দিপুকে প্রথম বলেই হিট করতে বলেছিলেন মিরাজ
১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে সিরিজ জয়। কিংসটনে শেষ টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১০১ রানে হারায় বাংলাদেশ। জাকের আলী অনিকের ক্যারিয়ারসেরা ৯১ রান আর তাইজুল ইসলামের ৫ উইকেটের সুবাদে এই জয় পায় টাইগাররা। এতে সিরিজ শেষ হয় ১-১ সমতায়।
বহুল কাঙ্ক্ষিত এই জয়ের পেছনে কিছু রহস্য আর গল্প থাকাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশেরও কিছু পেছনের গল্প ছিল। প্রথমে সেই গল্প ক্রিকেটপ্রেমীদের ছিল অজানা। তবে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়ার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্যামেরার সামনে এসে ভক্তদের সে গল্প শুনিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ।
নাজমুল হোসেন শান্ত ইনজুরিতে থাকায় দলের নেতৃত্বের ভার নেন মিরাজ। অধিনায়ক হিসেবে দ্বিতীয় ম্যাচেই টেস্ট জয় পান তিনি। ডানহাতি ব্যাটারের জন্য এটি অনেক বড় প্রাপ্তি। নিজের প্রাপ্তির জন্য প্রথমে স্রষ্টার কাছে শুকরিয়া আদায় করেছেন মিরাজ। এরপর শেষ টেস্টে নিজেদের পরিকল্পনা জানান টাইগার অধিনায়ক।
ম্যাচ শেষে মিরাজ বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, খুবই ভালো লাগছে, প্রথম ম্যাচ হারের পর দ্বিতীয় ম্যাচ জিতেছি, এটা অবশ্যই আমার জন্য বড় একটা অর্জন। যেহেতু আমি প্রথম অধিনায়কত্ব করছি, এটা আমার জন্য বড় একটা পাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে।’
শেষ ইনিংসে দুই অংক ছুঁয়েছেন ৬ জন। বল হাতে তাইজুলের পাশাপাশি ২টি করে উইকেট শিকার করেন হাসান মাহমুদ ও তাসকিন আহমেদ। ১ উইকেট নেন নাহিদ রানা। অর্থাৎ এই জয়ে প্রায় সব খেলোয়াড়রই অবদান ছিল। পরিপূর্ণ একটি দলগত ম্যাচ বলা যায়।
মিরাজও সে কথাই বললেন। জয়ের সব কৃতিত্ব সব খেলোয়াড়দের দিলেন।
মিরাজ বলেন, ‘জয়ের কৃতিত্ব দিতে চাই সব খেলোয়াড়কে। আমি যেভাবে পরামর্শ দিয়েছি, সবাই মেনে নিয়েছে। কন্ডিশনটা সহজ ছিল না। সব খেলোয়াড়ের জন্যই অনেক কঠিন ছিল। সবাই মানসিকভাবে এমন ছিল যে, ম্যাচটা জিততে হবে। সবাই চেয়েছিল মন থেকে ম্যাচটা জেতার জন্য। এর জন্যই আমরা ম্যাচটা জিততে পেরেছি।’
দ্বিতীয় ইনিংসে মুমিনুল হক নামেন আট নম্বরে। মূলত, বাঁহাতি ব্যাটার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করতে হয় বাংলাদেশকে। মুমিনুলের জায়গা ওয়ানডাউনে নামানো হয় শাহাদাত হোসেন দিপুকে।
এই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে দেখা যায় দিপুকে। প্রথম ইনিংসে ৮৯ বল খেলে করেছিলেন মাত্র ২২ রান, কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসে করলেন ২৬ বলে ২৮ রান। স্ট্রাইকরেট ১০৭.৬৯।
কেন আসলে দিপু এতটা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলেন, ম্যাচের পর তাও জানান মিরাজ। তিনি বলেন, ‘সৌরভ ভাই (মুমিনুল) অসুস্থ হওয়ার পর দলের সবাই বিমূঢ় হয়ে পড়েছিল। ওই জায়গায় (পজিশন) ব্যাটিং করাটা একটু কঠিন। কিন্তু দিপুকে আমি বলেছিলাম, ও রাজি হয়েছে। ওকে আমি একটা কথা বলেছিলাম, এই উইকেটে তুমি ইতিবাচক খেলো। যদি মনে করো, প্রথম বলটাই মারার, তুমি প্রথম বলেই হিট করো। তোমাকে কেউ কিছু বলবে না। আমি তোমাকে অভয় দিলাম। ও সেভাবেই খেলেছে। ওর ২৮টা রান খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
দ্বিতীয় ইনিংসে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান করেছেন মিরাজও। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমিও চারে একই মানসিকতা নিয়ে খেলেছি। কারণ এই উইকেটে রানটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। খেলোয়াড়দের প্রতি বার্তাটাই এটা ছিল, ১টা রানও খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রতিটি খেলোয়াড় যেন রানের জন্য ক্রিকেট খেলে। এর মানে এই না যে টেস্ট ক্রিকেট, ঠেকাবো- আমরা এই পরিকল্পনায় খেলেছি।’
এমএইচ/এএসএম