণে টুর্নামেন্টের সময় নির্দিষ্ট রাখতে পারেনি চট্টগ্রাম আবাহনী। আগামীতে বছরের একটা নির্দিষ্ট মাসে এ টুর্নামেন্ট আয়োজন করার কথাও জানিয়েছেন শামসুল হক চৌধুরী এমপি।
প্রথম দুই আসরেই বাংলাদেশের ৩ টি করে ক্লাব খেলেছে এই টুর্নামেন্টে। আয়োজক চট্টগ্রাম আবাহনীর পাশাপাশি অংশ নিয়েছে দেশের দুই জনপ্রিয় ক্লাব মোহামেডান ও আবাহনী। এর মধ্যে প্রথম আসরে ভারতের ইস্টবেঙ্গল ও মোহামেডানের অংশগ্রহণ ছিল এই টুর্নামেন্টে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ক্লাব দুটি সর্বশেষ আসরে আসতে পারেনি। আয়োজক ক্লাব ভারতের দুটি ক্লাব নিয়েই এবার টুর্নামেন্ট করতে চায়। শামসুল হক চৌধুরীর ইচ্ছে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে মোহনবাগানকে আনা।
‘আমরা নতুনভাবে এ টুর্নামেন্ট করবো। প্রথম দুইবার আমাদের দেশের ৩ ক্লাব ছিল। এবার একটি বাড়বে। বাংলাদেশের ৪ ক্লাবের সঙ্গে টুর্নামেন্টে থাকবে বিদেশি ৪ ক্লাব। এর মধ্যে ভারতের দুটি। অন্য দুটি দক্ষিণ এশিয়ার কিংবা এর বাইরেরও হতে পারে। মালদ্বীপের ক্লাব থাকতে পারে। তবে আফগানিস্তান ও শ্রীলংকার ক্লাবের দিকে আমাদের নজর কম। এ দেশ দুটি থেকে দল আনতে খরচ বেশি। তার চেয়ে থাইল্যান্ড থেকে দল আনা ভালো’-বলেছেন চট্টগ্রাম আবাহনীর মহাসচিব।
টুর্নামেন্টের সময় নির্ভর করছে ভারতের দুই ক্লাবের উপর। শামসুল হক চৌধুরীর কথা, ‘ভারতের দুই ক্লাব ছাড়া আমরা টুর্নামেন্ট করতে চাচ্ছি না। কারণ, ভারতের ক্লাব থাকলে টুর্নামেন্ট জমে ভালো। ওদের সঙ্গে আলোচনা করবো। তারপর সময় নির্ধারণ করবো।’
গত আসরের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিল সাইফ গ্লোবাল স্পোর্টস। কেউ কেউ বলছেন, এবার এ প্রতিষ্ঠানটির আগ্রহ কম। তবে সাইফ গ্লোবাল স্পোর্টসের কর্ণধার তরফদার মোহাম্মদ রুহুল আমিন অবশ্য বলেছেন, তারা আছেন এ টুর্নামেন্টের সঙ্গে।
তবে গত আসরের কিছু সমস্যার কথা তিনি বলেছেন, ‘তৃতীয় আসর কবে হবে তা এখনো ঠিক হয়নি। সর্বশেষ আসরের অনেক টাকা-পয়সা এখনো পাইনি। ৪ কোটি টাকার মতো আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে গেছে। এখন দেখি আলোচনা করে। কোথা থেকে কিভাবে টাকা আসবে এসব নিয়ে বসবো। তবে এতটুকু বলবো এ বছর টুর্নামেন্ট হবেই। আমরা বাফুফের সঙ্গে আলোচনা করে সময় বের করবো।’
এ বছর ডিসেম্বরে হওয়ার কথা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ। তাহলে তিন-চার মাসের মধ্যে দুটি টুর্নামেন্ট কি সম্ভব? ‘আমরা বাফুফের সঙ্গে সমন্বয় করে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপ এবং শেখ কামাল ক্লাব কাপ আয়োজন করবো। এবার হয়ে গেলে আমাদের পরিকল্পনা থাকবে এক বছর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ হলে আরেক বছর শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ। তবে আবারও বলছি, এ বছরের টুর্নামেন্ট হবেই’-বলেন তরফদার মোহাম্মদ রুহুল আমিন।
টুর্নামেন্ট চট্টগ্রাম আবাহনীর জন্যই স্মরণীয় এক আয়োজন। ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম আসরে তারাই হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন। ফাইনালে তারা হারিয়েছিল ভারতের ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে। যদিও দ্বিতীয় আসরের ফাইনালে উঠতে পারেনি স্বাগতিকরা। সেমিফাইনালে দক্ষিণ কোরিয়ার দল এফসি পচেয়নের কাছে ২-১ গোলে হেরে বিদায় নেয় চট্টগ্রামের আকাশি-হলুদ জার্সিধারীরা। দ্বিতীয় আসরের ট্রফি নিয়ে যায় মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস। ১২০ মিনিটের ফাইনালে তারা ৪-২ গোলে হারায় দক্ষিণ কোরিয়ার এএফসি পচেয়নকে।
আরআই/এমএমআর/পিআর