১৮ মাস পর খেলতে নামছে জাতীয় ফুটবল দল
শেষ কবে আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলেছে বাংলাদেশ? এ প্রশ্নে অনেকেই মাথা চুলকাবেন। সময় তো আর কম হলো না। সেই ২০১৬ সালের ১০ অক্টোবর ভুটানের থিম্পুতে সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
স্বাগতিকদের কাছে ৩-১ গোলের লজ্জার হারের পর গত প্রায় দেড় বছর আর আন্তর্জাতিক ম্যাচে পা পড়েনি বাংলাদেশের। ফিফা ও এএফসি আয়োজিত সিনিয়র কোনো টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগও ছিল না ওই হারের পর।
বাফুফে নিজেরাও কোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন করেনি, কোনো আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলার উদ্যোগও নেয়নি। এক কথায় অস্তিত্বহীন বাংলাদেশের জাতীয় দল। কেবল বয়স ভিত্তিক টুর্নামেন্টের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অঙ্গন।
দীর্ঘ প্রায় ১৮ মাস পর ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ দিয়ে আবার আন্তর্জাতিক ফুটবলে পা পড়ছে বাংলাদেশের। আগামী ২৭ মার্চ লাওসে গিয়ে একটি ম্যাচ খেলবে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। রোববার বাফুফের ন্যাশনাল টিমস কমিটির সভায় লাওসের সঙ্গে ম্যাচ খেলা ছাড়াও সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ সামনে রেখে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
জাতীয় দল না থাকলেও জাতীয় দলের কোচ আছে বাফুফের। অ্যান্ড্রু ওর্ড নামের ইংলিশ বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান কোচ নিয়োগ পেয়েছেন বছরখানেক আগে। ঘরোয়া খেলা দেখা, ছুটি কাটানো আর কখনো কখনো বয়সভিত্তিক দলের সঙ্গে কাজ করেই সময় কাটিয়েছেন জাতীয় ফুটবল দলের কোচ। অবশেষে তিনি পুরোদমে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন।
সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ। গত তিন আসরে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়া বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব ফিরে পেতে বেশ আঁটঘাট বেধেই নামছে। প্রায় ৮ মাস টানা অনুশীলন আর ম্যাচের মধ্যে রাখা হবে ফুটবলারদের।
বাফুফের টেকনিক্যাল অ্যন্ড স্ট্র্যাটেজিক ডাইরেক্টর পল স্মলি ও জাতীয় দলের কোচ অ্যান্ড্রু ওর্ড সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ নামনে রেখে একটা পরিকল্পনা জমা দিয়েছে বাফুফেকে। সেই প্রেসক্রিপশন নিয়েই রোববার সভা করেছে ন্যাশনাল টিমস কমিটি।
লাওসের বিরুদ্ধে ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচের দেড় মাস আগে ১৩ ফেব্রুয়ারি আবাসিক ক্যাম্প শুরু করবে বাফুফে। লম্বা সময়ের জন্য এ ক্যাম্প হবে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি)। ন্যাশনাল টিমস কমিটি ৪০ জনের মতো খেলোয়াড় নিয়ে আবাসিক ক্যাম্প শুরু করার কথা ভাবছে।
সভা শেষে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ বলেছেন,‘আমরা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ সামনে রেখে জাতীয় দলের ক্যাম্প শুরু করতে যাচ্ছি। লাওসের সঙ্গে ম্যাচ হবে। আমরা চেষ্টা করবো ফিফা উইন্ডোতে আর কিছু ম্যাচ খেলার।’
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রস্তুতির জন্য ১ কোটি ২০ লাখ টাকা খরচ হবে বাফুফের। কোচিং স্টাফে যোগ হবেন আরো দুই বিদেশি। একজন গোলরক্ষক কোচ ও একজন ফিটনেস কোচ দ্রুত নিয়োগ দেয়ার বিষয়টি অনুমোদিত হয়েছে ন্যাশনাল টিমস কমিটির সভায়।
‘টেকনিক্যাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক ডাইরেক্টর পল স্মলি ও জাতীয় দলের কোচ অ্যান্ড্রু ওর্ড নতুন দুই কোচ পছন্দ করে তাদের বায়োডাটা আমাদের দেবেন। আমরা কোচদের সঙ্গে নিয়োগের যাবতীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। কোচ নিয়োগের সব এখতিয়ার বাফুফের’-বলেছেন আবু নাইম সোহাগ।
এর আগে ব্রুনাই ও কম্বোডিয়ার সঙ্গে ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলার কথা বলেছিল বাফুফে। দেশ দুটির সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো সাড়া না পেয়ে বিকল্প হিসেবে লাওসকে বেছে নেয়া হয়েছে। ঠিক ১৫ বছর আগে ২০০৩ সালের ২৭ মার্চ লাওসের সঙ্গে প্রথম মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ। এশিয়ান কাপের বাছাই লাওসের মাঠে বাংলাদেশ হেরেছিল ২-১ গোলে।
আরআই/এমএমআর/আরআইপি