মোহামেডানের কোচ নাইমুদ্দিন ভালো নেই কলকাতায়
বিলাসবহুল ফ্ল্যাট। ড্রইংরুমটা চোখ ধাঁধানো। রাজ্য সরকারের দেওয়া ক্রীড়াগুরু, ফেডারেশনের সোনার পদক, মোহনবাগান রত্ন, ইস্টবেঙ্গলের ‘জীবনকৃতি’ সম্মান-সহ অসংখ্য ট্রফি ছড়িয়ে ছিটিয়ে টেবলে। তবে বেঁচে থাকার জন্য এর চেয়ে টাকার বেশি প্রয়োজন। আর তাই এ সব বিক্রি করে দিতে চাচ্ছেন ভারতের দোনাচার্য পুরস্কার পাওয়া ফুটবল কোচ নাইমুদ্দিন।
ভারতের জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় ও বাংলাদেশ মোহামেডান দলের কোচ নাইমুদ্দিন বলেন, ‘সব বিক্রি করে দিতে চাই। এগুলোর আমার কাছে আর কোনও দাম নেই। বেঁচে থাকার জন্য আমার টাকার দরকার। প্রতিদিনের বাঁচার জন্য। যদি ভালো দামে এগুলো কেউ নেয়, তা হলে হায়দরাবাদ চলে যাব। বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকব। একটা অ্যাকাডেমি করে ছেলেদের প্রশিক্ষণ দেব।’
যার ধ্যান জ্ঞানে ফুটবল এমন লোকের কাছে এ কথা অনেকে পাগলের প্রলাপও ভাবতে পারে। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন, আমি পাগল হয়ে গিয়েছি? মানসিক রোগী? সেটা কেউ বলতেই পারে পদক বিক্রির কথা শুনে। কিন্তু বাধ্য হচ্ছি এটা করতে। আমার কোনও আয় নেই। চাকরি ছেড়েছি সতেরো বছর আগে। জমানো টাকা নেই। এশিয়াডে ব্রোঞ্জের জন্য সরকার দিত ছয় হাজার টাকা। এখন পাই তিন হাজার। এর বাইরে একটা টাকাও রোজগার নেই।’
কলকাতার ক্লাবে নিয়মিত সাফল্য পেলেও এখন আর তাকে কেউ ডাকে না। তাই বাংলাদেশের ফুটবলের ছয়টি মৌসুম নাইমুদ্দিন ব্রাদার্সের কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। চলতি মৌসুমে যোগ দেন মোহামেডানে। তবে ঠিক মত পারিশ্রমিক পান না বলে ক্ষোভে আয়ের জন্য দিতে চেয়েছিলেন পেট্রোল পাম্প। এ নিয়ে তার ক্ষোভ আরও বেশি। তিনি বলেন, ‘প্রদীপদার (পিকে) মতো একটা পেট্রোল পাম্প দিতে চেয়েছিলাম। তেল কোম্পানিগুলো রাজি ছিল। কিন্তু জমি পেলাম না। দিদির (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বাড়ি গিয়েছি। দেখা করতে পারিনি। মদন মিত্রের কাছে আবেদনের কপি দিয়েছিলাম জমি চেয়ে। কিছু হয়নি। হলে ট্রফি বিক্রি করার কথা অন্তত ভাবতাম না।’
এমআর/এমএস