ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাইয়ের ‘মাস্টার-মাইন্ড’ কোচ সালাউদ্দীন!
মাঠে খেলছেন ক্রিকেটাররা। ব্যাট ও বলে সাফল্য বয়েও আনছেন তারাই। পিছিয়ে পড়েও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ ড্র করা, ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হলেও টি-টোয়েন্টি সিরিজে পাল্টা ক্যারিবীয়দের ধবলধোলাই করেছে টাইগাররা।
সব মিলে মোটামুটি সফল এক মিশন হলো শেষ টিম বাংলাদেশের। এজন্য টাইগাররা কৃতিত্ব দাবি করতেই পারেন। যে কারণে এখন ভক্ত-সমর্থকদের প্রশংসায় ভাসছেন ক্রিকেটাররা।
ক্রিকেটারদের কৃতিত্ব দেওয়ার পাশাপাশি কারো কারো মুখে প্রধান সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দীনের প্রশংসাও শোনা গেছে। বাংলাদেশের সাফল্যের জন্য তাকেও কৃতিত্ব দিচ্ছেন।
ভক্তদের অনুভব, সালাউদ্দীন দলে যুক্ত হওয়ায় ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সে উন্নতি ঘটেছে। ভালো খেলতে উৎসাহী ও অনুপ্রাণিত হয়েছেন। এখন দলের সঙ্গে চেনা-জানা, খুব কাছের একজন আছেন; যিনি তাদের সবার ভালো-মন্দ, দোষ-গুণ জানেন। কার ক্লাস কী? কে কোথায় স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, কে কোথায় পারদর্শী- সবই সালাউদ্দীনের নখদর্পণে। ডাগআউটে, টিম হোটেল, টিম বাস ও অনুশীলনে দলের সঙ্গে থাকেন; এটা ক্রিকেটারদের জন্য দারুণ স্বস্তি ও নির্ভরতার।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে জাতীয় দলের যে বহরটি খেলছে, সবারই সরাসরি শিক্ষক সালাউদ্দীন। হোক ক্লাব কিংবা বিপিএল। কোনো না কোনোভাবে তারা সালাউদ্দিনের সান্নিধ্য পেয়েছেন। এই বিষয়টিই জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের অনেক বড় প্লাস পয়েন্ট।
বিসিবির সাবেক পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন সপ্তাহ খানেক আগে জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপে বলেছিলেন, বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে কোচ সালাউদ্দিনের উপস্থিতি দলের উন্নতি এবং ক্রিকেটারদের ভালো খেলার অন্যতম কারণ। কথাটি শুনে কেউ কেউ হয়তো ভ্রু কুঁচকাবেন। কিন্তু বাস্তবতা এমন কথাই বলছে।
কোনো সিরিজের প্রথম টেস্টে নাকাল হওয়ার পর বাংলাদেশ শেষ টেস্টে ঘুরে দাঁড়িয়েছে কবে? ওয়ানডে সিরিজে চরমভাবে নাকাল হওয়ার টি-টোয়েন্টি সিরিজে এমন উজ্জ্বল পারফরম্যান্স, বিপুল বিজয় কে দেখেছে কবে?
এভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর পিছনের কৃতিত্বটা অবশ্যই কোচ ও টিম ম্যানেজমেন্টের। ভিনদেশী কোচ ফিল সিমন্সের দলটাকে এক ছাতার নিচে রাখা ও মানসিকভাবে উজ্জীবিত রাখার কাজ করে দিয়েছেন সালাউদ্দীন।
কোচ হিসেবে মেধাবী ও নামী হলেও বদমেজাজী চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সময় ড্রেসিংরুমটা একটু অন্যরকম থাকতো। হাথুরুর ভয়ে-দাপটে ক্রিকেটাররা মনের দিক থেকে একটু নরম থাকতেন। ড্রেসিংরুমটা একটু গুমোট ছিল। ক্রিকেটারদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়ার কেউ ছিলেন না। এখন সালাউদ্দীন আসায় ক্রিকেটাররা মাথার ওপর কটা বড় ‘বট গাছ’ পেয়েছেন।
সে কারণেই তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, মেহেদী হাসান মিরাজ, জাকের আলী অনিক, তাসকিন আহমেদ, শেখ মেহেদী, হাসান মাহমুদ, রিশাদ হোসেন, তানজিম সাকিবরা এক সুতোয় গেঁথে আছেন। একক ইউনিট হিসেবে মনের আনন্দে খেলেছেন। সামর্থ্যের সেরাটা উপহার দেওয়ার অনুকুল পরিবেশও পেয়েছেন।
এখন গাল-মন্দ দেওয়ার কেউ নেই। পর্দার অন্তরাল থেকে ছড়ি ঘোরানোরও কেউ নেই। পরিবেশটা অনেক চমৎকার। শান্ত ও স্বচ্ছ। যে কারণে ক্রিকেটারদের ভালো খেলার ইচ্ছেটাও বেড়েছে। সবাই দলটাকে নিজের ভাবতে শুরু করেছেন। বাংলাদেশ দল এ সিরিজে একটা ইউনিট হয়ে খেলেছে।
এআরবি/এমএইচ/এএসএম