বোলিংয়ে উন্নতি করতে রানাকে যে পরামর্শ দিলেন ওয়ালশ
বাংলাদেশে ফাস্ট বোলারের আকাল বহু দিনের। টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার আগে জিয়াউল ইসলাম মাসুদ, গোলাম নওশের প্রিন্স আর হাসিবুল হাসান শান্ত ছাড়া ২০০০ সালের আগে ১৩৫ কিলোমিটারের ওপরে বল করা দ্রুত গতির বোলার ছিলেন না কেউ। এই ৩ জনের পর দেশের ক্রিকেটে প্রথম এক্সপ্রেস ফাস্ট বোলার মাশরাফি বিন মর্তুজা।
সেই ২০০১ সালে চিত্রা নদীর পাড়ের দূরন্ত মাশরাফি ক্যারিয়ারের প্রথম কয়েক বছর ১৪০ কিলোমিটারের আশপাশে বা বেশি জেরে বল করতেন। মাশরাফির সাথে রুবেল হোসেন, শাহাদাত হোসেন রাজিবও মোটামুটি জোরেই বল করতেন; কিন্তু তারপর সে অর্থে দ্রুত গতির বোলার ওঠে আসেনি বাংলাদেশে।
কিন্তু বছর দুয়েক ধরে বাংলাদেশের ক্রিকেটে ফাস্ট বোলারের আকাল কেটেছে। এ সময়ে বাংলাদেশে বেশ ক’জন দ্রুত গতির বোলার উঠে এসেছেন। বলার অপেক্ষা রাখে না, সে তালিকায় সবার ওপরের নামটি তাসকিন আহমেদের।
এরপর পর্যায়ক্রমে এবাদত, শরিফুল আর হাসান মাহমুদ তাদের অন্যতম। যারা গড়ে ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল করতে পারেন। এই জোরে বল করা বোলারদের তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন নাহিদ রানার। ২১ বছরের এ ছিপছিপে তরুণ প্রচন্ড জোরে বল করতে পারেন। ১৪০-১৪৫ পেরিয়ে প্রায় দেড়শো কিলোমিটার গতিতে বল করার ক্ষমতা আছে এ তরুণের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জ্যামাইকা টেস্টে ১৪৯ কিলোমিটারের বেশি জোরে বল করেছেন নাহিদ রানা।
জ্যামাইকা টেস্টে প্রথম ইনিংসে ১৬৪ রানে অলআউট হওয়ার পরও এই তরুণের হাত ধরেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। নাহিদ রানা প্রচন্ড গতিতে বল করে ক্যারিবীয় ব্যাটারদের মাথার ব্যাথা কারণ হয়ে দেখা দেন এবং নাহিদ রানার বলেই আউট হন ৫ ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটার। প্রথম ইনিংসে, রানে লিড পেয়ে ম্যাচে ঘুরে দাড়ায় বাংলাদেশ। নাহিদ রানা উঠে আসেন শিরোনামে।
এই তরুণ এখন সবার প্রশংসায় ধন্য। বাংলাদেশের সাবেক ফাস্ট বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশও রানার বোলিং দেখে মুগ্ধ। জ্যামাইকা টেস্টে টিভি কমেন্ট্রি টিমে ছিলেন ওয়ালশ। নাহিদ রানাকে খুব কাছ থেকেই দেখেছেন।
খেলা শেষে নাহিদ রানার সাথে এ ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান গ্রেটের দেখা হয়েছে। কথাও বলেছেন। বিসিবির দেয়া ভিডিও বার্তায় তা জানিয়ে নাহিদ রানা জানান, কোর্টনি ওয়ালশের সাথে তার দেখা হয়েছিল। কথাও হয়েছে। কোর্টনি ওয়ালশ তাকে শেখার ইচ্ছেটা প্রবল রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। পাশাপাশি বলছিলেন যে, ‘তুমি জীবনে যেখানেই থাকো, শিখতে থাকো এবং নিজেকে মেইনটেইন করো। ফিটনেস ধরে রাখো, আর জীবনে যেখানেই যাবে, শিখবে। শেখার কোনো শেষ নেই।’
বাংলাদেশের সাবেক ফাস্ট বোলিং কোচ নাহিদ রানাকে ফিটনেস সচেতন হতে এবং আরও ফিটনেস বাড়ানোর তাগিদও দিয়েছেন। ওয়ালশ রানাকে বলেন, ‘তুমি নিজের খেয়াল রেখো এবং ফিটনেসের যত্ন নিও। নতুন নতুন শিখতে থাকো, শেখার কোনো শেষ নেই।’
ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে রানাকে দুরে থাকার পরামর্শ দিয়ে ওয়ালশ বলেন, ‘ইন্টারনেটে কী চলছে, এগুলো সেরকমভাবে মাথায় নেই না। একটি জায়গাতেই মনোযোগ রাখছি, মাঠে কিভাবে পারফর্ম করা যায় এবং দলকে কিভাবে সেরাটা দেওয়া যায়।’
এআরবি/আইএইচএস