ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

গোল মিসের মহড়ায় সুফিলে মুক্তি

রফিকুল ইসলাম | প্রকাশিত: ০৩:২৮ পিএম, ০২ নভেম্বর ২০১৭

ঠিক দেড় মাস আগে ভারতের বুকে বিষ মাখানো তীর বিদ্ধ করেছিলেন মাহবুবুর রহমান সুফিল। ভুটানের চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপের উদ্বোধনী ম্যাচে ৩-০ গোলে এগিয়ে যাওয়া ভারতের বিরুদ্ধে সমতা ফেরানো গোলটি এসেছিল এই ফরোয়ার্ডের বিশ্বস্ত মাথা থেকে।

বৃহস্পতিবার তাজিকিস্তানের দুশানবের রিপাবলিকান সেন্ট্রাল স্টেডিয়াম দেখলো সুফিলের বিশ্বস্ত পা। মালদ্বীপের রক্ষণভাগ তছনছ করেও যখন গোল পাচ্ছিল না লাল-সবুজ জার্সিধারীরা তখন শেষ মিনিটে সুযোগ সন্ধানী সুফিলের টোকা বাংলাদেশকে এনে দেয় স্বস্তির জয়। ১-০ গোলে জিতে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাই পর্ব টপকে চূড়ান্ত পর্বে ওঠার সম্ভাবনা তৈরি করলো সুফিল-জাফর ইকবালরা।

আগের ম্যাচে তাজিকিস্তানকে রুখে দেয়ার পর আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে ছিল মাহবুব হোসেন রক্সির শিষ্যদের। আত্মবিশ্বসটা বেশি হয়ে যাওয়ায় ডুবতেও বসেছিল বাংলাদেশের যুবারা। শুরু থেকে একচেটিয়া প্রাধান্য। মালদ্বীপের পোস্টে বৃষ্টির মতো আক্রমণ, মনে হচ্ছিল গোলের বন্যাও বয়ে যাবে দ্বীপ দেশটির জালে।

তাইতো সবার মধ্যে চেপে বসে গোল করার নেশা। যার পায়েই বল, তারই পোস্টে শট নেয়ার প্রবণতায় গোলশূণ্য থাকে ৮৯ মিনিট। বাংলাদেশের আক্রমণগুলো কখনো প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক আর ডিফেন্ডারদের গায়ে লেগে ফিরছিল এবং কখনো পোস্টে আর বারে বাতাশ দিয়ে বাইরে যাচ্ছিল তখন যেন ড্র'ই নিয়তি ধরে নিয়েছিল বাংলাদেশের ডাগআউট।

থিম্পুতে ভারতের বিরুদ্ধে তৃতীয় গোলের মতোই সেই জাফর ইকবাল আর সুফিলের অসাধারণ বোঝাপড়া। ওই ম্যাচে জাফর ইকবালের ক্রসে দুর্দান্তভাবে মাথা ছুঁইয়েছিলেন সুফিল। আর বৃহস্পতিবার দুই জনের বোঝাপড়ার মধ্যে এসেছিলেন আরো একজন-তিনি মালদ্বীপের গোলরক্ষক আহমেদ সামাহ আলী।

খেলা তখন ৯০ মিনিটে গড়িয়েছে। মাঝ মাঠ থেকে বিপুল আহমেদের ঠেলে দেয়া বল ধরেই জাফর ইকবাল দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ঢুকে যান মালদ্বীপের রক্ষণে। গায়ের সর্বশক্তি দিয়ে শটও নিয়েছিলেন পোস্টে।

প্রচন্ড গতির সে শট বুকে নিয়েও জমাতে পারেননি মালদ্বীপের গোলরক্ষক। বলটি চলে যায় গোললাইনের ২ মিটার সামনে দাঁড়ানো সুফিলের কাছে। তরুণ এ ফরোয়ার্ডের বুদ্ধিমত্তায় ওই সুযোগটা আর নষ্ট হয়নি বাংলাদেশের, সহজেই মালদ্বীপের জাল কাঁপিয়ে দিয়ে দেশকে উপহার দেন নাটকীয় জয়।

এভাবে গোল মিস করায় দলের কোচ মাহবুব হোসেন রক্সি বিরক্ত। ম্যাচের পরপরই ফোনের অপরপ্রান্তে যুব দলের কোচের স্বস্তি আর ক্ষোভের মিশেলে মন্তব্য, ‘সবার মধ্যে বেশি আত্মবিশ্বাস ছিল। গোলও দিতে চেয়েছে সবাই। না হলে প্রথমার্ধেই আমরা অর্ধডজন গোল দিতে পারতাম।’

সত্তর থেকে আশিভাগ সময় নিজেদের কাছে বল রেখে গোলের জন্য কেন শেষ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো? ‘সবই হচ্ছিল। কেবল হচ্ছিল না গোল। মালদ্বীপের রক্ষণে সারাক্ষণ খেলেও কাজের কাজটি হচ্ছিল না। আগেই বলেছি সবাই গোল করতে চেয়েছে। কারো শট ফিরেছে প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক কিংবা ডিফেন্ডারদের গালে লেগে, কারো প্রচেষ্টা ভেস্তে গেছে বল বাইরে যাওয়ায়।‘-দুশানবের রিপাবলিকান সেন্ট্রাল স্টেডিয়াম থেকে বলছিলেন জাফর ইকবালদের কোচ।

বাংলাদেশ কোচ আরও যোগ করেন, ‘আবার কখনো কখনো পোস্ট আর বারও পক্ষ নিয়ে দাঁড়িয়েছিল ওদের (মালদ্বীপের)। দ্বিতীয়ার্ধে বলতে গেলে আমরাই খেলেছি। অন্তত ৮০ ভাগ সময় বল ছিল আমাদের কাছে। ম্যাচের চিত্র অনুযায়ী আমরা ৭/৮ গোলে জিতলে সেটাই হতো মানানসই।’

তাজিকিস্তানকে রুখে দিয়ে এবং মালদ্বীপকে হারিয়ে তৃতীয় ম্যাচে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে বাংলাদেশকে। এই তো বৃহস্পতিবার নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার জালে গুণে গুণে ১০ গোল দিয়েছে উজবেকিস্তান, ৬ নভেম্বর এ দলটির সঙ্গে নামতে হবে লাল-সবুজ জার্সিধারীদের।

উজবেকিস্তানকে নিয়ে কী ভাবছেন? হারানো সম্ভব দলটিকে? মাহবুব হোসেন রক্সির পাল্টা প্রশ্ন, ‘কেন নয় বলুনতো? ফুটবলে সবই সম্ভব। ফুটবল আসলে মাঠের খেলা। মুখে যে যাই বলুক আর কলমে আপনারা যাই লিখেন, খেলতে হয় কিন্তু মাঠে। দিনটি যাদের ভালো যাবে তারাই হাসিমুখে ফিরবে। এটা ঠিক, উজবেকিস্তান অনেক শক্তিশালী। তবে আমরা সর্বশক্তি দিয়েই ভালো কিছু করার চেষ্টা করবো।’

আরআই/এমএমআর/জেআইএম

আরও পড়ুন